অঙ্কুর (Germinal) – এমিল জোলা

›› অনুবাদ  ›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

অনুবাদঃ সুধাংশরঞ্জন ঘোষ

……..কথাটা বলে মুকেত্তেও খিল খিল করে হাসতে লাগল। ঘরখানার মধ্যে নড়েচড়ে বেড়াতে লাগল। কিন্তু তার পরনের পােষাকটা বড় বিশ্রী ছিল। সে পােষাকে তার বুকটাকে বিশ্রী রকমের স্ফীত দেখাচ্ছিল। তাকে দেখে একই সঙ্গে হাসি পাচ্ছি সকলের আবার উত্তেজনাও জাগছিল তাদের মধ্যে।….

…….কাজ করতে করতে এতিয়েন এক সময় মুখ ঘুরিয়ে দেখল তার পাশেই ক্যাথারিন কাজ করছে। এবার ভাল করে দেখে সে। তার বুকের উচু অংশ দেখে বুঝল সে মেয়েছেলে। তাই আশ্চর্য হয়ে বলল, তুমি মেয়ে?

ক্যাথারিন খুশি হয়ে সরাসরি উত্তর দিল, হ্যা। কিন্তু এই সহজ কথাটা বুঝতে তােমার কত সময় লাগল?…….

………এতিয়েন ঠিক করল মনে মনে, ক্যাথারিনের খাওয়া হয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে তাকে জড়িয়ে ধরে তার গােলাপী ঠোট দুটোয় চুম্বন করবে। উদ্ভিন্নযৌবনা ক্যাথারিনের পুরুষের পােষাক ও তার জ্যাকেটের ভিতর থেকে তার নারীদেহের যে সব অংশ দেখা যাচ্ছিল তাতে উত্তেজনা বেড়ে যাচ্ছিল এতিয়েনের।…….

…….ওরা লকার রুমে গিয়ে ওদের যন্ত্রপাতি জমা দিল। ঘরখানায় ঢুকে ওরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। ঘরখানা বেশ গরম এবং একটা স্টোভ জলছিল। ওরা ওদের ঠাণ্ডা গাগুলাে সেকে নিচ্ছিল। মুকেত্তে তার জামা খুলে শুকোচ্ছিল। তা দেখে জনকতক তরুণ যুবক হাসাহাসি করছিল। মুকেতে তখন তার হাত দুটো তুলে তার বগল বুক দেখিয়ে দিল। এইভাবে তার চরম কণা প্রকাশ করে সে।………

…………এস্তেলেকে কোলে নিয়ে তার একটা বড় স্তনে তার মুখটা গুজে দিল মাহিউর স্ত্রীর। সঙ্গে সঙ্গে চুপ করে দুধ খেতে লাগল এস্তেলে।…..

……..বুলুপের বয়স পঁয়ত্রিশ। কিন্তু বয়স অনুপাতে তার চেহারাটা বলিষ্ঠ এবং তাকে কমবয়সী মনে হয়। তার মুখে কালাে দাড়ি আছে। লেকের স্ত্রী লা লেক বুলুপের থেকে ছয় বছরের বড়। তার উপর তার চেহারাটা কুৎসিত। তার বুকের স্তনগুলাে ঝুলে তলপেট পর্যন্ত নেমে এসেছে আর তার তলপেটের ভুড়ীটা নেমে এসেছে জানু পর্যন্ত। তার মুখেরও বাহার নেই। মাথার চুলগুলাে কখনাে বিন্যস্ত থাকে না। তবু বুতলুপ তাকে গ্রহণ করেছে। তার খাওয়া থাকার অন্যান্য উপাদানের মত বিগতযৌবনা লা লেকের দেহটাকেও এক আবশ্যকীয় উপাদান হিসাবে দেখে বুলুপ। তাকে নিয়ে এক বিছানায় না শুয়ে পারে না।…….

……….মাহিউর নগ্ন দেহের এমন কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বাদ রইল না যেখানে তার স্ত্রী সাবান ঘষল না। সাবান মাখানাে হয়ে গেলে গা ধুইয়ে তােয়ালে দিয়ে তার সর্বাঙ্গ মুছিয়ে দিল। প্রতিটি গােপনাঙ্গও ভাল করে মুছিয়ে দিল।

এইভাবে তার স্ত্রী যখন তার সর্বাঙ্গে সাবান মাখাচ্ছিল ও তােয়ালে দিয়ে গা মােছাচ্ছিল তখন তার মাথার চুল তার বুক মাহিউর গায়ে ঠেকছিল। স্ত্রীর দেহের স্পর্শের নিবিড়তায় একটা জারজ উত্তেজনা অনুভব করতে লাগল মাহিউ। রােজ এমনিই হয়। সব খনিশ্রমিকরাই তাই করে।

স্নান সেরে ঘরের মাঝখানে এসে তার স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরল সে। তাকে একটা চেয়ারে জোর করে বসাল। বাচ্চা এস্তেলেকে এক জায়গায় বসিয়ে দিয়েছিল তার মা।

মাহিউর স্ত্রী বলল, তুমি বড় দুষ্ট। দেখছ না এস্তেলে আমাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। আমি অন্ততঃ মুখটা ঘুরিয়ে দিই অন্য দিকে।

মাহিউ বলল, ও তিন মাসের ছেলে, কি বুঝবে?

এই বলে মাহিউ তার স্ত্রীকে টেবিলে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিল। এবার সে তাকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরল যে আর ছাড়ল না। শুধু একা মাহিউ নয়, এ গাঁয়ের সব খনিশ্রমিকরাই কামের পর এইভাবে তাদের সারা অঙ্গে এক জারজ উত্তেজনার শিহরণ নিয়ে তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করে। অনেক অবাঞ্ছিত সন্তানের জন্ম দেয়। রাত্রিতে তারা এক বিছানায় স্ত্রীদের নিয়ে এলেও তাদের ধারে ছেলেমেয়েরা থাকায় তাদের সে সহবাস নিবিড় ও নিরুদ্বিগ্ন হয় না।

মাহিউর স্ত্রী তার স্কুলদেহ আর শিথিল স্তনযুগল নিয়ে নীরবে শুয়ে রইল। একবার ক্ষীণ প্রতিবাদ করল। কিন্তু মাহিউ তা শুনল না। ওদের সঙ্গমকার্য হয়ে গেলে মাহিউ উঠে শুধু একটা পায়জামা পরল।……..

……….এরপর নয় স্ন্য পকেটে পুরে রেখে লিভিকে নিয়ে কাঠের উপর শুয়ে পড়ল জালিন। লিভিকে সে, নিজের স্ত্রীর মতই মনে করে। মাঝে মাঝে তাকে এমনি নির্জনে কোন কাঠের গাদায় বা খড়ের গাদার আড়ালে আবডালে নিয়ে এসে তাকে আলিঙ্গন ও চুম্বন করে। লিভিও তাকে স্বামীর মতই দেখে। সে তাকে কোন বাধা দেয় না। জালিন তাকে যেখানে নিয়ে যায় সেইখানেই যায়। ওরা ওদের বাড়িতে রাত্রিতে ঘরের পাটিশানের ফাক দিয়ে অথবা দরজার ফুটো দিয়ে ওদের বাবা মার যে শৃঙ্গার ও সঙ্গমলীলা স্বচক্ষে দেখে তারই অনুকরণ করার চেষ্টা করে। জালিন বলে এটা হচ্ছে ‘বাবা-মা খেলা’। বয়স কম বলে এ খেলা ওরা ঠিকমত পারে না। তবে এ খেলার সব রহস্য ও খুটিনাটি ওদের জানা হয়ে গেছে। তাই কোন সন্ধ্যার অন্ধকার নির্জনে ওরা যখন পরম্পরকে জড়িয়ে ধরে পাশাপাশি শুয়ে নিবিড়ভাবে চুম্বন করতে থাকে তখন এ খেলার চরম তৃপ্তি বা আনন্দটুকু না পেলেও তবু একটা প্রাথমিক পূর্বাদে বিভোর হয়ে ওঠে। ……..

আর কোন কথা না বলে শ্যাভেল তার শক্ত হাত দিয়ে জোর করে ক্যাথারিনতে ধরে সেই গড়ের খাদে তাকে চিৎ করে ফেলে দিল। আর কোন বাধা দিতে পারল না ক্যাথারিন। এক নীরব নিমিতায় যে পাভেলের পুরুষাঙ্গটিকে গ্রহণ করল। তার কুষ্ঠিত করে সকল প্রতিবাদ স্তদ্ধ হয়ে গেল। শুধু নর্মক্রিয়াজনিত এক দ্রুত ও দীর্ঘ নিশ্বাসের শব্দ বেরিয়ে আসছিল শ্যাভেলের নাক থেকে।……..

……….প্রথম প্রথম ক্যাথারিনের কাছে অস্বস্তি অনুভব করত এতিয়েন। তাদের এখন খুব কাছাকাছি থাকতে হয়। এতিয়েন জ্যাকারির খাটটায় জালিনের পাশে শােয়। সে যেন একই পরিবারের লােক। জাকারির সামনেই স্নানের সময় উলঙ্গ হয় ক্যাথারিন। আবার ক্যাথারিনকেও তাই হতে হয়। আবার শোবার সময় একই ঘরে কাছাকাছি থাকে ওরা। ক্যাথারিন শােয়ার সময় উলঙ্গ হয়ে বাতির আলােটা নিবিয়ে দেয়। অবশ্য ক্যাথারিনের অনাবৃত দেহটার প্রতি কোন কৌতুহল নেই তার। সে তার দিকে তখন মােটেই তাকায়না।

তবু ক্যাথারিনের পায়ের পাতা থেকে মাথা পর্যন্ত দেহের সমস্ত অংশ খুটিয়ে জানা হয়ে গেছে যেন এতিয়েনের। তবু বিশেষ কোন কামনা জাগে তার মধ্যে। প্রথাগত অভ্যাসের বশবর্তী হয়ে পরস্পরের কাছে উলঙ্গ হওয়ার আত্মচেতনাটা ভুলে গিয়েছিল। ক্রমে তারা ভাবতে শুরু করল এইটাই স্বাভাবিক। কারণ এতে তাদের কোন অন্যায়বােধ নেই। তারা ত কারাে প্রতি কোন অন্যায় করছে না। বাড়িতে যে বেশী ঘর নেই সেটা ত তাদের দোষ নয়।

তবু এক একসময় যখন কোন অসতর্ক মুহূর্তে পাপপ্রবৃত্তি ঢুকে পড়ে তাদের মনে, হঠাৎ ক্যাথারিনের নগ্ন দেহগাত্রের অত্যধিক শুভ্রতা শিহরণ জাগায় এতিয়েনের দেহের মধ্যে। তখন তার মনে হয় ক্যাথারিনের দেহটার পানে কখনাে তাকানাে তার মােটেই উচিত হয়নি।

আবার রাত্রিবেলায় শােবার সময় ক্যাথারিনেরও মনে হয় মাঝে মাঝে, বিশেষ করে নগ্নদেহে বাতিটা নিবিয়ে দিয়ে শােবার সময় মনে হয় সে হয়ত বা কোনদিন এই সময় কোন অসতর্ক মুহূর্তে এলিয়েনের বিছানায় গিয়ে ঢুকে পড়বে।………

………..মাদাম হানিবাের যৌবন পার হয়ে গেছে অনেক আগেই। তবু সােনার ফলভরা শরতের মাঠের মত তার দেহের এক নিটোল পূর্ণতা আজও কামনা জাগায় পুরুষের মধ্যে। মসিয়ে হানিবাের ইচ্ছা হলে এখনি সে মাদাম হানিবাের দেহটাকে জড়িয়ে ধরে তার স্ফীত বুকের বিশাল স্তনযুগলের মাঝখানে তার মাথাটা গুজে দেয়। একজন বিলাসপ্রিয় মহিলার বিচিত্র ঐশ্বর্যসম্ভারে পূর্ণ এই উষ্ণ আরামঘন ঘরখানার নীরব নির্জন অবকাশে তীব্র হয়ে উঠল তার কামনা। তবু নিজেকে সামলে নিল মসিয়ে হানিবাে।……..

…….এতিয়েন ঘরের মধ্যে ঢুকে দেখল মাহিউর স্ত্রী স্তব্ধ হয়ে তার মুখের সামনে বাড়িয়ে রয়েছে। রাগে দুঃখে তার মুখ থেকে কোন কথা পরছে না। তার বুকটা তখনাে খােলা। এতেলে তার কোলে ঘুমিয়ে পড়েছে। এতিয়েনের চোখদুটো তার অনিচ্ছাসত্বেও সেই বিশাল বুকের শিথিল স্তনযুগলের উপর নিবদ্ধ হলাে আবার। সেখান থেকে চোখ দুটো সরিয়ে নিতে পারছিল না। মাহিউর স্ত্রীর বয়স চল্লিশ। তার মুখটা হলদে ফ্যাকাশে এবং তাতে বয়সের ছাপ পড়লেও বুকের কাছটা সাদা দুধের মত। এই বয়সেও তার দেহের গঠন প্রশংসা করার মত। তার মুখটা আজ লম্বাটে দেখালেও একদিন তা সুন্দর ছিল।

এবার মাহিউর স্ত্রী ঘুমন্ত এন্তেলেকে শুইয়ে দিয়ে স্তনদুটো জামার মধ্যে ভরে দিল। বলল, শ্যাভেলটা একটা আস্ত শূয়াের।………..

Leave a Reply