অনুবাদঃ প্রসাদ সেনগুপ্ত
……ইঞ্জিন বন্ধ করবার সময় সে দেখতে পেল লাল চুল এক তরুণীকে টাইট সােয়েটার আর সর্টস পরে রাস্তা পার হচ্ছিল মেয়েটি। শিস দিয়ে ওঠে ইভারসন, আরে দ্যাখাে, বুক-এর বহর দ্যাখাে। এই রকমটাই চাই, কি বল অটো? বেশ বড় আর নাচতে থাকা মাই।….
….রবিবারের কাগজেই এই বিজ্ঞাপন আছে। ডিসপ্লে উইণ্ডোতে সাজান বইগুলির দিকে তাকায় সে। একটি মাত্র বই বিভিন্ন কায়দায় সাজান। বইটির জ্যাকেটে খুব সূক্ষভাবে আঁকা হয়েছে একটি নগ্ন নারীর ছবি। চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। হাঁটু ভাঁজ করে দু’পা ফাঁক করা। ছবির উপর বইয়ের এবং লেখকের নাম।….
…..আমি সে কথা বলিনি। আমার বক্তব্য শুধু জ্যাডওয়ের ‘সেভেন মিনিটস’এ কেন্দ্রীভূত রাখছি। কোনদিন হয়তাে বইটাকে অশ্লীল বলা যেত। কিন্তু আজ? এ যুগের সিনেমা দেখেছেন? পর্দায় শুধু নারী পুরুষের মৈথুনই দেখাচ্ছে না, মেয়েদের হস্তমৈথুন, সমকামীতা আরও কত বলব? আমার বক্তব্য হল—তথাকথিত সমকালীন সামাজিক মূল্যবােধ, আধুনিক মানদণ্ডের তুলনায় জ্যাডওয়ের উপন্যাস শিল্পসম্মত। তবে গ্রেপ্তার কেন?….
….এই সাত মিনিট বইটিতে সাতটি পরিচ্ছদে বিবৃত হয়েছে। প্রতি মিনিটে একটি পরিচ্ছদে অপরিচিত এক ব্যক্তির সঙ্গে মিলনেচ্ছু রমনীর অনুভূতির কথা। সমস্ত উপন্যাস জুড়ে ক্যাথলীন নামে এক রমনীর অনুভব, স্মৃতি, স্বপ্ন বিবৃত হয়েছে। সাত মিনিটের দেহমিলনে। ক্যাথলীনের মন এই কাহিনীতে বিবৃত হয়েছে অপূর্ব ভাবে। প্রত্যেক মিনিটে সে ভেবেছে তার কৈশাের থেকে বর্তমান জীবন। বর্তমানের তিনজন প্রেমিকের কথাও আছে। উপন্যাসের বিবৃত সময়ে তার পুরুষ শয্যাসঙ্গীর সঙ্গে লিপ্ত হয়ে সে ভাবছে তার কৈশােরের কামনার কথা, ইচ্ছার কথা—যা কখনাে সম্ভব হয়নি। সে চেয়েছিল যীশুর সঙ্গে, জুলিয়াস সীজারের সঙ্গে, শেক্সপীয়রের সঙ্গে, গ্যালিলিওর সঙ্গে, বায়রণের সঙ্গে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সহবাস করতে। ১৭১ পৃষ্ঠার বইতে তার বর্তমান সঙ্গমের সুখানুভূঁতির সঙ্গে ছেলেবেলার কল্পনার সুখ উপভােগ করেছে সে। সাত মিনিষ্ট্রের শেষে তার চরম যৌন তৃপ্তি।…..
…ব্যারেট ওর দিকে এগিয়ে যায়। ম্যাগীর উজ্জ্বল কালাে চুল, মােহময়ী বিশাল ধূসর-সবুজ চোখ, পরিপূর্ণ নিচের ঠোট, সেই আগের বারের মতই আকর্ষক। সাদা সিল্কের ব্লাউজ থেকে পীনস্তত স্তন আর অর্ধ-অন্তর্বাসের কিছুটা দেখা যাচ্ছে। মনে মনে ব্যারেট হাসল, আবার সেই ‘দৃষ্টি-ধর্ষণ’ করল সে।….
….ম্যাগীর চলে যাওয়া অনেকক্ষণ ধরে দেখল ব্যারেট। তারপর ধীরে ধীরে নিজের গাড়িতে গিয়ে বসল। তখনাে ম্যাগী তার মন জুড়ে বসে আছে। ম্যাগীর চেহারা তার চোখের সামনে ভাসতে লাগল। তার বিভক্ত সিক্ত ঠোট, কথা বলবার সময় প্রাণবন্ত শরীরের ভঙ্গিমায় ব্লাউজের ফাঁকে স্তনের ইশারা, হেঁটে যাবার সময় নমনীয় উরুর দৃশ্য। হ্যা, এই তাে ‘দৃষ্টি-ধর্ষণ’। ম্যাগী যেন তাকে দুর্বল করে দিয়ে গেল।….
…..‘গেইসা’ রাতে ফে’র প্রিয় সঙ্গীত ম্যানুয়েল ডি ফ্যালার’ ‘রিচুয়াল ফায়ার ড্যান্স’ খুব নিচুস্বরে বাজছিল রেকর্ড প্লেয়ারে। বিস্ময়মুগ্ধ চোখে ব্যারেট ফের বহির্বাস-বিহীন শরীরের দিকে তাকিয়েছিল। আজ ফে’র অন্তর্বাস ছিল স্বচ্ছ গােলাপী নেগলিজী। ব্লণ্ড চুল ছড়িয়ে পড়াতে তার লম্বা মুখ যেন গােলাকার দেখাচ্ছে। স্বচ্ছ নেগলিজী থেকে তার চাদের মত স্তনের ধূসর রংয়ের বোঁটা, নাভি থেকে শ্রোণীদেশ যােনি পর্যন্ত একটা ত্রিকোণ রচনা করেছে। কামনায় পূর্ণ হয়ে ব্যারেট পােষাক খুলতে লাগল।
মাইক, ‘সেভেন মিনিটস’ বইটাকে তুমি বাইবেলের মত বিছানার পাশে রাখ দেখছি।
ব্যারেট দেখল, ফের হাতে ‘সেভেন মিনিটস’ বইটা। বলল, ‘বিচারের আগে ভালভাবেই পড়ে নিচ্ছি বইটা। তােমাকে একটা কপি পড়তে দিয়েছিলাম। পড়েছ? বইটা পড়তে ক্লান্তি আসেনা, তাই না?
বইটা টেবিলে ছুঁড়ে দিয়ে ফে’ বলল, এখানে শুয়ে, আজ দু’জনেরই স্পষ্ট কথা বলার সময় হয়েছে। ব্যারেটের নগ্ন বুকে হাত বুলায় ফে।
‘এখন ওসব কথা থাক। এই মুহূর্তে…’ ব্যারেট এক হাতে ওকে কাছে টেনে নিতে চায়। কিন্তু ফে হাত তুলে বাধা দেয়।…..
…..‘বহু বছর ধরে যৌনতাকে গােপনীয়, ব্যক্তিগত ব্যাপার রাখার ফলে আজ কত অসুখী মানুষের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যারেট বলল, “আমাদের ভালবাসা যদি সত্য হয় তবে বইটাতে বর্ণিত ভালবাসা কেন সত্য নয়?
‘ওই ভালবাসা মিথ্যা। একগুয়ের মত ফে বলতে থাকে, ওই বইটার নায়িকা ক্যাথলীন সঙ্গমের সময় তার যতসব চিন্তাধারা, সবই ফন্দিবাজি করে সুড়সুড়ি দেবার জন্যই। বাস্তবে কি তাই হয়? একজন খাঁটি মেয়ে ও সময় কখনন ওসব ভাবে? লেখক, ওই লােকটার মস্তিষ্কে ওসব বাসা বেঁধেছে অথবা চায় যে ওই সময় মেয়েরা এসব কথা ভাবুক। তুমিত কত বিশেষজ্ঞের কথা বল। এবার আমি একটু বলি। ডক্টর কিনসের ভাষায় ঃ ওই পর্ণগ্রাফি বইগুলি পুরুষের জননইন্দ্রিয় আর সঙ্গমের সক্ষমতা সম্পর্কে বড় বেশি করে লেখে। সঙ্গমের সময় মেয়েদের সাড়া দেওয়া এবং যৌন অতৃপ্তির কথাও মিথ্যে করে লেখা। এবার আমি বলি ঃ জ্যাডওয়ের কথামত মেয়েরা ওভাবে ভাবেনা, অনুভবও করেনা। মাইক, ব্যাপারটা হাস্যকর আর অত্যন্ত নিচুস্তরের। আমাকে বিশ্বাস কর মাইক, আমিও একটি নারী।…..
…..‘মাইক, ও কথা আমাকে জিজ্ঞেস করােনা। যৌনাঙ্গ সম্পর্কে ওই কুৎসিত শব্দগুলি আমার মুখ দিয়ে বের হবে না।
‘কি সেই শব্দ’, ব্যারেট দাবী জানায়, “কি সেই বীভৎস শব্দ? তুমি কি সেই লিঙ্গ শব্দটার কথা বলতে চাইছ?”
মাইক? তা হলে সেই শব্দটাই, লিঙ্গ। তাই না? মাইক! মাইক, থাম তুমি।
‘সােনামনি, তবে শােন। শব্দটা মধ্যযুগ থেকেই ব্যবহার হচ্ছে। শব্দটা টিউটনিক কান্ট’ যার ল্যাটিন শব্দ হল ক্যানিয়ুস। এর অর্থ হল কাঠের বা লােহার গোঁজ। জ্যাডওয়েই প্রথমে এর ব্যবহার করেনি। চসার এর মধ্যযুগীয় প্রতিশব্দ হল ‘কোয়েণ্টা।’ ‘কেণ্টারবেরী টেলস’এ শব্দটা নেই? রলেন্স স্টার্ন, জন ফ্লেচার, ডি, এইচ লরেন্স শব্দটার ব্যবহার করেছে। তা হলে ক্যান্টারবেরী টেলস স্কুল পাঠ্য থেকে আর লাইব্রেরী থেকে বিসর্জন দাও।…..
…..ফিসফিস করে ফে বলল, তা হলে বই-এর কথা ভুলে গিয়ে এবার এস।
যদিও ফে’কে আদর করছিল ব্যারেট, তবুও তার মনে যেন একটা ক্ষীণ পর্দা দু’জনকে আলাদা করে রেখেছিল। এক সময় ব্যারেট অনুভব করল ফে’র শীর্ণ আঙ্গুলগুলি তার পায়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একসময় সেই আঙ্গুলগুলি নির্দিষ্ট জায়গায় স্পর্শ করতেই ফে’র ঘন-নিঃশ্বাসের শব্দ শুনল সে। মাইক, আমাকে নাও, আমাকে ভালবাস। ওকে নিচু করে রেখনা। বড় হতে দাও—আরও বড়। | ক্ষীণ পর্দাটা এবার টুকরাে টুকরাে হয়ে যায়। গর্জন করে ওঠে ব্যারেট, তাই হােক, তবে তাই হােক।
একটানে নেগলিজীটা খুলে ফেলে ফে। তার কম্পিত স্তনে চুমু খেল ব্যারেট। বুক থেকে ব্যারেটের মাথা সরিয়ে ফে বলল, ‘ডারলিং এসাে, তাড়াতাড়ি এসাে। আমি তৈরি।
ব্যারেটর মনে হল সে যেন একটা জন্তু হয়ে গেছে। সে চোখ বন্ধ করে ফে’র গলা শুনতে পেল, ‘একি, থামলে কেন, জোরে, আরও জোরে ….আঃ, ডারলিং….আঃ। তােমার ভাল লাগছে তাে? ?
এক সময় ব্যারেট চোখ খুলে দেখতে পায় ফের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে। তার ঠোটের ভঙ্গিমায় সে জানাচ্ছিল, তার এই রতিক্রিয়া ওই সব নােংরামীর কত উর্দ্ধে। এর জন্য সে গর্বিত থৈ করছে। ব্যারেট তাকিয়ে দেখল, ফে যেন তাকে কত খুশি করল এটা যেন তার কাছে শুধুমাত্র দেহের স্বাস্থ্য ও স্বাভাবিকতা মাপকাঠি। এই রতিক্রিয়ায় ফে যেন দর্শকের ভূমিকায় অভিনয় করে গেল। মর্যাদা আর উঁচুঘরের মহিলাদের মত গর্বিত হয়ে গেছে ফে’র মুখ।…..
…..
ওই যে মেয়েরা আসছে। আমি মশাই থ্যাবড়া পাছা, ঝুলাে স্তন অলা বুড়িদের নিয়ে সস্তার ছবি করিনা। আমার ছবির মেয়েরা দেখবেন একদিন বড় বড় চিত্রতারকা কিংবা মডেল হবে। ওঁদের বয়স বার থেকে কুড়ির মধ্যে। কেউ স্কুলে পড়ে কেউ চাকরি করে কিংবা কলেজে পড়ে। ওই যে দু’জন আসচ্ছে ওদের দৈনিক একশ’ পঁচিশ ডলার মজুরী দেই আমি। খুঁজে দেখুন, শুধু কাপড় খুলে থাকার জন্য কোন ব্যাটা এত খরচ করে।’
এবার ব্যারেটের দৃষ্টি নিবদ্ধ হল সেট-এর উপর। একটি পূর্ণ যুবতী স্বল্প এবং স্বচ্ছ নাইট গাউন পরনে আলুথালু কালাে চুল নিয়ে উদ্ধতভঙ্গিতে সেট-এ প্রবেশ করে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার কাছে নিজেকে চড়িয়ে দেয়। পিছনে পিছনে আসে গােলগাল হাসি-খুশি খুব অল্প বয়স্ক একটি মেয়ে যার পরনে ফরাসি আয়াদের মত ব্যালে-স্কার্ট। তার হাতে একটা বড় কাগজের বাক্স। প্রথম মেয়েটি, সে বাড়ির কত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করছে, সে আয়াকে বলল, বাক্স থেকে পােষাক বের করে বিছানায় রাখতে। মেয়েটি তাই করে এবার তার কত্রীর জন্য টেনিস খেলার র্যাকেট নিয়ে আসে। কী আস্তে আস্তে তার স্বচ্ছ নাইট গাউনটি একেবারেই খুলে ফেলে দেয়। তারপর টেনিস র্যাকেট হাতে নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে নগ্ন বক্ষে টেনিস খেলার মহড়া দিতে থাকে। অবশেষে সে তার আয়াকে টেনিস খেলার পােষাক বের করতে বলে দ্রুত ক্যামেরার রেঞ্জ থেকে বেরিয়ে যায়। এবারে আয়াবেশি মেয়েটি বাক্সটা ফেলে তার ভিতর থেকে তিনটে বিকিনি প্যান্টি বের করে। খুব পছন্দ হয়েছে এমন একটা ভাব দেখিয়ে সে এবার ভ্যাকুয়াম ক্লিনার নিয়ে চালাতে চালাতে ক্যামেরার দিকে পিছন ফিরে পিঠ নিচু করে ভ্যাকুয়াম ব্যাগ বের করতে থাকলে তার ছােট স্কার্ট উপরে উঠে গেলে এক জোড়া নগ্ন নিতম্ব দেখতে পাওয়া যায়। ব্যারেট টের পেল, কোয়াদ তার দিকে তাকিয়ে গর্বিত হাসি হাসছে। ছবি তােলা এগােতে থাকে। এবার মেয়েটি একজোড়া বিকিনি হাতে নিয়ে দ্রুত হাতে নিজের পােষাক খুলে ফেলে। কয়েক মুহূর্ত সে ক্যামেরার সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে শুধু একটা হাতে নিম্ন প্রদেশ ঢেকে। তারপর পাশ ফিরে পরতে থাকে বিকিনিটা। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে থাকে সে। এ সব যখন করছিল সে, পিছন থেকে বাড়ির কর্তা গালে সাবান মেখে দাড়ি কামাবার ভঙ্গিমায় ক্যামেরার রেঞ্জে ঢুকে পড়ে তার স্ত্রীকে না দেখে অন্য দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়ায়। মেয়েটি আয়নার সামনে নাচের ভঙ্গিমা করছিল। ঘুরে দাঁড়িয়ে বাড়ির কর্তাকে দেখতে পেয়ে প্রথমে সে আতঙ্কগ্রস্ত ভাব দেখিয়ে মুখে তারপর খােলা বুকে হাত রেখে দ্রুত ঘরের এক কোণে গিয়ে প্যান্টি খুলে নিজের পােষাক পরে নিল।…..