শূন্য খাম – প্রচেত গুপ্ত

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……….মুখ ওপরে তুলে নিজের ধবধবে ফরসা রাজহাঁসের মতাে লম্বা গলার পুরােটাই স্বামীর চোখের সামনে তুলে ধরত ভারতী। হাউসকোটের আড়ালে ফুটে উঠত তার সুডৌল স্তনজোড়া। শরীর-গাছের গায়ে আলতাে করে লেগে আছে যেন। কাপড়ের ভেতর থেকেই ফুলের কুঁড়ির মতাে বড় হয়ে জানান দিত বৃন্ত। যতবারই দেখতেন ততবারই বাসুদেব মুগ্ধ হতেন। শরীরের পরতে পরতে এই মেয়ে তার রূপ লুকিয়ে রেখেছে। এই মুগ্ধতা শুধু তার নয়, বাইরেও ভারতীর সৌন্দর্যের খুব প্রশংসা হয়েছিল।…..

…….মাটির গন্ধ নিতে-নিতে ভারতীয় হাউসকোটের বেল্ট, বােম দ্রুত হাতে খুলতেন বাসুদেব। ভারতী স্বামীর ঘন রােমশ বুকে হাত বােলাতে-পােলাকে মিথ্যে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করত। ফিসফিস করে বলত, ‘ইস, সাতসকালে কী শুরু করলে বলাে তাে? ব্যাবসার কথা থামাবে?’

হাউসকোটের বুক উন্মােচিত করে স্ত্রীর নরম স্তনের মাঝে মুখ ডােবাতেন বাসুদেব। সত্যি মেয়েটার শরীরে মাটির গন্ধ। মাটি আর সুগন্ধী মেশানাে মিষ্টি গন্ধ। ফুলের? গভীর তৃপ্তিতে গলা জড়িয়ে আসত তার। বলতেন, কী কথা বলব তা হলে? ভালােবাসার কথা? সে আমি জানি ভারতী, কাঠখােট্টা মানুষ, তবে ভালােবাসতে পারি।’

স্বামীর অশান্ত মাথাটা চেপে ধরে সামলায় ভারতী। কখনও নগ্ন হাতদুটো দিয়ে জড়িয়ে ধরে গলা। বলে, ‘জানাে ঠিক করেছি টবে ডালিয়া করব। বড়-বড় ফুল। ভালাে হবে না? অ্যাই জানলার পরদাগুলাে টানবে তাে।’

এত ওপরের ফ্ল্যাট, কে দেখবে?’ না দেখলেও টানাে।

নগ্ন স্ত্রীকে ডিভানের ওপর শুইয়ে দিতে দিতে বাসুদেব ভাবতেন, একেই কি শিল্পীর আঁকা ছবি বলে ? চোখ, নাক, বুক থেকে শুরু করে নাভিমূল কোমর উরু, যােনি কত নিখুত সব! প্রতিটা ভাঁজ আনাচ কানাচ তুলিতে আঁকা যেন! নারী শরীর এই প্রথম দেখছে না, তবু ভারতীকে বারবার দেখেও মন ভরে না। বাসুদেব মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতেন দীর্ঘক্ষণ। তারপর নীচু হয়ে স্ত্রীর পায়ের পাতার চুমু খেতেন। ভারতী তখন গােড়ালিতে নূপুর পরত। রূপাের নূপুর। জড়ােসড়াে ভাবে উঠে বসে হাত বাড়িয়ে বলত, ‘ছিছি, কী ছেলেমানুষি করাে। পায়ে মুখ দাও কেন? লজ্জা করে না?’

‘আমাকে লজ্জা কীসের? স্বামীর কাছে কেউ লজ্জা পায় ?

মাগাে, স্বামী বলে খুব মজা না? ড্যাব-ড্যাব করে খালি দেখা। কী। দেখাে?

বলব কী দেখি।

ভারতী বাসুদেবের ঠোটে হাত রেখে হেসে বলত, “থাক বলতে হবে ।

হাত বাড়িয়ে চাদরও খুঁজত। বাসুদেবও হাসহেনা সত্যি মেয়েটা বড্ড লাজুক। পােশাক খােলার সময় যে কতরকম রান্না দেবে তার ঠিক নেই। জানলা আটকাও, আলাে নেভাও। এমনকী প্রর্থ-প্রথম তাকে চোখ বুজতেও বলত। বাসুদেব ভারতীর ঊরুতে ঠোট দুইয়ে বলতেন, আর ফ্ল্যাট-ট্যাট নয়, এবার টাকাপয়সা হলে আস্ত একটা বাড়ি কিনব। খুব বড় বাড়ি। অনেকটা জায়গা থাকবে। তুমি মনের আনন্দে বাগান করবে।

স্বামীকে নিজের ওপর টেনে তােলে ভারতী। তার শরীর দিয়ে নিজের নগ্নতা ঢাকতে ঢাকতে বলল, সত্যি?

হ্যাঁ, সত্যি।

ভারতীর শরীরে নিজের শরীর প্রবেশ করাতে-করাতে বাসুদেব ফিশফিশ করে বললেন, শুধু বাগান নয়, ছােট একটা লনও থাকবে, সেখানে তােমার ছেলে খেলবে। নরম ঘাসে পড়ে গেলেও লাগবে না।

বােজা চোখে যেন স্বপ্নের মধ্যে চলে যেত ভারতী। গাঢ় স্বরে শৃঙ্গারের শীৎকার তুলে বলত, ‘কবে? কবে বলাে?’

জেগে ওঠা রক্তাভ স্তনবৃন্তে আলতাে ভাবে মুখ ঘষতে-ঘষতে বাসুদেব বলতেন, “খুব দেরি নেই ভারতী। তােমার ছেলে তােমার থেকেও সুন্দর হবে। সবাই বলবে, বাসুদেব চৌধুরির ছেলেকে রাজকুমারের মতাে দেখতে।

শিথিল শরীরে ভারতী দু-হাতে স্বামীর পিঠ খামছে ধরে। বিড়বিড় করে বলতে থাকে, দাও দাও…।’  গভীর তৃপ্তি আর পরম যত্নে স্ত্রীর শরীরে নিজেকে প্রবেশ করান বাসুদেব।………..

…….ঘরের ভেতর রাধা ঘুরে বেড়াচ্ছে। সম্পূর্ণ নগ্ন সে। তাকে দেখাচ্ছে জমাট বাঁধা অন্ধকারের মতাে। নাইট ল্যাম্পের মৃদু আলােয় সেই অন্ধকার কখনও স্পষ্ট হচ্ছে, কখনও অস্পষ্ট। হাত, পা, স্তন, কটিদেশ, নিতম্ব ক্ষণিকের জন্য ভেসে উঠে ফের মিলিয়ে যাচ্ছে। একেকটা সময় মনে হচ্ছে, এই মানবী রক্তমাংসের নয়, অন্ধকারের মানবী।

একটা লম্বা রকিং চেয়ারে বসে আছেন বাসুদেব চৌধুরি। পা দুটো সামনে ছড়িয়ে শরীর এলিয়ে দিয়েছেন। হাতদুটো মাথার পিছনে। আবছা আলাে এবং অন্ধকার দুটোই তার শরীরে পড়েছে। পা আলােয়, মুখ অন্ধকারে। সেই অন্ধকার থেকেই তিনি রাধার দিকে তাকিয়ে আছেন।…….

…….ফিসফিস ধরনের চাপা আওয়াজ করে এসি চলছে। গায়ে কিছু না থাকার কারণে রাধার ঠান্ডা লাগছে, কিন্তু সে বুঝতে দিচ্ছে না। সহজ ভঙ্গিতে চলাফেরা করছে। …..উদোম হলে নারী শরীরে এক ধরনের অতিরিক্ত কমনীয়তা তৈরি হয়। রাধার বেলায় তা হয়নি। কাপড় পরেও সে যেমন কঠিন, পুরুষালি, আবরণ সরালেও একইরকম। বাসুদেব চৌধুরি তার স্ত্রীকে দেখভান্তের কাজে রাধাকে যে নিয়ােগ করেছেন এই চেহারাই তার আসল কারণ। পুরুষালি, কিন্তু পুরুষ নয়।……

…….তিরিশাের্ধ্ব এই মহিলা সুশ্রী তাে নয়ই, উলটোটাই। শরীরে কাঠিন্য ভাব স্পষ্ট। গায়ের রং প্রথমে ময়লা মনে হয়, পরে বােঝা গেল কালাে। আর পাচটা মেয়ের তুলনায় লম্বা চওড়া দুটোতেই বেশি। ঠোটদুটো মােটা। শাড়ির আড়াল থেকে বেরিয়ে আসা হাতদুটো শক্তপােক্ত। মােটা মােটা আঙুলে কড়া। বুকদুটো ভারী। তারা আকর্ষণের থেকে শক্তির কথা বেশি ঘােষণা করে। সব মিলিয়ে ভারতী দেবীর মতাে রােগীর জন্য উপযুক্ত।……..

……..রাধা ঝুঁকে পড়ে কাবার্ডের পাল্লা খুলল। তার লম্বা চুল কাধের ওপর থেকে সামনে এসে ঝুলে পড়েছে। স্থূলকায় স্তনদুটি নেমে এসেছে বুক ছেড়ে নীচে। ভারী নিতম্ব উঁচু হয়ে আছে, যেন থমকে গেছে শূন্যে। লম্বা ঘাড়, প্রশস্ত পিঠ, চওড়া কোমর ছুয়ে সুতাের মতাে আলাের রেখা গড়িয়ে নামছে; তারপর উরু হাঁটু, গােড়ালি হয়ে চলে যাচ্ছে পায়ের পাতা পর্যন্ত। ছবির আউট লাইনের মতাে। অন্ধকারে আলাের আউট লাইন। স্ত। | বাসুদেব চৌধুরি তার চেয়ারে অল্প অল্প দোল খাচ্ছে তার দৃষ্টি রাধার আলাে ছায়ার স্তন, নিতম্ব, জঙঘা, যােনিদেশের দিকে। তবে সেসব যে খুব আগ্রহভাবে দেখছেন এমন নয়, বরং খানিকটা অন্যমনস্কই। | বাইরে সহজ থাকলেও রাধার ভেতরেঝের্নিকটা অস্বস্তিই রয়েছে। মানুষটা বেশিরভাগ সময়ে এরকমই করে। কাপড়চোপড় খুলিয়ে সামনে বসিয়ে রাখে, দূর থেকে দেখে। প্রথম প্রথম মনে হত, স্বভাবটাই এই, এক ধরনের অক্ষম বিকৃতি। মেয়েমানুষের নেংটা শরীর দেখে সুখ পায়। কদিন পরে মনে হল, তাও পুরােটা নয়। সেভাবে দেখার হলে ঘরের আলােগুলাে জ্বলতে দিত। বুড়ােটা তাও দেয় না। নাইট ল্যাম্পের আবছা অন্ধকারে ঘাঁটাঘাঁটি যা করার করেছে। কখনও অল্প স্পর্শ করে মুখ ফিরিয়েছে, কখনও দুমড়ে মুচড়ে মর্দন করেছে। কঠিন চোয়ালে জোরে জোরে মুখ ঘষেছে শুনে, নাভিতে ঊরুর আনাচেকানাচে। বৃদ্ধ আঙুলে আঁচড় বসিয়েছে পিঠে, নড়বড়ে দাঁতে নিতম্বে কামড় দিতে চেয়েছে। বেশিক্ষণ পারেনি খানিক পরেই হাঁপিয়ে রাধাকে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছে। বিস্মিত, অতৃপ্ত রাধা চেষ্টা করেছে আবার। আঁচড় কামড়ের জ্বালা শরীরে নিয়েই বসে থাকা বড়বাবু’র কোমড়ের দুপাশে পা রেখে টানটান হয়ে দাঁড়িয়েছে দানবের মতাে। উত্তেজনায় হাত বাড়িয়েছে। ফিসফিসিয়ে বলেছে, ‘আসুন বড়বাবু।’

মাথা ফিরিয়ে নিয়ে বাসুদেব কঠিন গলায় বলেছেন, ‘না। তুমি এবার যেতে পারাে রাধা।…….

…….প্রতিবারই রাধা নিজেকে সংযত করেছে। থাক, এগিয়ে লাভ নেই। যেটুকু পাচ্ছে সেটুকুই আপাতত থাকুক। চটালে তারই ক্ষতি। ধনী মানুষের মেয়েছেলের অভাব হবে না। হয়তাে বাইরে আছেও। তবু মাসে এক, দুদিন তার মতাে কাঠখােট্টা চেহারার মেয়েমানুষকে যে ঘরে ডেকে নিচ্ছে এই যথেষ্ট। প্রথমদিন তাে বিস্মিত হয়েছিল। ঘরে ডেকেছে বলে বিস্ময় নয়, বিস্ময় তাকে ডেকেছে বলে। বাইরে যদি কারবার না থাকে তা হলে বুঝতে হবে দীর্ঘদিন খিদে চেপে আছে বুড়াে। মেয়েমানুষের প্রয়ােজন আশ্চর্যের কিছু নয়, কিন্তু যে অমন রূপবতী স্ত্রীর শরীরের স্বাদ পেয়েছে, তার এই কালােকুলাে, খসখসে, কঠিন চেহারায় মন ভরবে কেন?’ বড়মাকে নাঙ্গা অবস্থায়ও বহুবার দেখা হয়ে গেছে তার। মহিলা আজও যে সৌন্দর্যটুকু ধরে রেখেছে দেখলে অবাক হতে হয়। উজ্জ্বল ত্বক এখনও মাখনের মতাে মসৃণ, ঝলমলে। তলপেটে অল্প মেদ জমলেও বুকদুটো শান্তভাবে উন্মাদিনীর শরীরে লেগে আছে আলগােছে। আকৃতিতে আজও তারা যেন তরুণী। রাধা যখন তেল, সাবান, ক্রিম মাখিয়ে দেয় বুঝতে পারে এই মহিলাকে দেখে বড়বাবু কেন খেপে উঠেছিল। ভারতী দেবীর মতো পাওয়া না গেলেও বাজারে সুন্দরীর অভাব নেই। ইচ্ছে করলেই নিতমিঠুন একজনকে বিছানায় তুলতে পারে বাসুদেব চৌধুরি। তা না কঝে তাকে! | রাধা বুঝে নিয়েছে অপেক্ষা করতে হবে তাকে। বুড়াে যতটুকু নিচ্ছে, ততটুকুই পাওনা বলে মেনে নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। দিনে বড়মা’র নগ্নতা গােপন করার জন্য যে টাকা সে পায়, রাতে নিজে নগ্ন হওয়ার জন্য তার তুলনায় খুব কম কিছু পায় না। প্রথমদিন ডেকেই পরিস্কার করে দিয়েছিলেন বাসুদেব চৌধুরি।…….

………পায়ের ওপর পা তুলে বসেছে রাধা। তার পরেও হাতদুটো কোলের ওপর রাখা। বুক থেকে চুল সরিয়ে দিয়েছে পিঠে। আকারে স্কুল স্তনদুটি অন্ধকারে আরও ঘন হয়ে উঠেছে। এতদিনে খুব বেশি হলে সাত থেকে আটবার রাধাকে ঘরে ডেকেছেন বাসুদেব। রাতে, গােটা বাড়ি ঘুমিয়ে পড়বার পর।……

……বাসুদেব ইশারা করলে রাধা উঠে, বােতল, গ্লাস সরাল। এবার যেতে হবে। যাওয়ার আগে এসে দাঁড়াবে ‘বড়বাবু’র সামনে। যদি ইচ্ছে হয়, তবে শরীর ছুঁয়ে দেখবেন। বেশিরভাগ সময়েই দেখেন না। আজ দেখলেন। চেয়ারের আরাম থেকে উঠে দাঁড়িয়ে হাউসকোটের দড়ি খুলে নিজেকে উন্মুক্ত করলেন বাসুদেব। তারপর রাধার শরীরে নিজের পুরুষত্ব ঘষতে লাগলেন উন্মত্তের মতাে। বড়বাবু’র কাঁধ চেপে ধরে স্থির হয়ে রইল রাধা। তার মনে হল, মানুষটা তার নগ্নতায় তাকে খুঁজছে না, অন্যকিছু অন্য কাউকে খুঁজছে। কঠিন শরীর ভেজাতে ভেজাতে সে ধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে রইল, যদি জেগে ওঠে। যদি একবার জেগে ওঠে মানুষটা।………

Leave a Reply