…..তারপর এক গভীর তীব্র ভালাে লাগায় পরাশর নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানাে সােহাগ গলায় বলল : মৎস্যগন্ধা তােমাকে ভীষণ ভালাে লাগছে আমার। যৌবন তােমাকে সুন্দর করেছে। আজ তােমার কাছে আমার অনেক দাবি। একদিন যে জীবন রাক্ষসদের হাত থেকে রক্ষা করেছি, সেই জীবন আমার বাঁচার জন্য চাই! লজ্জায় নিজেকে তুমি লুকিয়ে রেখ না। রাখলে আমি বাঁচব না। অনেক পথ হেঁটে, পাহাড় ডিঙিয়ে নদী পার হয়ে তােমকে দেখব বলে এসেছি। এখন কী ভালাে লাগছে আমার।
মৎস্যগন্ধার কথা হারিয়ে গেল। বিষম লজ্জা তার সমস্ত চেতনাকে আচ্ছন্ন করল। অন্তর্বাসহীন বুকের উপর কাপড়খানা টেনে দিয়ে পরাশরকে দেখতে লাগল। পরাশরের বয়স হলেও যৌবনােচিত আকর্ষণ তার চোখ দুটিকে আটকে রাখল। আর তাতেই তার বুকের রক্ত ছলাৎ করে উঠল। পরাশবেরও চোখের পলক পড়ছিল না। সময়ের গতি তখন দুরন্ত।
কোথা থেকে কি হয়ে যাচ্ছিল দু’জনের ভেতর ভালাে করে বােঝার বােধশক্তি ছিল না। এক অবােধ রহস্যময় নিবিড় অনুভূতি তাদের চেতনাকে একটু একটু করে আচ্ছন্ন করছিল আর তারা নিবিড় আশ্লেষে একে অপরকে পাওয়ার এক অনাস্বাদিত গভীর সুখানুভূতির মধ্যে হারিয়ে যেতে লাগল। কী দ্রুত একটার পর একটা ঘটনার মধ্যে তারা প্রবেশ করছিল। সমর্পণের আবেগে উভয়ে ব্যাকুল তখন, ভাবার সময় কোথায়? প্রকৃতির অলঙ্ঘ্য নিয়মে রক্তে তখন দুরন্ত তৃষ্ণা, কোষে কোষে নিবৃত্তির ক্ষুধা। ডিঙির দড়ি খুলে পরাশর স্রোতের মুখে ঠেলে দিল। ভেসে গেল মাঝদরিয়ায়। অভিনব আদর, অনাস্বাদিত জীবন, চমৎকার আনন্দ, শরীরে মনে নতুনত্বের স্বাদ কানায় কানায় ভরে যাচ্ছিল, সারা শরীর যেন গান গেয়ে উঠল। সঙ্গম সুখের প্রার্থনায় জীবনের মানেটা হঠাৎই আবিষ্কার করল সাহসের সঙ্গে। মহিষকালাে স্তুপাকৃতি জালের উগ্র আঁশটে গন্ধের সঙ্গে মিশল তাদের গায়ের গন্ধ। চারপাশে ছড়ানাে জালের স্তুপ তাদের আড়াল করল। শুকনাে জালের মরমর শব্দের সঙ্গে সঘন নিঃশ্বাসের শব্দ যমুনার কল্লোল মিলে মিশে একটা অদ্ভুত অনুভূতির ঢেউ যমুনার তরঙ্গের মতই উন্মত্ত উৎসারে ছেয়ে গেল তাদের শিরায় শিরায়।…..