শিয়রে মৃত্যুর ছায়া – নীলাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

………শুভশ্রী ঢুকেছিল, তখন তাকে দেখেই সাগর নিজের ভেতরে একটা চমক খেয়েছিল। গতকাল অটোগ্রাফ দেবার সময়ে সে লক্ষই করেনি যে মেয়েটির শরীরে যৌন-আবেদন এত তীব্র। বেশ লম্বা শুভশ্রী। সাগর নিজে ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি। মেয়েটা ৫ ফুট ৬ তাে হবেই। পরণে একেবারে লেটেস্ট ডিজাইনের পােশাক। জিনসের পা-চপা, ড্রেনপাইপ ট্রাউজার আর হলুদ রং একটা গােল-গলা গেঞ্জি। | স্বচ্ছ গেঞ্জির নীচে ব্রা-এর রেখা অস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। গেঞ্জির বুকে লাল অক্ষরে লেখা—Hell is Heaven। অর্থাৎ নরকই স্বর্গ। মুখশ্রী ফরসা নয়। তবে এক ধরনের উগ্রত আছে। ঠোটদুটো মােটা। গাঢ় লিপস্টিক-রঞ্জিত। …….

……..আলিঙ্গনাবদ্ধ অবস্থা থেকে বিছানার ওপাশে প্রথমে সরে গেল শুভশ্রী-ই। দেয়াল-ঘড়ির দিকে তাকাল। বিকেল সাড়ে-পাঁচটা বাজে। সে বিছানা ছাড়ল। মেঝেতে এলােমেলাে পড়ে আছে তার অন্তর্বাস, সালােয়ার, কামিজ। শুভশ্রী সেগুলাে একে একে পরে নিল। প্রথম গােলাপি রং প্যান্টি, তারপর তার দুই ভারী এবং শানিত বুক ব্রা-এর শাসনে বাধল। সালােয়ারটা গলাতে যাচ্ছে এমন সময় চোখ পড়ল সাগরের দিকে। শুয়ে আছে, কিন্তু পিটপিট করে সাগর সব লক্ষ করে যাচ্ছে। কোনারকের মন্দিরগাত্রে দেখা নর্তকীর মতন শরীরের ছাঁদ শুভশ্রীর। কত মধু লুকোনাে আছে ঐ শরীরে। বারবার ঐ শরীরের স্বাদ নিয়েও যেন তৃপ্তি মেটে ।………

…….তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? সমস্ত শক্তি জড়াে করে শুভশ্রী সামনের লােকটার ওপর ঝাপিয়ে পড়ল। আঁচড়ে আঁচড়ে তার মুখটা ক্ষতবিক্ষত করে দিতে চাইল। অন্য তিনজন তাকে পেছন থেকে টেনে ধরল। তার শরীরটাকে নিয়ে যতক্ষণ পারে ইচ্ছেমতাে হাতের সুখ করল।…….শুভশ্রীকে ওরা প্রায় নগ্ন করে ফেলেছে। তার শরীরে দু-তিনজন মিলে চলন্ত গাড়ির মধ্যে বিশ্রীভাবে অত্যাচার করছে। যন্ত্রণায় শুভশ্রী ছটফট করছে। একজন তার স্তনদুটো দাঁত দিয়ে কামড়ে দিল। শুভশ্রী বুঝতে পারছে তার আয়ু আর বেশিক্ষণ নেই।…….দুইপাশে সীটের মাঝখানে ওরা তাকে শুইয়ে দিয়েছে। একজন প্রাণপণে প্রবেশ করছে তার শরীরে। উঃ কী যন্ত্রণা? কী বেদনা! সঙ্গমে এত যন্ত্রণা কোনওদিন পায়নি শুভশ্রী।……

…..তারপর মুকেশ রাবণের রূপ ধরল। নিজেকে সম্পূর্ণ নগ্ন করল। আমাকেও। আমার স্তনবৃন্ত দাঁত দিয়ে এমন কামড়ে ধরছিল যে আমার বেশ ব্যথা লাগছিল। আমার শরীরটা একটা ময়দার তালের মতাে চটকাচ্ছিল। বিছানায় শুতে যাবার আগেই আমি আমার ব্যাগটা বিছানায় পায়ের দিকে যে সােফা আছে, সেখানে এনে রেখেছি। তার ওপর আমার মােবাইল। ক্যামেরা ফিট । মুকেশ নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছিল। আমার চালাকি বুঝতে পারেনি। খুবই পারভার্টেড লােক। *

হতভাগা সাধনের সঙ্গে ডিভাের্সের পর আমি দীর্ঘদিন উপবাসী ছিলাম। এতদিন বাদে যেন আমার খৱা-শুকনাে শরীরে তুমুল বৃষ্টি নামল।………

…….ফ্ল্যাটটাতে যে ভাড়া থাকি তাও সাগরই ব্যবস্থা করে দিয়েছে। কিন্তু সাগরের মন খুব খারাপ দেখলাম। আমাকে আদর করতে করতে বারবার অন্যমনস্ক হয়ে যাচ্ছিল। ওর প্রিয় আদর হচ্ছে, শিশুর মতাে আমার স্তনবৃন্ত নিজের মুখের মধ্যে পুরে দেওয়া। আজ করল না।………..

……….শায়িতা মােহিনীর দিকে। এই চল্লিশ বছরেও যথেষ্ঠ রূপবতী মােহিনী। গলাননা সােনার আভা তার শরীরে। মেরুন রং নাইটি তার পরনে। স্লিভলেস। বাঁ-হাত মাথার ওপর তুলে, ডান হাঁটু মুড়ে বিচিত্র এক শশাওয়ার ভঙ্গী মােহিনীর।……..বাঁ-হাত উঁচু করে কপালে রাখার ফলে সাগর লক্ষ করল, মােহিনীর ঝরঝরে কামানাে বাহুসন্ধি। বাতাবি লেবুর মত দুই স্তন স্বচ্ছ নাইটির মধ্যে দিয়ে ফুটে উঠেছে। অনেকদিন পর সাগরের মনে হল, সে জাগিয়ে দেয় মােহিনীকে, নিজের হাতে নগ্ন করে তাকে, তারপর….। কিন্তু নাহ…. নিজেকে সংযত করে নিল সাগর। আজ দুবছর তার সঙ্গে তার স্ত্রীর কোনওরকম সম্পর্ক নেই।………

……..ভালবাসা আর শরীর একসঙ্গে নাও।

কথাগুলাে বলে এক ঝটকায় বিছানা থেকে উঠে পড়ে মােহিনী। ঘরের স্বল্পক্ষমতার আলেটা জ্বালে। তারপর নিজের শরীর থেকে নাইটিটা খুলে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় মেঝের কার্পেটে।

সাগরের বিভ্রান্ত চোখের সামনে এখন রাত্রির দ্বিতীয় প্রহরে দাঁড়িয়ে আছে নগ্ন মােহিনী। বহুদিন পর সাগরের চোখ যেন ঝলসে যাচ্ছে সেই ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যে! সত্যিই কতদিন ঐ সৌন্দর্যের দিকে যে, তেমনভাবে চোখ তুলে তাকানাে হয়নি।

-ছোও আমাকে ছোঁও সাগর। আমাকে বুকে টেনে নাও। বলতে বলতে মােহিনী নিজেই এগিয়ে আসে। তার বর্তুল, ভরন্ত, রসাল স্তনে যেন চাদের আভা! নিজের ডান স্তন সে হাত দিয়ে উঁচু করে তুলে ধরে সাগরের মুখের মধ্যে দুকিয়ে দিতে চায়। ত্রিভূজাকৃতি যােনিমুখ ধূসর রেশম দিয়ে আবৃত। দু-পা প্রসারিত করে মােহিনী সাগরের কোলে বেড় দিয়ে বসতে যায়।……….

………সাগর আঙুলের ইঙ্গিত করল। মােহিনী বুঝল। সে টান মেরে তার শরীরের নাইটি খুলে নগ্ন হল। আবার সাগর আঙুলের ইঙ্গিত করল। মােহিনী আবার বুঝল। হি হি হাসল। তার শরীর থেকে, হাসি থেকে, এলায়িত কেশরাজি থেকে কামগন্ধ ভেসে আসছিল। মােহিনী সাগরের পাজামার দড়ি আলগা করে সেটা খুলে নিল। তারপর দুটো শরীর পরস্পরের প্রতি উন্মদ, উল্লসিত, সংরাগময় আলিঙ্গনে লীন হয়ে গেল।……….

………আয়নার ভেতরে নিজেকে দেখছিল মােহিনী। দেখছিল তার উন্নত বক্ষোদেশ। পঙ্গলবর্ণ, আঙুর-সদৃশ স্তনবৃন্ত দুটি। সমুদ্রের সােনালি বেলাভূমির মতাে তার নাভিট। আরও নীচে সেই অপূর্ব গােপন প্রদেশ যা দেখলে পুরুষের দুই চোখ সার্থক হয়। অপরূপ খিলান ও গম্বুজের মতন তার দুই উরু। বহুক্ষণ নিজের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মােহিনী। তারপর মনে মনে বলল—জে.কে জয়ন্ত-কুমার তুমি যদি আজ আমাকে চাও, আমি নিজেকে বিলিয়ে দেব। একটুও কার্পণ্য করব না। আমি বহুদিন উপােসী আছি জে.কে.। নারী হিসেবে আমারও তাে কিছু চাহিদা আছে।………..তারপর মােহিনী পােশাক পরল। আজ সে পরে নিল স্কিন-টাইট কালাে কর্ডের ট্রাউজার আর গােলাপী-রং গােল-গলা গেঞ্জি-শার্ট। এই পােশাকে তার শরীরের সুন্দর ও বিপজ্জনক রেখাগুলাে যেন আরও প্রকট হয়ে উঠল।……….

………মধ্যাহ্নভােজনের পর কতদিন পর, অনেকদিন পর, একজন পুরুষের কাছে সব লজ্জা বিসর্জন দিয়ে, নিজের সুপ্ত কামনাবােধের চরিতার্থ করল মােহিনী। জে.কে. বিছানায় এত পারদর্শী তা বুঝে মােহিনীর কামভাব আরও প্রবল হল; যে আনন্দ সাগর তাকে কোনওদিন দেয়নি, দিতে পারেনি হয়তাে; সেই আনন্দ এই পুরুষের কাছ থেকে পেয়ে মােহিনী ক্রীতদাসীর মতাে ব্যবহার করছিল। হাঁফাতে হাঁফাতে বলছিল—আমার তুমি সর্বস্ব নাও জে.কে.। উপােস থেকে আমাকে মুক্তি দাও। আমর খরা কাটুক। আমার শরীরে আনাে বন্যা……জে.কে, প্রাণপণে মােহিনীর নগ্ন শরীরটাকে আদর করতে করতে বলছিলও মােহিনী তুমি কি কোনারকের মন্দিরে দেয়াল থেকে জীবন্ত হয়ে উঠে আসা কোনও নর্তকী? তােমার শরীরের ভাস্কর্যে আমি হারিয়ে যাচ্ছি…..।তারপর দুজনে তৃপ্ত হয়ে বাহুলগ্না, কণ্ঠলগ্না হয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়ল।……….

… ……ঐ তাে মােহিনী রায়, রূপের বিভায় চারদিক প্রজ্বলিত করে বেরিয়ে আসছেন! আজ তার পরনে সাদা চুড়িদার, মেরুন কামিজ। গলায় বড় বড়, গােলআকৃতির পুঁতির মালা। চুল একেবারে বয়কাট করে ফেলেছেন মােহিনী। কাঁধে যথারীতি একটা চামড়ার ব্যাগ। ও এই বয়সেও কী অটুট যৌবন ! পীনােন্নত বুক দুটি যেন কামিজ কুঁড়ে প্রকাশ্য হতে চাইছে! কিন্তু মহিলার মুখে এমন একটা ব্যক্তিত্বের আভা আছে যে চট করে কোনও বাচাল মানুষ টিটকারি দিতেও সাহস করবে না।…………

……..বনলতার ঘন চুলে মুখ ডুবিয়ে শুয়েছিলেন ডঃ শাসমল। কতবার এই পঁচিশ বছরের মেয়েটার নিজের কামনা-বাসনার আগুনে পুড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। তবু আজও যেন আশা মেটে না। আজও ওকে কাছে পেলে ছাড়তে ইচ্ছে করে না। মনে হয় বুকের মধ্যে ওর শরীরটাকে বন্দি করে রেখে দিই সারাজীবন,কিন্তু তা বললে তাে হবে না? ঘড়িতে প্রায় রাত সাড়ে আটটা বাজে। এবার বনলতার্ক বাড়ি ফিরতে হবে। সে পাশ ফিরে শুল। ডঃ শাসমল এবার তারতরম বুকে মুখ গুজলেন।

এই কী হচ্ছে? বাচ্চা খােকার মতাে ব্যবহার করছেন আপনি? এবার ছাড়ুন প্লীজ। আমাকে বাড়ি যেতে হবে না?

-নাহ, আজকের রাতটা থেকে যাও। আজ আমরা বাইরে ডিনার করব। তুমি আমার বাড়িতে থেকে যাবে।

—খুব না?… আমার বাড়িতে কী বলব? বুড়ো বাবা মা চিন্তা করবে না? আর তাছাড়া……।

-তাছাড়া?—ডঃ শাসমল তার একটি হাত রাখো বনলতার একটি বুকের উপর।

—আমি উঠে পড়লাম। আর অসভ্যতা নয়।-বলে বনলতা বিছানা ছাড়ল। ডঃ শাসমল তখনও শুয়েই রইলেন। শুয়ে শুয়েই তিনি দু-চোখ ভরে দেখলেন, বনলতার অপরূপ শরীর ভাস্কর্য, যা বারবার দেখেও আশা মেটে না। ঘরে স্বল্প ক্ষমতার আলাে জ্বলছে। শুয়ে শুয়ে ডঃ শাসমল দেখলেন, লজ্জার মাথা খেয়ে, বনলতা তার সামনেই পােশাক পরে নিল। প্রথমে প্যান্টি গলিয়ে নিল। তারপর স্কিন-টাইট জিনস্ ট্রাউজার, তারপর বক্ষবন্ধনীর নিগড়ে নিজের উদ্ধত স্তনদুটিকে লুকিয়ে ফেলল, তারপর সাদা কুর্তা।……….

………..একটু হাসল শ্বেতা। কঁ সুন্দর ঝকঝকে দাঁতের সারি! সাগরের দিকে পাশ ফিরে শুয়েছে শ্বেতা। কলকাতার উপকণ্ঠে শহরতলীতে হাইওয়ের ধারে ঝাঁ-চকচকে, নতুন গজিয়ে ওঠা এক রিসর্টের দোতলায় বাতানুকূল ঘরের চওড়া এবং আরামপ্রল বিছানায় দুজনে শুয়ে আছে। ওরা যেন আদিম মানব-মানবী! ঘরে স্বল্প-ক্ষমতার একটা আলো। বাইরে সন্ধে নেমে এসেছে।………শরীরে একচুল সুতাে নেই। সেই অবস্থায় শ্বেতা তড়াক করে বিছানা থেকে উঠে পড়ে। হেঁটে যায় কিছুটা। ঘরের কোণে ওয়ার্ডোবের ভেতর তার ব্যাগ থেকে বইটা বের করে আনে। সাগর বিছানায় শুয়ে দু-চোখ ভরে শ্বেতার শরীরের অনুপম ভাস্কর্য প্রত্যক্ষ করে। তার নয়ন যেন জুড়িয়ে যায়, যে হয়, কোনারকের মন্দির থেকে পাথরের কোনও নর্তকী যেন জীবন্ত হয়েঞ্জার ‘চাখের সামনে, চলাফেরা করছে। বইটা এনে সাগরের দিকে বাড়িয়ে দেয় শো।……-ঠিক তাে?—শ্বেতা সাগরের বুকে প্রাণপণে মুখ ঘষে।

—ঠিক ঠিক ঠিক-সাগর শ্বেতাকে প্রাণপনে আলিঙ্গন করে। তারপর আবার প্রবল রতিক্রিয়া শুরু হয়…..।

সব কিছু সাঙ্গ হয়ে যাবার পর এখন দু’জন পােশাক পরে, নিয়েছে আবার।……….

Leave a Reply