….দীপ্ত এ কথার কোনও উত্তর না দিয়ে হঠাৎ ঝাঁপ দিয়েছিল বিছানায়, কমলিকাকে শুদ্ধু। কমলিকাও টাল সামলাতে না পেরে একেবারে বিছানায় টানটান। এদিকে পা ঝুলছে বিছানার বাইরে। কমলিকা উঠে পড়ার চেষ্টা করতে লাগলেন, কিন্তু ততক্ষণে তাঁর পুরো শরীরটাই দীপ্তর কবলে। দীপ্তর ঠোঁট সম্পূর্ণ অধিকার করেছে কমলিকার ঠোঁট। একেবারে ভিতর অবধি যেন শুষে নিতে চাইছিল। ওর জিভ স্পর্শ করছিল কমলিকার মুখগহ্বর, একবার ঠোঁটে দাঁতও বসিয়ে দিল। কমলিকার মনে হতে লাগল তাঁর ঠোঁট বুঝি এবার ছিঁড়ে যাবে। দীপ্তর হাতও চলছিল। কমলিকার বুক, নাভিদেশ, নিম্নাঙ্গের রহস্য সব ছুঁয়ে দেখছিল সে অস্থির হাতে। অসহ্য উত্তাপ ছড়াচ্ছিল দীপ্তর দেহ। আর দীপ্তর শরীরের স্পর্শে মমতা বা স্নেহ নয় ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছিল শক্ত, পুরুষালি চিহ্ন। কমলিকার তলপেটে শক্ত হয়ে ওঠা পুরুষাঙ্গের স্পর্শ কেমন যেন দিশেহারা করে দিচ্ছিল কমলিকাকে। শরীরের সমস্ত শক্তি জড়ো করে ধাক্কা দিয়েছিলেন। দীপ্ত ছিটকে পড়েছিল এক অপ্রত্যাশিত ধাক্কায়। ভয়ংকর অবাক হয়েছিল। কয়েক মুহূর্ত কারও মুখে কোনও কথা নেই। শেষপর্যন্ত দীপ্তই কথা বলেছিল প্রথম।
—আমি কি একটু বেশি রুড হয়ে পড়লাম কুমু? তোমার খারাপ লাগছে? কমলিকা কিছু বলতে পারেননি। কী বলবেন? দীপ্তকে এখন তাঁর মাসতুতো দাদা মণীশের মতো মনে হচ্ছে, এ কথা কি বলা যায়? মাসির বাড়িতে থাকাকালীন এই একটা উপস্থিতি তাঁকে সর্বক্ষণ ভয়ে কাঁটা করে রাখত। যখন-তখন নানা ছলছুতোয় কমলিকার বুকে হাত ছোঁয়াত মণীশ। মাসির সিনেমা দেখার অভ্যেস ছিল খুব। ছুটি-ছাটায় কমলিকাকেও নিয়ে যেতেন। সঙ্গে থাকত মণীশ। দুষ্টু লোকেদের থেকে বাঁচাতে বোনকে মাঝখানের সিটে বসাত সবসময়। একদিকে মাসি আর একদিকে সে নিজে। মাসিও ভাবত তার ছেলে কত বুঝদার। কত সেনসেটিভ! আসলে কিন্তু সে ছিল আস্ত একটা বদমাশ। হলের আলো নিভে গেলেই জেগে উঠত শয়তান কী খোপড়ি। কনুই দিয়ে বুকের একপাশে চাপ দেওয়ার উদ্দেশ্যে হঠাৎই বিবেকানন্দর মতো দু’হাত আড়াআড়ি ভাঁজ করে রাখত। কারণে-অকারণে মাসিকে ডেকে কথা বলার জন্য হাত বাড়িয়ে দিত। সিনেমা সম্পর্কে বোকা বোকা হাবিজাবি মন্তব্য করত নীচু গলায়। কমলিকাকে পেরিয়ে মাসিকে গায়ে হাত দিয়ে ডাকার অছিলায় কমলিকার বুক ছোঁয়ার সুযোগটা নিত মণীশ। শেষপর্যন্ত কমলিকা সিনেমা যাওয়াটা একেবারে বন্ধ করেছিলেন। তাতেও অবশ্য রেহাই পাননি। বাড়িতেই চলত গোপন আক্রমণ। মাসির দেওরের পুঁচকে ছেলেটা কমলিকাকে খুব পছন্দ করত। সবসময় দিদিয়া-দিদিয়া বলে ঝাঁপিয়ে পড়ত কোলে। কমলিকাও ভালবাসতেন খুব। ওই একরত্তি ছেলেটাই যেন ছিল তাঁর একমাত্র খুশির জায়গা। কোলে নিয়ে খুব চটকাতেন বাচ্চাটাকে। মাঝেমাঝেই মণীশ এসে উপস্থিত হত। বাচ্চাটার দিকে হাত বাড়িয়ে বলত ‘আয় বুমবুম আমার কোলে আয়’। বাচ্চাটা মণীশকেও ভালবাসত। ডাক শুনে যেই কোলে যাওয়ার জন্য হাত বাড়াত অমনি কাছে এসে মণীশ কোলে নিত। কমলিকার কাছ থেকে বাচ্চাটাকে নেওয়ার সময় ইচ্ছে করে কমলিকার বুকে হাত ঘষে দিত লহমায়। বাইরে থেকে কেউ বুঝত না এই চোরাগোপ্তা নোংরামো। শুধু কমলিকা বুঝতেন আর ভয়ে, ঘেন্নায় সিঁটিয়ে থাকতেন সবসময়। একবার তো আরও সাংঘাতিক একটা ঘটনা ঘটতে ঘটতে বেঁচেছিলেন।……
……জুটিয়ে দেব একজনকে। এই তো বঙ্কা তোর ব্যাপারে খুব ইন্টারেস্ট নিচ্ছিল সেদিন।
মনীষের নোংরা হাসিটা আরও চওড়া হয়েছিল। অসহ্য রাগে প্রায় মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার জোগাড়।
—হাই ডেয়ার ইউ! বঙ্কার মতো একটা লোফার ছেলেকে নিয়ে….. কথা শেষপর্যন্ত শেষ করতে পারেন নি। পিছোতে পিছোতে একটা ছোট টুলে ধাক্কা খেয়ে প্রায় পড়েই যাচ্ছিলেন। মণীশ এসে তাকে না ধরলে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। টাল সামলাতে সামলাতেই লক্ষ করেছিলেন মনীশের হাত তাকে প্রায় জড়িয়ে ধরেছে। কমলিকার বুকে নিজের বুক দিয়ে চাপ দিচ্ছে আর বিড়ির তীব্র কটু গন্ধ ভরা মুখটা তাঁর দিকে এগোচ্ছে।
ছেলেটার চোখদুটো কেমন ঘোলাটে লাল হয়ে উঠছে। —তুই খুব সুন্দর কুমু! যে-কোনও ছেলে তোকে পেলে ডেয়ার
হতে বাধ্য…
চাপা গলায় কিঞ্চিৎ জড়ানো ভঙ্গিতে উচ্চারণ করেছিল মণীশ।
হা ঈশ্বর! কত পাপ করলে কোনও মেয়ের মা মরে যায় ? কতখানি অন্যায় আর অপরাধের শাস্তি ধার্য হলে একজনের বাবা মিলিটারির চাকরি করে? চোখ ফেটে জল আসছিল কুমুর। কী করবে সে এখন ? কী করে প্রতিহত করবে পশুটাকে?
— দ্যাখ! এই জায়গাটা দ্যাখ! কেমন টনটন করছে!
কুমুর হাতটা টেনে নিয়ে নিজের প্যান্টের উপর ছুঁইয়েছিল মণীশ। শক্ত কী একটা ঠেকছিল হাতে। কুমু ভয় পেয়ে চিৎকার করে উঠেছিল।
ঠিক এই সময়ই বাগান পেরিয়ে আসছিল একটা ভরাট কণ্ঠস্বর।
—কুমু! কুমু! কী হয়েছে মামণি?
বাবা! বাবা এসেছে? কই কোনও খবর দেয় নি তো! যাই হোক এসে যখন গেছে তখন আর…
মণীশ ততক্ষণে ছিটকে সদর দরজার কাছে।…..
…….শেষ কথাটা দীপ্ত-র কানের লতিতে প্রায় ঠোঁট ঠেকিয়ে ফিসফিস করে বললেন। দীপ্ত প্রচণ্ড অবাক হয়ে চমকে উঠেছিল। কমলিকার দিকে তাকিয়ে বুঝে নিতে চাইছিল ঠাট্টা কিংবা ব্যঙ্গ করা হচ্ছে কি না। কিন্তু কমলিকার অল্প লাল হয়ে ওঠা গালের দিকে তাকিয়ে শেষ পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হয়েছিল। ঝপ করে উঠে দাঁড়িয়ে টান দিয়েছিল কমলিকার হাত ধরে। কমলিকাও বিনা বাক্যব্যয়ে দোতলায় উঠে গিয়েছিলেন সুর-সুর করে। ফাঁকা করিডরে দাঁড়িয়ে রুমের দরজায় কমলিকা যখন ল্যাচ-কি ঘোরাচ্ছিলেন তখন দীপ্ত পিছন থেকে তাঁর কোমর জড়িয়ে ধরেছিল। ঘাড়ের পাশে দীপ্তর ঠোট খেলা করছিল সন্তর্পণে। কমলিকা অল্প হেসে খুলে ফেলেছিলেন দরজাটা। ভিতরে ঢোকার পরই দীপ্ত কোলে তুলে নিয়েছিল কমলিকাকে। পাঁজাকোলা করে বিছানায় নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিয়েছিল। আলতো করে। দীপ্তর এক টানে গায়ের শালটা উড়ে গিয়ে পড়েছিল মেঝেতে। ব্ল্যাক সিল্কের কাফতান পরা কমলিকাকে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছিল তখন। চিত হয়ে শুয়ে কমলিকা অপেক্ষা করছিল একটা শুরুর। যেখান থেকে তাদের যাত্রা শুরু হবে। দীপ্তর চোখ আবারও লালচে হয়ে উঠছিল ধীরে ধীরে। না, তাদের মাঝখানে কিছুতেই আর মনীষকে আসতে দেবেন না কমলিকা। স্থির করেই রেখেছিলেন। এবার তাই দু’হাত দিয়ে চোখ দু’টো ঢেকে ফেলেছিলেন। আর কমলিকার চুড়ো হয়ে থাকা বুকের ওপর নেমে এসেছিল দীপ্তর মুখ। জোরে জোরে গোটা মাথাটাই ঘষছিল দীপ্ত । পাগল হয়ে উঠছিল। কমলিকা শুধু বলতে পেরেছিলেন, – আলোটা নেভাও প্লিজ!……
…….নিজের ডিগনিটি, নিজের আভিজাত্য সব ভেঙে কমলিকা পর্দা সরালেন অল্প। কমলিকার রিফ্লেক্স তাঁকে বাধ্য করল পর্দা সরাতে আর কমলিকার ইন্সটিঙ্ক তাঁকে বাধা দিল পর্দা পুরোটা ফাঁক করতে। পর্দা অল্প একটু ফাঁক করতেই তিনি দাঁড়ালেন সেই খোলা মাঠের সামনে। যেখানে আলো তীব্র, দৃশ্যাবলি স্পষ্ট, সত্য স্থাপিত। বড় টেবিলটার উপর সেই মেয়েটা। ব্লু জিনস-এর উপর পিঙ্ক কালারের একটা হাল ফ্যাশনের ব্রা পরে শুয়ে আছে। দীপ্তর পরনে বারমুডা। মেয়েটি একদিকে কাত হয়ে দীপ্তর পুরুষাঙ্গের ওপর অল্প অল্প করে ঠোঁট ঘষছে, বারমুডার ওপর দিয়েই, দীপ্তর চোখ-মুখ ফেটে পড়ছে অসহ্য সুখের যন্ত্রণায়। মেয়েটা এবার ধীরে ধীরে বের করে আনল কাঙ্ক্ষিত বস্তু, সাক করছে, করেই যাচ্ছে….
…..শুধু অশরীরী বোধ একধরনের। এই! এই চাইত দীপ্ত তাঁর কাছে? দেখার সুখ? মেয়েটা যখন দীপ্তর লৌহদণ্ড জিভ দিয়ে লিক্ করছিল তখন দীপ্ত সেটাদেখছিল অসম্ভব তৃপ্তি নিয়ে। তারপর চোখ বন্ধ করেছিল আরামে, যখন পুরোপুরি মেয়েটার মুখের ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল তার পৌরুষ। এই রহস্যহীন অতিরিক্ত দৃশ্যমানতাই কি পুরুষের কাঙ্ক্ষিত? নাকি নারী-পুরুষ উভয়েরই? একমাত্র কমলিকাই যা পারেননি কোনওদিন। শুধু মণীশের ভূত দেখে গেছেন। কই আজ তো দীপ্তকে মণীশের মতো দেখাচ্ছিল না! বরং খুব তৃপ্ত, পরিপূর্ণ একজন মানুষই মনে হচ্ছিল, এবং সেটা দীপ্তই। পুরোপুরি দীপ্ত চৌধুরি। মণীশ কি তাহলে কমলিকার মনেই ছিল শুধু ? একজন ট্রেসপাসারস্-এর এত দাম কমলিকার কাছে? মাসির বাড়ি থেকে বাবার সঙ্গে বেরিয়ে সেই যে এসেছিলেন, মণীশের কাছ থেকে পালাতে চেয়ে তিনি কি মণীশের হাত ধরেই দৌড়চ্ছিলেন এতদিন? না হলে এতদিনের বিবাহিত জীবনে একদিনও আলো জ্বালতে পারলেন না কেন? নারীর স্বাভাবিক আকর্ষণটুকু দীপ্তকে দেখাতে পারলেন না কেন স্পষ্ট করে? আর শুধু দৃশ্যমানতাই বা ভাবছেন কেন? দীপ্ত প্রথম প্রথম ইনসিস্ট করলেও তিনি কোনওদিন ওই মেয়েটার মতো…..