………একপক্ষকাল আগে বনমধ্যস্থ এক সাতিশয় মনােরম, হিমশীতল জল এবং নানা জলজ বৃক্ষ ও পুষ্পশােভিত সরােবরে স্নান করে অপ্সরাপুরীতে ফিরছিলাম। আমার সঙ্গে ছিল ঘৃতাচী ও শরদ্বতী নাম্নী আরও দুই অপ্সরা। শরদ্বতী সামান্য পৃথুলা, ওর স্তনদ্বয় ঈষৎভারে অবনতমুখী। শরদ্বতীর গতি শ্লথ। সকলের প্রথমে ঘৃতাচী, মধ্যে আমি আর পশ্চাতে শরদ্বতী।………
……..পুরুষ অপেক্ষা নারীরাই আমাকে তাদের সমগ্র দেহে অনুভব করে থাকে। নারীর বাচন ভঙ্গিমায়, কটাক্ষে, দন্তরুচিতে, কুন্তলে, জুঘনে, স্তনে, নিতম্বে আমার অনঙ্গ উপস্থিতি।……..
……..মঞ্জুঘােষার ভ্রুযুগল যেন কামদেবের পুষ্পধনুক। কটাক্ষ যেন ধনুষ্ঠুণ। নয়নদ্বয় যেন পক্ষীসদৃশ পক্ষযুক্ত হয়ে উড়ে যেতে ব্যাকুল। আর দু’টি স্তন নারিকেল ফলের ন্যায় সুডৌল ও সমুন্নত। ……
………রূপমুগ্ধ মেধাবীর কণ্ঠরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে তার দুই চক্ষু জুড়ে ঘনিয়ে এসেছে কামতৃষ্ণা। বেগবান মলয়পবনে মহীরূহরা যেভাবে উথাল-পাথাল করতে থাকে, মেধাবীর দেহ তেমনই মঞ্জুঘােষাকে স্পর্শ করার অভীপ্সায় কম্পমান। …….
…….অপ্সরাসুলভ স্বভাবে মঞ্জুঘােষা হাবভাব-কটাক্ষ বিস্তার করে মেধাবীকে সম্পূর্ণ বশীভূত করে ফেলল। তাকে স্পর্শ করার জন্য মেধাবী হস্ত প্রসারিত করতেই মঞ্জুঘােষা অনুভব করল, জয় তার করায়ত্ত। অতঃপর আপন হাতের বীণাখানি ভূতলে রেখে মঞ্জুঘােষা আশ্লেষে আলিঙ্গন করল ত্যাগব্ৰতী মেধাবীকে।……
……..অহর্নিশ সুরতিক্রিয়ায় মেধাবী আপাতত পরিশ্রান্ত। সামান্য পূর্বে তিনি নিদ্রাভিভূত হয়েছেন। মঞ্জুঘােষা নিজেও রতিক্লান্ত। তার জীবনের প্রতিটি দিন রমণরত অবস্থায় অতিবাহিত হচ্ছে। মঞ্জুঘােষা নিত্যদিন যাপনের কৃত্যগুলি সম্পন্ন করতে পারছে বহু কষ্টে। মুনি ক্ষণকালের জন্যও তাকে শয্যাত্যাগের কোনও অবসরই দিচ্ছেন না।……
……মঞ্জুঘােষা অন্তরে-বাহিরে মেধাবীর ন্যায়ই ক্লান্ত। আতঙ্কিত অপ্সরা বেশ উপলব্ধি করতে পারছে, দেহসম্ভোগের এই সুখ ও আনন্দ ভবিষ্যতে দুঃখ ও বিষাদে পরিণত হবে। মঞ্জুঘােষা স্থির করল, অদ্য রজনীতে রমণােদ্যত মুনিকে পুনর্বার সে বলবে, হে ব্ৰহ্মণ, আমাকে আদেশ প্রদান করুন। আমি স্বীয় গৃহে গমন করব। ……….তমসাবৃত রাত্রির প্রথম প্রহরে তন্দ্রাভিভূত মেধাবী সহসা জেগে উঠে শায়িতা মঞ্জুঘােষাকে আলিঙ্গন-চুম্বনের দ্বারা ব্যতিব্যস্ত করে তুললেন। কামকলার চৌষট্টিটি অঙ্গ, মেধাবী বিগত পঞ্চশতাধিক বছরে প্রয়ােগ করেছেন একাধিকবার। মঞ্জুঘােষা স্বপ্নেও কল্পনা করেনি সঙ্গম এত আগ্রাসী, এত অবারিত, এত অতৃপ্তবােধী হতে পারে! মেধাবী যেন আরও একশত বৎসর শ্রান্তি, ক্লান্তি সত্ত্বেও সুরতিক্রিয়ায় লিপ্ত থাকতে বদ্ধ পরিকর! মঞ্জুঘােষার দেহ আজ আর তেমনভাবে জাগ্রত হচ্ছে না।
বুদ্ধিমান মেধাবী এই বৈপরীত্য অনুধাবন করে প্রশ্ন করল, বরবর্ণিনী, তুমি কি তৃপ্ত হতে অনিচ্ছুক? নাকি অন্য কোনও ক্রীড়া বা আসনের কথা ভাবছ?………