অনুবাদঃ সাদেকুল আহসান কল্লোল
……….সে আর আয়েশা এখন একা। এক মুহূর্তের জন্য সে ইতস্তত করে। তারপরে আলখাল্লাটা তার গা থেকে খসে পড়তে দেয়, সে বাসরশয্যার দিকে এগিয়ে যায় এবং পর্দা টেনে সরিয়ে দেয়। আয়শা নগ্ন দেহে ভেতরে শুয়ে আছে, তার মাথার চুল এখনও শক্ত করে বেণী করা রয়েছে কিন্তু অর দেহের কোমল বাঁক চড়াই উতরাই পুরােপুরি তার দৃষ্টির সামনে অবারিত করে রয়েছে। তার পেলব বাহু, লম্বা সাবলীল উরুতে বাবর বিয়ের মণ্ডপে তার পায়ের পাতায় মেহেদীর যে বিস্তৃত আল্পনা দেখেছিলাে সেই একই আল্পনা । তার স্তনবৃন্ত টকটকে লাল রঙ করা এবং চারপাশে মেহেদীর বৃত্ত আঁকা বাবরের নগ্নতার দিকে সে যেভাবে তাকিয়ে থাকে সে তার ভিতরে বিচলিত কয় মতাে এক ধরণের শীতলতা অনুভব করে। সে কি ভাবছে? তার ক্ষত চিন্হগুলো অন্তত একটা বিষয় প্রমাণ করে যে সে কোনাে বালক না বরং রক্তপাত ঘটিছে এমন যােদ্ধা। বাবর এবার ঝুঁকে তার পাশে বসে এবং তার পাশে এমনভাবে শােয় যাতে তাদের পরস্পরের দেহ পাশাপাশি থাকলেও স্পর্শ করে না। ….
………..কারণ সে বুঝতে পারে না কি বলা উচিত-সে নিজের ভদ্র কিন্তু অনুসন্ধানী হাত আয়েশার কোমরের উষ্ণ ত্বকে স্থাপন করে এবং সে কোনাে প্রতিক্রিয়া না দেখাতে, সাহসী হয়ে উঠে সে তার হাত কটিদেশের নমনীয় বাঁকে প্রণয়স্পর্শে আলােড়িত করে। তারপরেও কোনাে প্রতিক্রিয়া হচ্ছে না দেখে সে উরুর মধ্যবর্তী ত্রিভূজাকৃতি অন্ধকারের দিকে অনিশ্চিত ভঙ্গিতে এগিয়ে যায়। বাবর সহসা টের পায় তার তরুণ রক্ত আর কোনাে বাধা মানতে চাইছে না। সারা দিনের উত্তেজনা যেনাে তার ভিতরে নিমেষে বিস্ফোরিত হয়ে মারাত্মক একটা শারীরিক আকাক্ষায় পরিণত হয়, যা অবশ্যই নিবৃত্ত করতে হবে। সে এবার নিজেকে আয়েশার উপরে তুলে নিয়ে আসে এবং ব্যগ্র হাতে তার স্তনের কোমলতা আনাড়ি ভঙ্গিতে আঁকড়ে ধরতে চায়। সে তার মাঝে উপগত হতে চায় কিন্তু অপারগ হয়। তার নিচে শুয়ে থাকা শরীরটা আড়ষ্ঠ আর দলা হয়ে পড়ে থাকে। সে মাথা তুলে আয়েশার চোখের দিকে তাকায়। তার সাহায্য কামনা করে, কিন্তু সেখানে তার জন্য কোনাে উষ্ণতা দেখতে পায় না। তার নিরব আবেদনে সাড়া দেবার বা সক্রিয় ভূমিকার চেয়ে খেলােয়াড়ী ভূমিকায় আবিভূর্ত হবার কোনাে আগ্রহ নেই সেখানে কেবল, তার কাছে অন্তত তাই মনে হয়, তার অনভিজ্ঞ আনাড়ি আচরণের জন্য কুপিত অভিব্যক্তি। কামনা তাড়িত হয়ে, সে আবার চেষ্টা করে এবং কঠোরভাবে এগিয়ে যেতে চায়, অবশেষে সাফল্যের সাথে আয়শাতে উপগত হয়। ছন্দোবদ্ধ ভঙ্গিতে নড়াচড়া আরম্ভ করতে সে আয়েশার কাঠিন্য টের পায় এবং তারপরে সে তীক্ষ জোরাল কণ্ঠে একবার আর্তনাদ করলে আয়েশার কাঠিন্য ধীরে ধীরে সহজ হয়ে আসে। হাঁফাতে হাঁফাতে সে আরাে গভীর অনুসন্ধানে রত হয়। আরাে গভীরে, বাকি সবকিছু সম্পর্কে বিস্মৃত হয়ে পড়ে। অবশেষে ঘামে ভেজা দেহে নিঃশেষ হয়ে সে আয়েশার উত্তান দেহের উপরে নেতিয়ে পড়ে। নিজের শিরা উপশিরায় রক্তের ধাবমান গতি তখনও হ্রাস না পাওয়াতে, বাবরের কয়েক মুহূর্ত সময় দরকার হয় নিজেকে ফিরে পেতে । মনে পড়ে সে কোথায় আছে, আর একটু আগে কি ঘটে গেছে। নিজেকে ফিরে পেয়ে, সে আয়েশার উপর থেকে উঠে বসে। তার চোখের দিকে তাকাতে চাইলে রাতের অনীহা এসে তাকে ঘিরে ফেলে। তারপরে, শেষ পর্যন্ত সে তার দিকে তাকাইদেখে মেয়েটা একটুও নড়েনি, আর তার মুখের অভিব্যক্তি আগের মতই সুযে, নিপ্রাণ আর স্পর্শের অতীত। সে হয়তাে নিজের জন্য একটা স্ত্রী পেয়েছে কিন্তু পুরাে বিষয়টা এভাবে ঘটবে বলে সে কল্পনা করেনি। বাবর উঠে বসে তার দিকে পিঠ ফিরাবার আগে স্যাটিনের চাদরে আয়েশার কোমরের নিচে দিয়ে জমা হওয়া রক্তের দাগ ঠিকমত খেয়ালও করে না, যা উপযুক্ত সময়ে জয়ের দিন তার কৌমার্য ভঙ্গের স্মারক হিসাবে সর্বসাধারণের সামনে প্রদর্শিত হবে।……
………আজ রাতে তারা যে গ্রামে যাচ্ছে, জহাজাক, সেটা আসলে একটা বেশ্যালয়। যেখানে তারা আগেও অনেকবার গিয়েছে- কাঠের একটা প্রায় ধ্বসে পড়া চালাঘর। যেখানে আগুনের আলােয় মেয়েরা নাচে, সগর্বে নিজেদের পােশক জাহির করে। এবং পুরুষরা তাদের মধ্যে থেকে পছন্দসই মেয়ে নিজের অঙ্কশায়িনী করতে বেছে নেয়। এইসব মেয়েদের একজন ইয়াদগার, তার আকর্ষণীয় স্তন আর প্রশস্ত কটিদেশের কথা চিন্তা করতেই বাবরের শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি দ্রুততর হয়ে উঠে। আজকের পুরােটা দিন আসন্ন অভিযানের প্রস্তুতির ভাবনায় তার কেটেছে। কিন্তু এখন রাত নামতে ইয়াদগারের কোমল আঁধারে নিজেকে প্রােথিত করার তাড়না সে কোনােমতেই দমন করতে পারে না। ইয়াদগারের উষ্ণ আর সহজলভ্য দেহ, অনুসন্ধানী ওষ্ঠ তাকে একটা নতুন জগতের সন্ধান দিয়েছে। আর অনেক কৌশল এবং রােমাঞ্চকর অনুভূতির উপস্থিতি সম্পর্কে অভিজ্ঞ করে তুলেছে। আয়েশার থেকে মেয়েটা কতাে আলাদা, তাদের এতােদিনের যৌনসম্পর্কের বেলায় মেয়েটা তাকে একবারও প্রণয়সি স্পর্শ করেনি। তার দু’হাত অসারের মতাে শয্যার দুপাশ আঁকড়ে থাকে। তার ওষ্ঠদ্বয় শীতল আর বাবরের জন্য সবসময়েই বন্ধ থাকে। বাসর শয্যায় যদি সে আরও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রেমিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারতাে, সবকিছু তখন হয়ত অন্যভাবে ঘটতাে,.. কিন্তু সেটা এখন অতীতের বিষয়। সে আবার যখন ফারগানার সুলতান হবে তখন সে ইয়াদগারকে তার উপপত্নী করবে। উজ্জ্বল রত্নের সমাহারে ইয়াদগারের বাড়িয়ে তােলা সৌন্দর্য সে উপভােগ করবে এবং তার হলুদাভ ত্বকে ঝলমল করতে থাকা সােনার মালা আর তাদের প্রণয় অভিসাড়ের ঘামে সিক্ত মুক্তার দীপ্তি কোমল স্তনের ভাঁজে উঠানামা করছে তাকিয়ে দেখবে। ভাবনাটার রেশ অনুভব করে বাবরের টাট্ট ঘােড়াটা পাজরে তীব্র এতটা গুতাে খেয়ে।……
……..সেই রাতে, বাসরঘরে, বাবর পরিচারিকাদের দেখে তাকে নিরাভরণ করতে। বরাবরের মতাে স্বল্পবাক আর অমায়িক, কিন্তু সেই মুহূর্তে বাবরের মনে হয় মিচকে শয়তান, বাইসানগার ইচ্ছে করেই কখনও বলেনি তার মেয়ে এতাে সুন্দরী। কিন্তু পরমুহূর্তে তার মনে হয় আহা বেচারা (এখন বেচারা!) মেয়ে যখন ছােট ছিলাে তখন তাকে দেখেছে তারপরে আর দেখেনি তিনি (?) কিভাবে জানবেন? নববধূর ডিম্বাকৃতি মুখে বাদামী বর্ণের পটলচেরা চোখই কেবল নজর কাড়ে। আর তার কালাে চুলের ঢল কোমর ছাড়িয়ে নিতম্বের ভাজ স্পর্শ করেছে। তার দেহাবয়ব ক্ষুদ্রাকৃতি কিন্তু সুগঠিত। মুক্তার মত দীপ্তিময় বর্তুলাকার, উন্নত স্তনযুগল, সুরু কোমর আর কটিদেশের জটিল বাকের দখল বুঝে নিতে গিয়ে বাবর মালিকানার অচেনা আবেগ আর যেকোনাে মূল্যে সেটা রক্ষা করার আকাঙ্ক্ষায় আপ্লুত হয়ে উঠে।……
……..পরবর্তী দিনগুলাে যেনাে আঙ্গুলের ফাঁক গলে গড়িয়ে পড়া পানির মতাে বয়ে যায় । আয়েশার সাথে তার দৈহিক মিলনের পুরােটাই ছিলাে শারীরিক চাহিদা নির্ভর। অন্য কোনাে কিছুর কোনাে ভূমিকা সেখানে ছিলাে না। ফারগানার বাজারে আর বেশ্যালয়ে সে আর বাবুরী যখন বিচরণ করেছে তখন ইয়াদগারের মতাে মেয়েদের সাথে তার ফষ্টিনষ্টি কখনও ভালাে কোনাে শিকার বা উপাদেয় খাবারের চেয়ে বেশি কিছু ছিলাে না। কেবল ফুর্তিতে সময় কাটানােই তখন মূখ্য ছিলাে। মাহামের কাছে যাবার জন্য এসান দৌলতকে আজকাল আর চৌকিদারের ভূমিকা নিতে হয় না। আয়েশার কাছে তাকে পাঠাতে তিনি একটা সময়ে যে মূর্তি ধারণ করতেন। অবশ্য অনেক সময়ে এমনও হয়েছে, সদ্য মিলন শেষে, মাহামের নিখুঁত স্তনে কালাে চুলের বাধভাঙা ঢল তাকে নিমেষেই কঠিন করে তুলেছে। তাকে তখন আলতাে করে নিজের কাছে টেনে এনে, তার অরক্ষিত কটিদেশের মসৃণ বাঁকে হাত বুলিয়ে, দুষ্টু মেয়েটার অধীর আকুতি অনুভব করেছে এবং দ্রুত হয়ে উঠা নিঃশ্বাসের শব্দ তাকে বলে দিয়েছে আবেগের তাড়না দু’পক্ষেই প্রবল ।……
……..“নববধূ কেমন আছেন? হাকিমের কাছে আন এখনও যাননি দেখে আমি বেশ অবাক হয়েছি। আমি শুনেছিলাম জ্বালা আর নববিবাহিতদের গােপন অঙ্গের ঘর্ষণজনিত ক্ষত নিরাময়ে ধন্বন্তরী এই মলম তার কাছে আছে…” “নববধূ ভালােই আছেন…”……..