অনিলা স্মরণে – কমলকুমার মজুমদার

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

…..উহাই লাবণ্য দেবীকে নির্ভরতা দেয়, সাধারণত ব্যোমচারী সংখ্যাহীন অন্ধকারের কুটিরে-আগত-খানিকের-উপর যে নির্ভরতা, স্বভাবত ভাজের গােলাপের উপর যে নির্ভর, ঐখানে তিনি নিজেকে অঞ্জলি ভরিয়া একা পাইয়াছিলেন—যাহা, বিশেষ এক রহস্যময় চাতুর্যে মুখমণ্ডল আবর্তন করিলে দৃষ্টিপথে আসে, এই একা যাদু জানে; এ হেন সহজ নরম মনােলােভা অনুভবের মধ্যে তিনি একটি ব্রণবিরহিত সুখ স্বপ্নদায়িকা শয্যা দেখিয়াছিলেন, এবং দৈবাৎ এতাদৃশ, দর্শনমাত্রই মধুর ঋজু আরাম স্পর্শ তাঁহাকে গীত গাহিতে মিনতি করে, যাহাতে পঞ্চদশীর স্তনবৃন্ত কণ্টকিত হইয়া দেখা দেয় আর যে লাবণ্য দেবীর বহুদিন পূর্বে ফেলিয়া আসা যাহা মুহূর্ত সকলের মধ্যে অন্তর্হিত, সেই চিকণ বয়সী তড়িৎ দেহের উন্নত বক্ষ পীন হইয়া উঠিল; তদানীন্তন ডাগর নয়নে পুনরায়, এখন, ঘুম আসিল, ইহার স্বপ্নে কালসর্প দংশনের কোন সম্ভাবনা নাই।…..

…..লাবণ্য দেবী উত্তর না দিয়ে কিছুকাল কার্পেটের উপর পদশ্চারণ করিয়া করিয়া মােহিনী দৃষ্টি সঞ্চালিত করত কথা বলিতে গিয়া অচিরাৎ এ লজ্জায় স্থবিরাঁহার শবরী ডায়নার স্তনদ্বয় বিগলিত, দুগ্ধে বস্ত্র সিক্ত। তথাপি লজ্জা তাঁহাকে কুৎসিত করে নাই ।

ইদানীং এই মােহপাশের নির্ভরতায়, আরামে নিভুপদাম অঙ্গুলি নিচয় দ্বারা আপন করে কণ্ঠ—যে কণ্ঠ গ্রীবা ক্রমবর্ধমান সুন্দরতর—মৃদু চার্লন আর যে তৎক্ষণাৎ আশ্চৰ্য্য! হাতখানি সত্বর ফিরিয়া আসে, এবং ওষ্ঠ কম্পিত হইল, হাতুনিফিরিয়া আসাকালীন যে অদৃশ্য রেখা সূচিত হয় তাহা মানসপটে রমণীর সুঠাম রেখায়িত দেহে অংশ?…..

সমগ্র নিয়ম, এ প্ল্যাটফর্মের, রক্তধারায় ভাসিয়া গিয়াছিল, এই রক্তের মধ্যে তিনি বিজয়িনী, লাবণ্য দেবী সকল কিছু ভুলিয়া আপনার শবরী ডায়না স্তন খুলিয়া অদ্ভুত ভাবে ধরিয়াছেন এবং তাঁহারই কন্যা যদিও বালিকা মহা আবেগে ক্ষুধা ও তৃষ্ণা যাহার একই, সে স্তন পানে নিশ্চিন্ত। লাবণ্য দেবীর নগ্ন পদদ্বয় রক্ত ধারায় হিমে দারুভুত, নিজে আতঙ্কিত, তবু নির্ভীক ভাবে তিনি স্তন্যদানে ব্যাপৃতা! এ দৃশ্য তাঁহাকে হয়ত নহে, নিশ্চয়ই মহীয়সী করিয়াছিল।…..

……এখন ধুসর চাঁদের আলোয় রমনীয়, একাধারে সুক্ষ ও স্থুল  অসংখ্য দেহটি নিথর অনৈসর্গিক কম্পনের নির্বিঘ্ন রেখাগুলির উল্লেখ; স্তনদ্বয়, যাহা উন্নত পীণ, স্থিতিমানগুণ্য হারাই, টলিয়া, স্বভাব পরিধি আয়ত বৰ্দ্ধিত, স্তন স্থল নিম্নে পাঁজরার কাছে বিশেষ মেদ বৃদ্ধি করিয়াছে, যেহেতু রমণী শায়িতা; উরুদ্বয় কি অদ্ভুত অনেকক্ষণ ! সেখানে ক্রমাগত বিন্দু হইতে বিন্দু অপসারিত, একটি মসৃণ ভাঁজ চিহ্ন এবং তাহার পর বক্ররেখা অথবা শুধুই উবল, আশ্চর্য কাপড় পরার রুচিহীন, কযা বিশ্রী বৃত্তচিহ্ন নারীর মান নষ্ট করে নাই। এত চাকচিক্যময়, গম্ভীর, কল্পনাতীত, সুষমাময় দেহের জন্য কেন এত লজ্জা!

রঞ্জিত চ্যাটার্জি এ দেহ দর্শনে চমৎকৃত……….

Leave a Reply