অস্তিত্ব, অতিথি তুমি – সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……….তারপর বলল, তােমার সিগারেট খাওয়া হল? অর্থাৎ, রাতের মেলামেশা করার যদি ইচ্ছা থাকে, ঝটপট এস। জলদি কর। লাল্লু কী ছাই-পাঁশ তােমাকে বলেছে, সেগুলাে শােনানাের মতাে কোনও কথা নয়। ভাববার মতাে বিনা নয়। এখন ভাবনার বিষয় হল, আমার ঘুম। এবং, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। জীবনে যে যত বেশি ঘুমােতে পেরেছে, তার তত জিত। এবং যার ঘুমে যত কম স্বপ্ন।

ব্লাউজের পিঠের দিকের হুক খােলায় তার সঙ্গে দাম্পত্য সহযােগিতা করার ফাকে আমি সাদা বাংলায় ওকে, একটু দেরিতে হলেও, এবার পুরােটা শুনিয়ে দিই, মানে হল গিয়ে, স্ত্রীরা আর কি, স্বামীর শবযাত্রার সঙ্গী হয় না। লাল্লু বলছিল। তারা শ্মশানে যায় না।’
 ‘তাদের কাজ শুধু স্বামীর বেঁচে থাকাটুকু নিয়ে’বলতে বলতে কোমর জড়িয়ে ধরে আমি তাকে বুকে টেনে নিই।

দার্শনিকতা পুরুষদের ব্যাপার। কৃষ্ণ থেকে শঙ্করাচার্য, ডায়ােজেনিস থেকে দেকার্ত—  সবাই পুরুষ মানুষ। নইলে তাে এক-আধটা মেয়ে থাকত। দীপ্তি কখনও কোনওপ্রকার দার্শনিকতার ফাঁদে পা দেয় না। সে মেয়েমানুষ। তবু, এত তাড়াতাড়ি সে উত্তর দেবে, ভাবতে পারিনি। তার রূঢ় স্তনবৃন্ত আমার বুকে খরখর শব্দ তুলে নিচু স্বরে জানায়, লাল্লু ঠিকই তাে বলেছে।………

……….এমনকি, মাঝে মাঝে আমি যদি তাকে এখনও কাছে ডাকি, আর ঘুমন্ত মেয়েকে পাশের ঘরে রেখে সে আমার সিঙ্গল বেডে আসেও আমাদের সেই শােয়া ব্যাপারটিও কখনও যুগ্মতায় পর্যবসিত হয় না।(হয়েছিল নাকি কোনওদিন?) এই কাজটিও মূলত একা-একা সে নিষ্পন্ন করে নেয়, (নিয়েছে ও বরাবর নিয়েছিল) কত অনায়াসে, কী পেশাদারি শারীরপটুতায়! সে এসে সেক্স করে যায়, তার মান-মর্যাদা, এমনকি, বলা যেতে পারে, তার কৌমার্যটুকুও অক্ষুন্ন রেখে। কী নিপুণভাবে পারে যে!…….

………….সবই গুরুদেবের লীলা। অনেকদিনের মধ্যে এই প্রথম বিনা নিমন্ত্রণে দীপ্তি আমার ঘরে শুতে এল। অবশ্য, কাল রবিবার। কিন্তু বেশ কিছুদিন হল শনিবারগুলােও সে বাদ দিচ্ছে। বিনা ট্রাভেল এজেন্টে কেদার-বদ্রী যেতে সে রাজিও হয়ে গেল এক কথায়। তবে, দায়দায়িত্ব সব আমার। ‘পান পচে যায় যাক। কিন্তু চুন খসা চলবে না, এই তাে। ‘এ ধরনের কথা আমি বুঝি না। বলেছি তাে, বলবে না।’দীপ্তির বুকে এখনও ব্রেসিয়ার। কোমরে শায়া। বরাবরের মতাে এ দুটির গিট আমাকে খুলতে হবে। এবং এ-ব্যাপারে কোনও সাহায্য আমি ওর কাছ থেকে পাব না। বিবাহের ১৮ বছর পরেও কেন এ অবুঝ কুমারীব্রত! কেন এই বিরক্তিকর প্রতিরােধ? সম্পূর্ণ নারী কি সেই উদাসিনী নয়, ছােট্ট হাই তুলে ও শব্দহীন তুড়ি মেরে যে বলতে পারে (মৃদু হেসে), কবে যে কুমারী ছিলাম, সে আমার একটুও মনে নেই ভাই! শাড়িশায়া ব্লাউজ এবং ব্রেসিয়ার— শীতে সােয়েটার এর প্রত্যেকটির সঙ্গে সমস্ত প্রতিরােধ মাটিতে ফেলে রেখে যারা বিছানায় ওঠে না, আমি তাদের, আমি তাদের, নারী বলে মনে করি না— না।

ওর এখনও পর্যাপ্ত নিতম্বের নাটকীয় উত্থানের সানুদেশে আমার হাত। কিন্তু, বড় বহুমূল্য দিয়ে আমি জানি, এ উত্থান অনতিক্ৰমণীয়। বাঁ হাতে কমণ্ডলু, গায়ে গেরুয়া, দক্ষিণ বাহু আশীর্বাদী মুদ্রায় তুলে, আহা, আমি সেই কবে থেকে দাঁড়িয়ে। দাড়িগোঁফ বুক ছুঁল। সব সাদা হয়ে গেল। তবু এ বিন্ধ্য কোনওদিন নতজানু হল না। এ-উত্থানের মধ্যে কোনওদিন জেগে উঠল না নিজের পতনকামনা।

বােঝার কী আছে। যা বােঝার আমি বুঝে নিয়েছি। কী সেটা? ‘শুধু আমি নয়। ইউ হেট উওমেন অ্যাজ এ ক্লাস। তুমি মেয়েদের লেসার মর্টাল মনে কর। কর কি না! | জানি না। উমমম। তবে তােমার গুরুদেবের মতাে’ ওর নিপ্ল নাড়া দিয়ে আমি বলি, যতক্ষণ রুনুঝুনু যে মনে করি না, সেটা ঠিক। উমমম।

শাট আপ ইউ’! এক ঝটকায় নিজেকে খুলে নিয়ে দীপ্তি তীক্ষ্ণ চিৎকার করে বলল, ‘গুরুদেবের নাম তুমি মুখে আনবে না।

দীপ্তি বিছানায় উঠে বসেছে। একটা চাদর টেনে নিয়েছে বুকে। মাছে রক্তের মতাে জোলাে লাল নাইট-ল্যাম্পের আলােয় তার ভােলা চুলের তােড় ঝাপিয়ে পড়েছে আজও মেদহীন, ওর কুমারী ওয়েস্ট লাইনের ওপর। কপালের মস্ত সিঁদুর-টিপ এখন ব্রাশের ক্রুদ্ধ স্ট্রোক। ওর ভরা ঠোট থেকে চুষে তােলা খুনখারাবি ল্যাকমে এখন ওরই মুখময় আমার চুম্বনের লালা-সহ বীভৎস উল্কি। ক্র, পাতলা হাসিতে ভরে যায় আমার মাথা! বলাে, বলাে ওগাে অপমানিতা, আগে বলাে, তুমি নারী না প্রেতিনী?………

……. ‘বীভৎস! মাই-লাইতে বাড়ি-বাড়ি ঢুকে জি আই-রা মেয়েদের ন্যাংটো করে সার্চ করত। তারপর বলত, একটুও বাড়িয়ে বলছিনা, এ-সবই সরকারি নথি, এবার তােমাদের ভ্যাজাইনা সার্চ হবে। বলে রেপ করত। ধোঁয়া ছেড়ে, একজন জি আই খুনের ব্যাপারে মা আর মেয়েকে উলঙ্গ করে ক্যাম্পে হাঁটিয়ে এনেছে ; কনফেস করাে কিন্তু মেয়েটা তাে খুন করেনি। সে কিছু জানে না। একজন সৈন্যের হাতে জ্বলন্ত লাইটার তুলে দিয়ে লেফটেন্যান্ট বললেন, ওর পিউবিকহেয়ারগুলাে জ্বালিয়ে দাও। মা মেয়েকে বলল, বল, খুন করেছি। কিন্তু মেয়েটা দাঁড়িয়ে রইল চুপ করে। কী বলবে। তার তাে বলার কিছু নেই! তখন দিল জ্বালিয়ে।…….

…….গত দশ বছরের একটানা নিরবচ্ছিন্ন চেনাশােনা। সুদীর্ঘ গােপন যােগাযােগ। ভালবাসে বলেই তাে। কেবিনের ভারি নিচ্ছিদ্র পর্দার এদিকে ওর কোমরের পেটি, ঊরুর রাং বা বাঁটের মাংসের বদলে অনেক দিনের মধ্যে এই প্রথম— ৪০ বছরের ধাড়ি মহিলার ১০ বছর আগেকার যুবতী হাত আমি কোলে টেনে নিই।………

……..এখানে আমরা গত দশ বছর ধরে আসছি। আমাদের বিলম্বিত চুম্বনের সময় লি ইয়ং যে কতবার পর্দা তুলে নিঃশব্দে নামিয়ে দিয়ে গেছে, আমরা তা জানি না। তবে একদিন, যেদিন ‘সরি’ বলে ফেলেছিল, সেদিন আমি আইভির খােলা বুকের নীপ সাক করছিলাম, যেজন্যে, সেই সেদিন থেকে, সার্ভিসে থাকলে, সে আইভির কাছ থেকে ৫ টাকা টিপস পেয়ে আসছে। গােড়ার দিকে কত কাণ্ডই না হয়েছে ওয়ান টানের জোনাকির মতাে ঝরঝবে এই ছােট ছােট সাদা ঘরে।………..

Leave a Reply