উৎসব
…..সালেহার ঘুমঘুম হাসি এড়াবার জন্য আনোয়ার আলি উল্টোদিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে লুঙি পরতে থাকে। তার ক্ষোভ হয়, এই মেয়েটা বছরখানেক হলেও তো কলেজে পড়েছে, বিয়ের আগে এমনকি একটু প্রেম মতোনও করলো। অথচ এমন জবুথবু হয়ে থাকে কেন? শাড়ির ভেতর বুক নেই পাছা নেই, দিনরাত হেঁটে বেড়াচ্ছে একটা বেঢপ কোলবালিশ।….
…..শুয়ে পড়তে পড়তে আনোয়ার আলি তার স্ত্রীর প্রশ্নমালার সংক্ষিপ্ত ও মোটামুটি সন্তোষজনক উত্তর দেয়। এখন নিয়মিত প্রাক-নিদ্রা রতিক্রিয়ার পালা। এই মেয়েটিকে অন্তর মিনিট বিশেক ভালোবাসতে হবে। ভয় হয়, সালেহা তার মূল্যবান সন্ধেবেলাটা তছনছ না করে ফেলে। তবে ভালো ভালো মেয়ে দ্যাখা গেছে বহু, সুখ তো আজ ওদের নিয়ে, সালেহা উপলক্ষ মাত্র।
আনোয়ার আলি অভ্যস্ত হাতে স্ত্রীর ব্লাউজের বোতাম, ব্রার হুক খুলতে গেলে সালেহা নিয়মিত ও ঘর্ঘর কণ্ঠে আওয়াজ করে, উঁহু, আজ থাক।’ এবং আনোয়ারের আরো কাছে সরে আসে। অথচ আনোয়ারের রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়ে সেখানে ঠাণ্ডা সর পড়ছে। শীতল শরীরে একটু ধ্বনি শোনা যায়: কি হলো আজ একটুও ইচ্ছা করছে না কেন? কোনো কোনো দিন দুপুরবেলা অফিসে বসে সে পর্নোগ্রাফি পড়ে, সেদিন রাত্রিবেলা কিন্তু এই মেয়েটার শরীরেই বেশ টাটকা স্বাদ পাওয়া যায়। আজ ক্ষোভ হয়; যতোই সেক্সি হোক না, কায়দাটা এরা ঠিক রপ্ত করতে পারে না, -এই সালেহা টাইপের মেয়েরা।….
…..মৃদু সুগন্ধ পাওয়া যাচ্ছিলো মেয়েটার শরীর থেকে। খুব মৃদু গন্ধ, খুব স্নিগ্ধ। এইতো কিছুক্ষণ আগে এতো কাছে দাঁড়িয়ে কথা হলো, অথচ মনে হয় কতোকাল আগেকার কথা। আবার দ্যাখো, এর চেয়েও কতো কাছে হাতের একেবারে ভেতরে সালেহার স্তন, এতো কাছে, তবু তাকে স্পর্শ করা যায় না কেন? দুটো ফাপা বেলুনের মত স্তনজোড়া ধরে আছে যে হাতে সেই হাতে কি রাবারের পুরু গ্লাভস?….
অন্য ঘরে অন্য স্বর
…..ফের শুয়ে স্তিমিত আলোতে চোখের সামনে বইটা মেলে ধরলে নীল রঙের আর্ট পেপারের ওপর ১টি মেয়েমানুষের ছবি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ১ হাতে তার বেঢপ বড়ো গোলাপী রঙের ব্রামুক্ত স্তনজোড়া মেলে ধরে রূপসী আরেক হাতে তার পেটিকোট সামলাতে ব্যস্ত। পেটিকোটের দড়ি ছিঁড়ে গেছে, পেটিকোট অনেকটা নিচে নেমে যাওয়ায় ফাঁপা থামের মতো উরু বেশ খানিকটা দ্যাখা যায়, কিন্তু আশ্চর্য কোনো নিয়মে পেটিকোটের কোমর থেকে ঝোলানো ছেঁড়া ১ টুকরা ন্যাকড়ার কল্যাণে তার যোনী অদৃশ্য। সবুজ ও গোলাপী রঙের মহিলার পেটিকোটের রঙ হলদে। কিন্তু কাপড়ের ভাঁজ টাজ বোঝাবার জন্য কোথাও কোথাও খয়েরি রঙ ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ভাঁজ স্পষ্ট হয়নি, বহুবর্ণ ১টি পেটিকোট সেলাই করা হয়েছে। জানলার কাছে তুলে ধরলে ওপরের লেখা পড়া যায় : জলভরা তালশাঁস’। নিচে ব্র্যাকেটে লেখা ‘নাজমা ভাবীর প্রেমের শাঁস’। শেষ মলাট একেবারে শাদা। আদ্যোপান্ত প্রত্যেকটি পৃষ্ঠার তীরে দুটো ছিদ্র থেকে বোঝা যায় বইটা পিন দিয়ে বন্ধ করা ছিলো। শ্রীমান অমিতকুমারের নিয়মিত ব্যবহারের ফলে পাতাগুলো মলিন। এই অল্প আলোতে ভেতরের লেখা পড়া যায় না। এ বইতে আরো গোটা তিনেক ছবি আছে, ৮/১০ পৃষ্ঠা পর পর ১টি করে ছবি, এগুলো কালো শাদা; কালি ঠিকমতো পড়েনি বলে অস্পষ্ট। একেকটি ছবিতে একেক জোড়া পুরুষ ও মহিলা বেশ জটিল ও অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে যৌন সঙ্গম করে। আলো থাকলে হয়তো আরো স্পষ্ট বোঝা যেতো। যাই হোক, এইসব দেখে প্রদীপ বেশ কাম বোধ করলো। হয় এই কামের বেগে কিম্বা দুপুরবেলা ঐ মস্তান টাইপের ছোকরা দুটো দ্যাখার পর সলিড কিছু পাওয়া গেলো – এই শিহরণে তার সর্বাঙ্গে ছোটো ছোটো ইট পাটকেল ছিটকে পড়ে। আলো জ্বেলে বইটা পড়ে ফেলবে। পড়তে পড়তে বইটার ঠিক ঠিক ব্যবহার করা দরকার।….