পৃথা এপিসােড – দেবকুমার বসু

›› সম্পুর্ণ গল্প  ›› ১৮+  

উৎসঃ নষ্টনারী গ্রন্থ

পাঠক-পাঠকদের উদ্দেশে লেখকের বিনীত নিবেদন : ‘পৃথা এপিসােড’ গল্পটি কোনও পরিকল্পিত কাহিনী নয়। সত্য ঘটনা অবলম্বনে এটি বাস্তব-ভিত্তিক গল্প। তবে গল্পের নিজস্ব ঢঙ এবং গতি স্বতঃস্ফূর্তভাবে নানা জায়গায় তার পথ বদল করেছে। এ-গল্পে তীব্র যৌনতার বর্ণনা আছে। কেন- তা জানতে হলে গল্পের শেষ লাইন পর্যন্ত এগিয়ে যেতে হবে। প্রথম লাইন থেকে শেষ লাইন পর্যন্ত পড়লে গল্পের পরিপূর্ণতা পাঠক-পাঠিকার মনে সহানুভূতি ও সমবেদনার সঞ্চার ঘটাবে—এটা আমার বিশ্বাস।

পৃথা, মুখ তােল, আমার দিকে তাকাও।

কোনও জবাব না দিয়ে পৃথা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল। ডান পায়ের বুড়াে আঙুলটা নিঃশব্দে মেঝেয় ঘষে চলেছে ও। শাড়িটা চাদরের মতাে সারা শরীরে জড়ানাে। লম্বাটে মুখে চোখের কোল দুটি বসা। চোখের জলের দরানি শুকিয়ে গিয়েছে গালে। হেমন্ত পৃথার চিবুকে হাত ঠেকিয়ে অনুনয়ের সুরে আবার বলল, ‘পৃথা, প্লীজ মুখ তােল, আমার দিকে তাকাও।

কোনও কথা না বলে পৃথা সরে গেল হেমন্তর কাছ থকে। পুবের শার্সিবন্ধ জানালার সামনে গিয়ে দাঁড়াল ও। বাইরে বৃষ্টির দাপট কমে গিয়েছে। ঝােড়াে হাওয়া বইছে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে মাঝে মাঝে। শার্সির বাইরে বিন্দু বিন্দু জলকণা পরস্পরের সঙ্গে মিশে সর্পিল গতিতে গড়িয়ে নেমে যাচ্ছে নিচে। পুবের আকাশের রঙ ঘঘালাটে। সে তুলনায় পশ্চিমের আকাশ কিছুটা স্বচ্ছ, লালচে আলােকময়। | হেমন্ত লক্ষ্য করল, পৃথার বিষন্ন উদাস দৃষ্টি পুবের আকাশের দিকে হারিয়ে গিয়েছে। একটা ঢ্যাঙা নারকোল গাছের কালাে পুঁড়ি দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজছে বৃষ্টির জলে। মাথায় একটিও পাতা নেই। নিশ্চয়ই কোনও একসময় বাজ পড়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে শুকিয়ে গিয়েছে। শকুন বসে বসে একসময় মাথাটা চ্যাপ্টা করে দিয়েছিল। তারপর সব পাতা ঝরে গিয়ে এখন পুরােপুরি ন্যাড়া। মৃত নারকোল গাছের গুঁড়িটা বৃষ্টির জলে ভিজছে। প্রাণ থাকলে এই মুহূর্তে উপভােগ করত, কাকে বলে বেঁচে থাকার স্বাদ। কাছে দূরে আরও কয়েকটা নারকোল গাছ রয়েছে। কিন্তু মাথা মুড়নাে গাছটাই চোখে বেঁধে আগে।

হঠাৎ কড়কড় করে বাজ পড়ল। এবং সেই মুহূর্তেই সাদা আলাের ঝলকানিতে চোখের | দৃষ্টি অন্ধকার দেখল সবকিছু। কয়েক মুহূর্ত পরে চোখের অন্ধকার কাটতে লাগল। হেমন্ত আবিষ্কার করল, পৃথা মেঝেয় পড়ে আছে। নিঃসন্দেহে কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়েছে। জ্ঞান হারিয়েছে পৃথা। | হেমন্ত পৃথাকে পাঁজাকোলা করে তুলে এনে খাটে শুইয়ে দিল। চোখে-মুখে কিছুটা জলের ঝাপটা দিতেই চোখ মেলে তাকাল পৃথা। হেমন্তকে বলতে হয়নি, আমার দিকে। তাকাও। পৃথা অপলক তাকিয়ে আছে হেমন্তর মুখের দিকে।

গভীর মমতায় হেমন্ত জিজ্ঞেস করল, “আমার কথার জবাব দেবে না, পৃথা ?

পৃথার দু-চোখ টলটলিয়ে উঠল। হেমন্ত হাত রাখল পৃথার মাথায়। পৃথার চোখ ছাপিয়ে জলের ধারা গড়িয়ে গেল গাল বেয়ে।। | হেমন্ত সস্নেহে বলল, কথা বল পৃথা। তােমার এত দুঃখ কীসের ? আমাকে বলবে না?’

পৃথা ধীরে ধীরে উঠে বসল। মুখ ফেরাল পুবের বন্ধ জানালার দিকে। সেদিকেই  তাকিয়ে রইল চুপচাপ।

এখনও সন্ধ্যা ঘনায়নি। কিন্তু পুবের আকাশে আসন্ন সন্ধ্যার ছায়া ঘনাতে শুরু করেছে। নারকোল গাছগুলাে আরও অস্পষ্ট দেখাচ্ছে। মাঝে মাঝে বিদ্যুতের চাবুকে আকাশ ফেটে চৌচির হচ্ছে।

হেমন্তর কানে পৃথার অস্পষ্ট স্বর ফিসফিসিয়ে উঠল, আমার নাম পৃথা কেন!

হেমন্ত ওর দিকেই তাকিয়েছিল। কোনও কথা না বলে চুপচাপ তাকিয়ে রইল ওর দিকে। পৃথা ফিসফিস করে কথা বলছে যেন নিজের সঙ্গে। যেন ঘরে দ্বিতীয় কোনও প্রাণী নেই।—“ওই পােড়া নারকোল গাছটার ওপর যখন বাজ পড়েছিল, সেই মুহূর্তে কিন্তু কেউ বুঝতে পারেনি, গাছটা নিষ্প্রাণ হয়ে গিয়েছে। জলে ভেজা গাছটার নেতিয়ে পড়া সবুজ পাতাগুলাের গা বেয়ে জলের ফোটা পড়ছিল টুপ টুপ করে। বাতাসের ঝােড়াে ঝাপটায় নিপ্রাণ গাছটা দুলছিল আর পাঁচটা জীবিত গাছের মতােই। পতনের বিরুদ্ধে তখনও শিকড়গুলাে মাটি কামড়ে ধরে রেখেছিল। এখনও গাছটা দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ওর সর্বনাশের কথা এখন সকলের জানা। একটু একটু করে দিনে দিনে ওর চেহারা পাল্টে কঙ্কালসার হয়ে গিয়েছে। | হেমন্ত প্রায় চুপি চুপি কথা বলল, পৃথা, তােমার কথা বল। তােমার চাপা দুঃখের কথা বল। তােমার জীবনের ভার রাখ আমার ওপর। আমি যে তােমায় ভালােবাসি পৃথা ! তুমি আমার কথার জবাব দেবে না ? তুমি আমাকে ভালােবাসাে না ? | কথাগুলাে বােধ হয় পৃথার কানে গিয়েছে। ওকে দেখে কিন্তু তা বােঝা যাচ্ছে না। বােঝা গেল ওর কথা শুনে আমার কথাই তাে বলছি। এই মুহূর্তে আমাকে দেখে কেউ বুঝতে পারবে না, আমার সর্বনাশের কথা। ঠিক গাছটার মতাে। ওকে দেখেও আগে কেউ বুঝতে পারেনি।

হেমন্ত পৃথার কাধ দুটো ধরে ঝাকানি দিয়ে বলল, কী সব আজেবাজে কথা বলছ !

এবার পৃথা সরাসরি চোখ রাখল হেমন্তর দিকে। স্পষ্ট করে বলল, আমি কারও ভালােবাসার যােগ্য নই। কারও ভালােবাসায় আমি সাড়া দিতে পারি না। আমি নােংরা পচা-গলা দোক্ত একটা মেয়েমানুষ। কাউকে দেবার মতন কিছুই নেই আমার কাছে। 

বিস্মিত চাপা স্বরে হেমন্ত বলল, ‘পৃথা !’

পৃথার দু’কাধ তখনও হেমন্তর দুহাতে ধরা। ওর দুচোখ আবার টলটলিয়ে উঠল। ভাঙা স্বরে বলল, আমার নাম পৃথা কেন ? কে রেখেছিল আমার নাম ?

হেমন্ত পৃথার মাথায় হাত রেখে সস্নেহে বলল, “কেন, পৃথা নামটা তােমার পছন্দ নয় ? কুন্তীর-

একটা ঝটকা দিয়ে পিছিয়ে গেল পৃথা।  সরােষে বলে উঠল,  হ্যা, ওটা একটা বেশ্যার নাম!

হেমন্ত দু-এক মুহূর্ত থমকে থেকে বলল, সেটা তাে বিতর্কের বিষয়।

পৃথা অকপটে তৎক্ষণাৎ বলল, “কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা নয়। পাঁচটা পুরুসের মনােরঞ্জনের জন্য আমাকে যা করতে হয়—  কথাটা শেষ করতে পারল না পৃথা। ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল।

হেমন্ত গম্ভীর হয়ে বলল, “কোনও নারী বেশ্যা হয়ে জন্মায় না। তার বদলে যাওয়া জীবনধারার পেছনে কোনও না কোনও কারণ থাকে। কুন্তীর জীবন যা ঘটেছিল—’

পৃথা কান্নারুদ্ধ স্বরে বলে উঠল, ‘আমার জীবনে তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।

হেমন্ত বলল, কী ঘটেছিল, আমি শুনতে চাই। তােমায় শপথ করে বলতে পারি তােমার সব কথা শােনার পরেও আমার ভালােবাসা এতটুকু ম্লান হবে না। শরীরি ভালােবাসার বাইরেও মানুষ অনেক কিছু দিতে পারে, অনেক কিছু নিতে পারে। বিশ্বাস আর অনুভূতিকে তাে আর অস্বীকার করা যায় না ! তুমি বল।

কান্না সামলে পৃথা বলল, ‘সেসব কথা আমার পক্ষে মুখে বলা সম্ভব নয়। তাছাড়া কারও ভালােবাসার সঙ্গিনী হয়ে তাকে আমি ঠকাতে পারব না।

হেমন্ত যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলল, তুমি যদি বারবণিতাও হও, তাহলেও আমি তােমাকে বিয়ে করতে প্রস্তুত। তােমার জীবনের কোনও কথাই আমি আর শুনতে চাই না। কোনওদিন শুনতে চাইবও না।’

পৃথা নির্বিকারভাবে বলল, আমি তাে বারবণিতা নই ! আমি তার চেয়েও অধম।

হেমন্ত আহত বিস্ময়ে চেয়ে রইল পৃথার দিকে। একটি নারীর জীবনে বেশ্যাবৃত্তির চেয়েও অধম কী হতে পারে, তার কোনও কুলকিনারা করতে পারছে না ও।

কয়েক মুহূর্ত দুজনেই চুপচাপ। অবশেষে পৃথা বলল, ‘হেমন্ত, তােমার ভালােবাসায় কোনও ছলনা নেই, তােমার ভালােবাসা নিস্পাপ স্নিগ্ধ সরল—এটা আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু তােমার এই ভালােবাসা আমার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। প্রত্যাখ্যান করার সাহস বা যােগ্যতা কোনটাই আমার নেই। কিন্তু গ্রহণ করা সম্ভব নয় কেন, তা আমি তােমাকে লিখে জানাব। আমার জীবনে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের কথা জানতে পারলে তুমি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবে, আমি কত অসহায়, কত দুঃখে তোমার ভালোবাসাকে –

পৃথার স্বর ডুবে গেল।

পুবের আকাশ পুরােপুরি অন্ধকার। মাঝে মাঝে বিনতে চকে অন্ধকারকে চিরে দিচ্ছে  হাওয়া এবং বৃষ্টির দাপট আবার বাড়তে শুরু করেছে। হেনস্ত পথৰু পায়ের কাছে হাঁটু মুড়ে বসে, মুখ তুলে অপলক তাকিয়ে রইল ওর বিধ্বস্ত ভেজা মখের দিকে।

দুদিন পরে পৃথার চিঠি পেল হেমন্ত। পৃথা লিখেছে :

প্রিয়তম হেমন্ত,

তােমাকে প্রিয়তম’ বলেই সম্বােধন করলাম—এছাড়া কোনও উপায় ছিল না। আমার কলঙ্কিত জীবনের বৃত্তান্ত শুরু করার আগে তােমায় বন্দনা করে নিলাম। কেন, তা জানতে পারবে চিঠির শেষ লাইনে। তাই বলে কৌতূহলিত হয়ে এখনই যেন চিঠির শেষ লাইনটা দেখতে যেও না—এটা আমার অনুরােধ।

প্রথমেই একটা কথা বলে রাখি—আমার জীবনের কলুষিত অধ্যায়গুলােকে যে ভাষা, যে-বর্ণনায় আঁকতে যাচ্ছি—জায়গায় জায়গায় তা অতি বীভৎস, কদর্য মনে হতে পারে। আমি একটি মেয়ে হয়েও অত্যন্ত পুত্থানুপুঙ্খভাবে সমস্ত যৌনতার কথা স্বীকার করব। সমস্ত ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমি কীভাবে এক অদ্ভুত যৌনতার শিকার হয়ে পড়েছিলাম, তা বোেঝাতে গেলে রেখে-ঢেকে বলা যাবে না। | কলকাতায় রিপন স্ট্রীটের যে খুপরি ঘরটায় বসে তােমাকে লিখছি, এ ঘরে আমি আছি। বছর তিনেক। তার আগে কলকাতা থেকে মাইল পঁচিশ দূরে উত্তর চব্বিশ পরগণার এক আধা মফস্বল আধা গ্রাম অঞ্চলে থাকতাম আমার বাবা-মায়ের সঙ্গে। বাবা-মা আর আমার এক ছােট ভাই—এই নিয়ে আমাদের চারজনের সংসার। | বাবা কলকাতায় এক সওদাগরি অফিসে চাকরি করে। ট্রেনের নিত্যযাত্রী। মা ঘরসংসার দেখাশােনা করে, ভাই পড়ে ক্লাস সিক্সে। আমি তখন দশ ক্লাস পাশ করে সবে কলেজে ঢুকেছি উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী হিসেবে। বাসে মিনিট কুড়ি লাগে আমার কলেজে পৌঁছতে। কলেজের এলাকাটাকে পুরােপুরি মফস্বল বলা যায়। ছােটখাটো কাফে-রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল, বাজার, দুমাইল দূরে রেলস্টেশন আছে।

কৈশাের থেকে যৌবনের বেদীতে যখন আমি পা রাখি তখনই একটা ব্যাপার লক্ষ্য করে আমি উদ্বিগ্ন হতে থাকি। আমাদের সংসারে স্বাচ্ছল্য ছিল না, কিন্তু তাই বলে খাওয়াপরার অভাব ছিল না। সাধারণ মধ্যবিত্ত সংসারের মতােই আমরা মােটামুটি সুখেই ছিলাম। কিন্তু আমি লক্ষ্য করলাম, আমার বান্ধবীদের তুলনায় আমার চেহারায় কেমন যেন একটা দীনতার ছাপ স্পষ্ট। একটি বয়সে মেয়েদের শরীরে যে-সব পরিবর্তন পুরুষদের চোখ টানে, সেই জায়গা থেকে আমি বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি। সমবয়সী বাজ কাছাকাছি হলে পার্থক্যটা বড় বেশি চোখে পড়ে। অথচ এ-ব্যাপারটা নিয়ে ব্যপারটা নিয়ে লজ্জায় বাবা মাকে কিছু বলতে পারিনি।

কলেজে যখন ঢুকলাম তখন ব্যাপারটা আমাকে আরও ভাবিয়ে তুলল। কলেজটা কো এডুকেশন। ছেলেরা আমার দিকে বিশেষ তাকায় না। বান্ধবীরাও আড়ালে আমাকে , হাসাহাসি করে। আমার বান্ধবীদের তুলনায় আমার বুকের মাপ প্রায় অর্ধেকেরও কম। অথচ তখনই আমার কোন কোন বান্ধবীর বুক প্রায় জোড়া বাতাবি লেবুর মতাে। সে তুলনায় আমার ভাগ্যে জোড়া কমলালেবুও জোটেনি। সত্যি বলতে কি, আর সকলের মতন তখন আমার ব্রেসিয়ার পরারও প্রয়ােজন হয় না। লালিত্যর বদলে আমার চেহারা একটা মরকুটে ভাব যেন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অবাক হতাম, বাবা-মা এ-বিষয়টা নিয়ে একেবারেই গা ঘামাত না। আমি একটু বড় মাপের প্যাড লাগানাে ব্রেসিয়ার কিনে কাপ গুজে বুকের ব্যাপারটা মেক-আপ করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু অস্বাভাবিক লালিত্যহীন চেহারাটা ঢাকি কী দিয়ে ! আমার গায়ের রঙ কালাে। কিন্তু যৌবনের ঢল নামলে কালাে মধ্যেও আলাে ফুটে ওঠে। অদ্ভুত ব্যাপার—যৌবনের ঢল না নামলেও শরীরে কামনাবাসনার চাপা আঁচটা মালুম দিত। ছেলে-বন্ধুদের সঙ্গে বান্ধবীদের একটু ঘনিষ্ঠ মেলামেশা দেখলে ভেতরে ভেতরে ঈর্ষা বােধ করতাম।

আমার নাম পৃথা। মহাভারতের কুন্তীর চরিত্রটা বেশ কয়েকটি বই ঘেঁটে খুঁটিয়ে পড়লাম। কুন্তী কুমারী অবস্থায় সূর্যের সঙ্গে, পরে স্বর্গের দেবতাদের সঙ্গে লাগাতার ক্লান্তিহীন সঙ্গম-সুখে বীর্যস্নানে সিক্ত হয়েছে। কিন্তু আমার কপালে পুরুষ জোটা তাে দূরের কথা, কেউ তাকিয়েও দেখে না। মনে মনে মহাভারতের কুন্তীকে খুব হিংসে করতাম। তখন কি ছাই জানতাম, ভবিষ্যতে আমারও পাঁচ পুরুষ জুটবে ! আমি যে পৃথা! | একদিন কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছি। বাসে বেশ ভিড় ছিল। রীতিমতাে ঠাসাঠাসি গাদাগাদি অবস্থা। কোনওমতে মেয়েদের সীটের লাইন বরাবর জায়গা করে নেবার চেষ্টা করছি, কিন্তু বিশেষ সুবিধে করতে পারছি না। আমার চারপাশে পুরুষদের চাপাচাপি ভিড়। কোনও মতে দাঁড়িয়ে আছি। একটু একটু করে অনুভব করলাম, আমার নিতম্বে শক্ত কিছু ঠেকছে। ক্রমশ চাপটা বাড়তে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই টের পেলাম শক্ত বস্তুটা চাপ তাে। দিচ্ছেই এবং গাড়ির এলােপাথাড়ি গতির সঙ্গে সঙ্গে একটা ঘর্ষণের ব্যাপারও চলছে। আমার সারা শরীর উত্তেজনায় আগুন হয়ে উঠল। কান মাথা ঝাঝা করতে লাগল। পরিষ্কার বুঝতে পারছি, লােহার মত শক্ত একটি পুরুষাঙ্গ আমার পাছায় ভীষণভাবে মাতামাতি শুরু করেছে। আমার এত ভালাে লাগছিল যে, আমি নীরবে সেই হামলা সহ্য করে যাচ্ছিলাম। লােকটাকে আমি দেখতে পাচ্ছি না। তাকে কেমন দেখতে, বয়স কত কিছুই বুঝতে পারছি না। ক্রমশ লােকটার সাহস বাড়তে লাগল। লােকটা আমার পাছা টিপতে শুরু করেছে। চাপের চোটে পুরুষাঙ্গটা মাঝে মাঝে বেঁকে চেপে বসেছে আমার পাছার মাংসে। শিহরিত পুলকে আমার তখন পাগল-পাগল অবস্থা। পরিবেশ পরিস্থিতি ভুলে আস্তে আস্তে ডান হাতটা পেছনদিকে সরিয়ে নিয়ে লােকটার পুরুষাঙ্গটা শশ্ন রুলাম। সঙ্গে সঙ্গে আমার শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল। লােকটাও তখন মরিয়া। ভাবতে পারেনি, এমন কাণ্ড আমি ঘটাব। লােকটা হাত দিয়ে তার পুরুষাঙ্গটা আমার হাতে ধরিয়ে দিল। বাসের ভিড় আরও বেড়েছে। এলােপাথাড়ি গতিতে এক দণ্ডও স্থির থাকতে পারছে না কেউ। সেই সুযােগে লােকটা আমার হাতে ধরা শক্ত পুরুষাঙ্গটাকে সঙ্গমের মুদ্রায় একবার ঠেলছে, একবার সরিয়ে নিচ্ছে। কয়েক সেকেন্ডর মধ্যেই গরম আঠালাে বির্যে আমার হাত ভরে গেল। শাড়িটাও ভেজা ভেজা ঠেকল। আমি পরিষ্কার বুঝতে পারলাম, আমার যোনি সম্পূর্ণ ভেজা। রসালাে কিছু গড়িয়ে নামছে আমার উরু বেয়ে। হাতটা সরিয়ে শাড়িতে মুছে নিলাম। উত্তেজনায় তখন আমি কাপছি।

বাসটা একটু খালি হতে মেয়েদের সীটের লাইনে সরে গেলাম। লােকটাকে দেখার চেষ্টা করলাম। মনে হল, লােকটা অবস্থান পাল্টে নিয়েছে। নামার মিনিট পাঁচেক আগে একটা বসার জায়গা পেয়ে গেলাম। উল্টোদিকের সীটে চোখ পড়তেই একটি লােক আমাকে দেখে হাসল। বুঝতে পারলাম, এই লােকটিই নাটের গুরু। মুখটা ঘুরিয়ে নিলাম। একটু পরে আবার তাকালাম। লােকটা আবার হাসল। আমার মুখটাও বােধ হয় গম্ভীর ছিল না। অজান্তেই বােধ হয় প্রশ্রয়ের হাসি খেলে গিয়েছিল আমার ঠোটের কোণে।

লােকটার বয়স আন্দাজ করলাম, ত্রিশ থেকে চল্লিশের মধ্যে হবে। নিপাট ভালােমানুষের মতন দেখতে। পরনে ধুতি আর হাতা গােটানাে ফুলশার্ট। মাথার চুলগুলাে , এলােমেলাে। গায়ের রঙ কালাে। উচ্চতা একটু কমের দিকে মনে হল। লােকটা ধুতির পাশ দিয়ে ওই বস্তুটি বের করে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল। আমি আর একবার শিহরিত হলাম।

আমার স্টপেজে নামবার জন্য উঠেছি, সঙ্গে সঙ্গে লােকটাও উঠে দাঁড়াল। আমার সঙ্গেই নামল লােকটা। আমি বাড়ির দিকে না গিয়ে নির্জন মাঠের দিয়ে একটা রাস্তা ধরলাম। লােকটা আমাকে অনুসরণ করল।

সময়টা শরৎকাল। বর্ষা পুরােপুরি ছেড়ে যায়নি। ভ্যাপসা গরমটাও লেগে আছে। নির্জন মাঠের পাশ দিয়ে আমি এগিয়ে চললাম একটা ভাঙা মন্দিরের দিকে। পরিত্যক্ত মন্দিরটার দিকে আমি কেন যাচ্ছি তা জানতাম না। অনেকটা নিশির ডাকের মতােই অবচেতনে এগিয়ে চললাম। লােকটা একটু দূরত্ব রেখে আমার পেছনে পেছনে আসছে। মন্দির চত্বরে ঢুকে আমি পেছন ফিরে তাকালাম। আমার চোখে তখন পুরােপুরি প্রশ্রয়ের হাতছানি। লােকটা একটু দ্রুত, প্রায় ছুটতে ছুটতে আমার কাছে এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমার মুখে চোখে গলায় চুমাে খেল। আমার কাঁধে ঝোলানাে ব্যাগটা মাটিতে পড়ে গেল। লােকটা মুহূর্তে আমাকে বিবস্ত্র করল। কিন্তু ব্রেসিয়ার খুলতেই কাপড়ের পুটলি খসে পড়ল মাটিতে। লােকটার সেদিকে খেয়াল নেই। সে তখন নিজের ধুতি-জামা খুলতে বা সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে আমাকে চিৎ করে শুইয়ে তার আখাম্বা যন্ত্রটি ঢােকাবার চেষ্টা করছে আমার যোনিতে। আমি লােকটাকে আঁকড়ে ধরে দু পা ফাক করে যন্ত্রটি ঢােকাবার সুযোগ করে দিচ্ছি। বেশি কসরত করতে হল না। লােকটার অঙ্গটি ভিজেই ছিল। সেটি ভেতরে ঢুকে যেতেই আমার মুখ দিয়ে একটা আর্ত মৃদু শীৎকার বেরিয়ে এল। লােকটা আম মখের মধ্যে জিভ ঢুকিয়ে দিয়ে হামানদিস্তের মতন ওঠানামা করে প্রায় তলপেট পর্যন্ত যন্ত্রটিকে সেঁদিয়ে দিল। মিনিট তিনেকের মধ্যেই গরম বীর্যে ভর্তি হয়ে গেল আমার যােনীর ভেতরটা। উত্তেজনায় আর শীর্ষসুখে লোেকটার নিচের ঠোটে আমার দাঁত বসে গেল। লােকটার সেসব অনুভূতি কাজ করছিল না। সে আমাকে সাপের মতন বেঁধে রাখল  সারা শরীর দিয়ে। কিছুক্ষণ পরে লােকটা শিথিল হল। আমি উঠে শাড়ি-জামা পরতে পরতে লােকটার চোখকে ফাঁকি দিয়ে ন্যাকড়ার পুটলি দুটো আমার ব্যাগে চালান মত দিলাম।

লােকটা ধুতি-জামা পরে পকেট থেকে একটা ডিবে বের করে বিড়ি ধরাল। তখন বেশ আলাে আছে। লােকটা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে জিজ্ঞেস করল, “ভালো লেগেছে ?

আমি নির্দ্বিধায় ঘাড় নেড়ে জবাব দিলাম, হ্যা। লােকটা আমায় জিজ্ঞেস করল, “তােমার নাম কি ? আমি জবাব দিলাম, ‘পৃথা।

লােকটি ইশারায় তার কোল দেখিয়ে সেখানে আমাকে বসতে বলল। আমি তার কোলের ওপর বসতেই আমাকে জড়িয়ে ধরে আদর করল। জিজ্ঞেস করল, আমি কি করি, কোথায় থাকি, বাড়িতে কে কে আছে ইত্যাদি। আমি সব কথার জবাব দিলাম।

লােকটা বলল, আমি কলকাতায় থাকি। আমার বাড়ি আছে। তুমি আমার সঙ্গে যাবে ? আমি বললাম, না। আমার ভয় করবে। লােকটা বলল, আমার নাম বলরাম দাস। তুমি যদি আমার সঙ্গে পালিয়ে যাও, তাহলে আমি তােমাকে বিয়ে করব। আমি বললাম, তা হয় না। আমি তাে আপনাকে চিনিই না। বলরাম বলল, আচ্ছা, ঠিক আছে। আগে তুমি আমাকে চেনাে, তারপর ভেবে-টেবে আমাকে জানিও। আমি বললাম, কি করে আপনাকে চিনব, কি করেই-বা জানাব ? বলরাম বলল, আমি দু-একদিন অন্তর ওই বাসস্টপে তােমার জন্য অপেক্ষা করব। তুমি আমাকে দেখলেই সােজা এখানে চলে আসবে। তারপর আমরা—কি ? বুঝেছ তাে ? আমি ঘাড় কাত করে সায় দিলাম।

বলরাম চলে গেল। আমিও বাড়ি ফিরলাম। সমস্ত ঘটনাটা কে আচ্ছন্ন করে রাখল। আর উত্তেজনার আঁচে আমার সারা শরীর পড়তে লাগল। মনে হল, এক্ষুনি বলরামকে পেলে আবার পা ছড়িয়ে শুয়ে ওকে বুকে তুলে নিই। সারা রাত তুম হল না। বিচানায় এপাশ-ওপাশ আর ছটফট করতে করতে রাত কেটে গেল।

পরের দিন কলেজে রাজহংসীর মতাে গরবিনী মনে হল নিজেকে। বলরাম বয়সে আমার চেয়ে অনেক বড় হলেও সে আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছে। আমাকে সে তৃপ্তি দিয়েছে, নিজেও তৃপ্ত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আমার ভাগ্যে পুরুষ জুটেছে, উদ্বেগ আর দৰ্ভাবনা থেকে অনেকটা মুক্ত আমি। কলেজ থেকে ফিরে বাসস্টপে দু মিনিট দাড়িয়ে। রইলাম। বলরামকে আমার দু-চোখ খুঁজছে। কিন্তু বলরাম আসেনি। বাড়ি ফিরে গেলাম।

এক সপ্তাহ পরে বলরাম এল। সাতদিনেই আমি ওর বিরহে কাতর হয়ে পড়েছি। ভাঙা মন্দির চত্বরে ও আমাকে নগ্ন করে পর পর দুবার তৃপ্ত করল। সেদিন আমার বুকের ব্যাপারটা ওর চোখে পড়ে গেল। কিন্তু তাতে ওর উৎসাহে এতটুকুও ভাটা পড়েনি। ফলে, আমার মনের জোর কিছুটা বেড়ে গেল। ওর প্রতি অনুরাগও বাড়ল। সাতদিন আমাকে বিরহ বেদনায় রাখার জন্য আমি মৃদু অভিযােগ জানালাম। বলরাম কথা দিল, সপ্তাহে অন্তত দুবার আমাদের দেখা হবে।

এইভাবে কেটে গেল ছ মাস। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, আমি গর্ভবতী হইনি। ভেবেছিলাম, তেমন কিছু হলে বলরামের সঙ্গে কলকাতায় পালিয়ে যাব। সন্দেহ হল, বলরামের কোনও গণ্ডগোেল নেই তাে ! সেকথা জিজ্ঞেস করতে ও বলল, আমি নাকি বাঁজা। শুনে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু বলরাম জানাল, তাতে ওর কোনও দুঃখ নেই। আমাকে বিয়ে করে আমাকেও সুখে রাখবে।

ধীরে ধীরে বলরামের প্রতি আমার আস্থা এবং বিশ্বাস স্থায়ী হতে লাগল। একদিন কলেজ কামাই দিয়ে বলরামের সঙ্গে কলকাতায় গেলাম। কলকাতার কিছুই আমি চিনি না। বলরাম যেখানে আমাকে তুলল, সে জায়গাটা বেশ কোলাহলপূর্ণ। টানা বারান্দার কোলে পরপর অনেকগুলাে ঘর। তারই একটা ঘরের তালা খুলে আমাকে একটা বিছানা পাতা চৌকিতে বসিয়ে ও বেরিয়ে গেল খাবার আনতে। গরম গরম রুটি মাংস নিয়ে ফিরে এল দশ মিনিটের মধ্যে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ও আমাকে নিয়ে শুল। পর পর দুবার সঙ্গম করে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল ও। কলকাতা আসার ধকলে আমিও ক্লান্ত ছিলাম। কিন্তু নির্জনতা ছাড়া আমি ঘুমােত পারি না। অগত্যা নগ্ন অবস্থাতেই বলরামের পাশে শুয়ে রইলাম। ঘণ্টাখানেক কেটে যেতে বলরামের ওপর আমার রাগ হল। কেমন নিশ্চিন্তে ও ঘুমােচ্ছে, আর আমি জেগে বসে আছি ! ঠেলে তুলে দিলাম ওকে। কিন্তু ও আবার শুয়ে পড়তেই আমি ওর নেতিয়ে পড়া পুরুষাঙ্গটা চটকাতে শুরু করলাম। সঙ্গে সঙ্গে ও তৃতীয়বার আমার ওপর চড়াও হল। কিন্তু নেতিয়ে পড়া পুরুষাঙ্গটা কিছুতেই শক্ত হচ্ছে না। ফলে ও বিরক্ত হচ্ছিল আর আমিও আশাহত হয়ে ছটফট করছিলাম।

হঠাৎ বলরাম ওর পুরুষাঙ্গটা আমার ঠোটের কাছে এনে মুখে পুরে দেবার চেষ্টা করতে লাগল। আমি যতই মুখ ফিরিয়ে নেবার চেষ্টা করি ও ততই মরিয়া হয়ে আমার মুখে-ঠোটে লিঙ্গটা ঘষতে লাগল। শেষে আমাকে পেড়াপিড়ি করতে লাগল, বলল, একটু চুষে দিলেই নাকি ওটা দাঁড়িয়ে যাবে। আমিও অধৈর্য হয়ে উঠেছিলাম, আমার যােনিমুখ তখন তেতে উঠেছে। তখন বাধ্য হয়ে ওর পুরুষাঙ্গটা মুখে পুরে চুষতে শুরু করলাম। আশ্চর্য । মন্তের মতন কাজ হল। প্রিং-এর ছুরির মতন যন্ত্রটা মুহূর্তে টানটান হয়ে আখাম্বা মর্তি ধারন করল। সঙ্গে সঙ্গে ওটা মুখ থেকে বের করে ও আমার যােনিতে পুরে দিল। দিয়েই দাস গতিতে মেশিনের মতন ওপর-নিচ করে যন্ত্রটাকে আমার যােনির ভেতরে ঘােরানে লাগল। দেখতে দেখতে আমি সুখের শেষ সীমানায় পৌঁছে গেলাম। কিন্তু ওর বীর্যপাতের তুলনায় আমার প্রস্রবণটাই বেশি হল। তখনও জানি না, সেদিনই আমার ভবিষ্যৎ স্থির হয়ে গিয়েছিল। বলরাম যত্ন করে আমাকে পৌঁছে দিয়ে গেল।

দুদিন পরেই আবার আমরা মিলিত হলাম ভাঙা মন্দিরে। কিন্তু সঙ্গমের আগে ও আবার পেড়াপিড়ি শুরু করল, চুষে দেবার জন্য। আমি দেখতে পাচ্ছি ওর পুরুষাঙ্গ সঙ্গমের জন্য প্রস্তুত। তবুও ও স্তম্ভটিকে আমার মুখে পুরে দেবার জন্য প্রায় জোর করতে শুরু করল। একরকম বাধ্য হয়েই আমি ওর বিশাল লিঙ্গটাকে মুখে নিলাম। এত বড় লিঙ্গ, যে আমার মুখে প্রায় ধরে না। প্রায় গলায় গিয়ে ঠেকেছে। তখন ও কিছুটা বের করে নিয়ে শুধু লিঙ্গের মাথাটা চুষতে বলল। আমি ভাবছি, কতক্ষণে ওটা ও আমার যােনিতে ঢােকাবে ! আমি অস্থির হয়ে উঠেছি। ভাবতে ভাবতেই আমার মুখের ভেতরটা গরম। আঠালাে বীর্যে ভর্তি হয়ে গেল। তৎক্ষণাৎ আমি ওটা মুখ থেকে বের করে ওয়াক ওয়াক করে প্রায় বমি করে ফেলি। সেই অবস্থাতেই বলরাম আমাকে জড়িয়ে ধরে মুখে মুখ লাগিয়ে আদর করতে শুরু করল। ক্রমাগত আমাকে বােঝাতে লাগল, বীর্যটা কোনও নােংরা জিনিস নয়, ওটা নাকি ঈশ্বর প্রদত্ত অমৃতবিশেষ, অদৃশ্যশক্তির আধার, প্রাণ। সঞ্চারের বীজ—ইত্যাদি ইত্যাদি। যাই হােক, নিজেকে সামলে নিলাম। কিন্তু ওদিকে আমার যােনির তাে হাহাকার অবস্থা ! ও ঝুলে পড়া লিঙ্গটাকে ধুতিতে মুছে আর একবার আমার মুখের কাছে নিয়ে এলাে। বলল, একটু জিভ ঠেকালেই কাজ হবে, এবার আমার যােনির পালা।

বলরামের লিঙ্গটা আমাকে স্বর্গসুখ দিয়ে আসছে প্রায় ছ মাসের ওপর। ওটার প্রতি আমার দুর্বলতা কিছু কম ছিল না। কোনও দ্বিধা না করে এবার স্বচ্ছন্দে ওটা মুখে নিয়ে চুষতে শুরু করলাম। দশ সেকেন্ডের মধ্যেই ওটা বড় হয়ে আমার গলার কাছে ঠেকল।

সঙ্গে সঙ্গে বলরাম ওটা সঙ্গে বলরাম ওটা চালান করে দিল আমার যােনিতে।

এই ঘটনার পর যতবার আমরা মিলিত হয়েছি, প্রত্যেকবারই প্রথমে বলরামের লিঙ্গ কে মখে নিয়ে চুষতে হয়েছে। প্রত্যেকবারই প্রথম পর্যায়ের বীর্য আমার মুখের ভেতর হয়েছে, দ্বিতীয় পর্যায়ে আমার যােনির খিদে মিটেছে। এইভাবে লিঙ্গ চোষায় আমি পরােপুরি অভ্যস্ত হয়ে গেলাম।

প্রায় বছরখানেক কাটতে চলেছে। বলরাম আমাকে চাপ দিতে শুরু করল, স্থায়ীভাবে কলকাতায় চলে যাবার জন্য। ইতিমধ্যে অবশ্য কয়েকবার আমি ওর সঙ্গে কলকাতায় গেছি। কিন্তু কখনই রাত্রিবাস করিনি। ও আমাকে বিয়ে করে স্থায়ী সংসার পাততে চায়। আমার দিকে তাে দ্বিতীয় কোনও পুরুষ কোনওদিন ফিরেও তাকায়নি, যদিও আমার চেহারায় আগের চেয়ে একটু চটক এসেছে, আমিও তখন অন্য কোনও পুরুষের প্রত্যাশী ছিলাম না। | বিয়ের লােভটা সামলাতে পারলাম না। একটা চিঠিতে মােটামুটি সব জানিয়ে আমার বিছানার বালিশের তলায় রেখে বলরামের সঙ্গে উধাও হয়ে গেলাম। বাড়িতে জানিয়ে। দিয়েছিলাম, যেন আমার খোজ না করে। সেই যে বাড়ি ছেড়েছি, আজও আমি বাডিছাড়া।

বলরাম একটা রাধাকৃষ্ণর মন্দিরে নিয়ে গিয়ে আমার মাথায় সিঁদুর পরিয়ে দিল। আমি এই প্রথম ওকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম। শুরু হল আমাদের বিবাহিত জীবন। জীবন বলতে একটাই ব্যাপার। দিনে-রাতে লাগাতার চোষণ আর সঙ্গম।

সপ্তাহখানেক পরে আমার মনে প্রশ্ন জাগল, বলরাম কী করে ? দুবেলা খাবার আসে বাইরে থেকে। যদিও তিনটে কমন বাথরুম-পায়খানা প্রায় জনা পনের ব্যবহার করে কিন্তু ঘরের তাে একটা ভাড়া আছে। খরচটা চলে কোথা থেকে ? তাছাড়া বলরাম আমাকে তিন সেট শাড়ি-জামা-শায়া-ব্লাউজ ইত্যাদি কিনে দিয়েছে। ঠিক করলাম, জিজ্ঞেস করব।

জিজ্ঞেস করতে ও বলল, সুদের মহাজনী কারবার করে। বাপের ভিটে বেচে নাকি ভালাে টাকা পেয়েছিল, সেই টাকা খাটিয়েই নাকি ওর বেশ চলে যায়।

বলরাম আমাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কলকাতা দেখাল। খুব আদরে সােহাগে রাখল আমায়। একদিন ও আমাকে আব্দার করে একটা অদ্ভুত প্রস্তাব দিল। শুনে আমি থ ! ও বলল, একদিন নাকি চোষার সময় ও ওর লিঙ্গে ব্যথা পেয়েছে, আচমকা আমার দাঁতের খোচা লেগে গিয়েছে। আমি যদি দাঁতগুলাে তুলে ফেলি তাহলে নাকি ওর আনন্দ শতগুণে বেড়ে যাবে। অবশ্য টাকা খরচ করে দু-পাটি দাঁত বাঁধিয়ে দেবারও প্রতিশ্রুতি দিল। আমি পুরাে বেঁকে বসলাম। কিছুতেই রাজি হলাম না শক্তপােক্ত দাঁতগুলাে তুলে ফেলতে। ও বারবার বায়না করতে লাগল। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে এক চুলও নড়লাম না।

কয়েকদিন পরে ও বলল, ওর ওখানে নাকি খুব ব্যথা। চোষণ বা সঙ্গম কোনটাই করা যাবে না। ডাক্তার নাকি বলেছে, আমার দাঁতের জন্যেই ওর লিঙ্গে ইনফেকশন হয়েছে।

আমাদের শারীরিক সম্পর্ক বন্ধ থাকল কিছুদিন। আর ও ক্রমাগত আমাকে বােঝাতে লাগল, আমার নাকি দাঁতগুলাে তুলে ফেলা উচিত। আমি তখন নিয়মিত সঙ্গমে এতটা অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি যে, সঙ্গমবিনে আমার জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। পেটের খিদে সহ্য করা যদিও সম্ভব, যােনির খিদে সহ্য করতে পারছি না। | অবশেষে বাধ্য হয়ে রাজি হলাম দাঁত তােলার জন্যে। দু-একদিন অন্তর অন্তর দাঁত তােলা শুরু হল। ক্ষোভে দুঃখে হতাশায় ভেঙে পড়লাম আমি। কিন্তু কিছুই করার নেই। রাজি যখন একবার হয়েছি তখন শেষ দাঁতটি পর্যন্ত তুলে ফেলতেই হবে। একমাসের মধ্যে সব দাঁত তােলা হয়ে গেল। আমি পুরােপুরি ফোকলা হয়ে গেলাম। কিন্তু অসাধারণ সুন্দর দু-পাটি বাঁধানাে দাঁত উপহার দিল আমায় বলরাম। আমার নিজের দাঁতের চাইতে এর বাহার অনেক অনেক বেশি সুন্দর, আকর্ষণীয়। সত্যি বলতে কি, আমার মুখের শেপটাই অনেকটা বদলে গেল। দাঁতের দুঃখ ভুলতে বেশি সময় লাগল না।

বাঁধানাে দাঁত খুলে আমি বলরামের ওটা মুখে নিতাম। তাতে নাকি ওর আনন্দ অনেক গুণ বেড়ে গেল। আমাদের সঙ্গমক্রিয়া শুরু হল আবার।

একদিন কাকভােরে বলরাম আমাকে ঘুম থেকে তুলে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে চাইল। কোথায় নিয়ে যাবে জিজ্ঞেস করতে ও বলল, তাহলে নাকি পুরাে চমকটাই ভেস্তে যাবে। আমি বারবার জানতে চাইলেও ও ব্যাপারটা ভাঙল না। নিজের বরের সঙ্গে যাব, বেশি ভাবার কী আছে ! তৈরি হয়ে নিলাম চটপট। বলরাম একটা ট্যাক্সিতে তুলে আমাকে নিয়ে রওনা হল। এখন যে ঘরে বসে তােমাকে লিখছি হেমন্ত, সেদিন এই ঘরে এনে তুলেছিল আমায় বলরাম। আমাকে ঘরে বসিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ফিরবে বলে, ও সেই যে চলে গিয়েছে, আর কোনদিন ফেরেনি। মােটা টাকায় ও আমাকে বিক্রি করে দিয়েছে একজন গুণ্ডার হাতে, যে এই মহল্লার ও বেশ্যাপট্টির নামকরা দালাল ও মালিক।

প্রথমে তাে বুঝতে পারিনি, আমি বেশ্যাপট্টিতে এসে পৌঁছেছি। ঘরের দরজায় আওয়াজ হতে বলরাম ভেবে দরজা খুলতে একটি অচেনা লােককে দেখে আমার ভুরু কুঁচকে উঠল। লােকটা কোনরকম ভূমিকা ছাড়াই আমাকে ঠেলে ঘরে ঢুকে পড়ল। আমি বাধা দিতে গেলে আমার গালে ঠাস করে একটা চড় কষাল। হুমকে উঠে বলল, এই মাগী, দাঁত খােল। ” বলরাম আমাকে চমক দিতে চেয়েছিল। আমি সত্যিই চমকে উঠলাম। লােকটা কী করে জানল আমার দাঁতের কথা ? কিন্তু সেসব ভাববার আগেই লােকটা আমার দু-গালে চাপ দিয়ে দাঁতের পাটি দুটো বার করে দিল। তারপরেই তার পরনের লুঙ্গি খুলে অর্ধ উখিত লিঙ্গটি প্রায় জোর করে আমার মুখে পুরে দিল। দাঁত থাকলে আমি নিজেকে বাঁচাতে পারতাম। লােকটার লিঙ্গটা ছিড়ে ফেলতে পারতাম, কিন্তু-

আর বিশেষ কিছু বলার নেই হেমন্ত। দেহ সঙ্গমের জন্য আমাকে বেশ্যা হতে হয়নি। আমাকে হতে হয়েছে চোষক-পুরুষের লিঙ্গ চোষক।  মাঝে মাঝে কোনও কোনও পুরুষ আমার যােনিও ব্যবহার। কিন্তু মূলত আমার কাজ হল ফোকলা মুখে পুরুষাঙ্গ নিয়ে চুষে বীর্যপাত ঘটানাে। বিকৃত যৌনলিপ্সার পিপাসা মেটাতে হয় আমাকে এইভাবে। বলরাম সুকৌশলে প্রেমের অভিনয় করে আমার দাঁতগুলাে তুলিয়েছিল।  কত পুরুষের বীর্য যে আমার মুখের ভেতর স্খলিত হয়েছে, তার কোনও হিসেব নেই। সুপরিকল্পিতভাবে আমাকে এই জীবিকায় ঠেলে দিয়ে মােটা টাকা কামিয়ে উধাও হয়ে গিয়েছে বলরাম। পরে জেনেছি হেমন্ত, পেশাদারি চোষণ-বৃত্তি যারা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে, তাদের দাঁত তুলে ফেলতে হয়। অনেক মেয়েকে দেখতে কুরূপা হয়, ভগ্নস্বাস্থ্য হয়—তারা পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এই জীবিকা গ্রহণ করে। অনেক মধ্যবয়সী নারী সারাজীবন বেশ্যাবৃত্তিতে শরীর খুইয়ে শেষ জীবনে এই চোষণ-বৃত্তিতে নেমে পড়ে। তখন অবশ্য তাদের দাঁত। জলে দিতে মায়া হয় না, বাধাবারও প্রয়ােজন হয় না। শুধুমাত্র দুবেলা দুমুঠো অন্নের জন্য তারা এই কাজে নেমে পড়ে।

কিন্তু বলরামরা একটু ভগ্নস্বাস্থ্য, রূপ-লাবণ্যহীন দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের খুঁজে। বেড়ায়। ছলে বলে কৌশলে প্রেমের অভিনয় করে, বিয়ের লােভ দেখিয়ে তাদের এই পরিণতি ঘটিয়ে ছাড়ে।

তুমি একদিন আমার দাঁতের প্রশংসা করেছিলে, হেমন্ত। আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। তুমি ভীষণ অবাক হয়েছিলে। আশা করি আর অবাক হবে না।

আমাকে কেউ-ই কোনওদিন ভালােবাসেনি। বলরাম নিজের স্বার্থে ভালােবাসার অভিনয় করে আমার সর্বনাশ করেছে। এবার ওই মাথা মুড়নাে নারকোল গাছটার কথা। একবার ভাব। তুমি কি আমার কঙ্কালসার মৃত্যুপথযাত্রীর চেহারাটা দেখতে পাচ্ছ ?

বীভৎস যৌনতার তাড়নায় ঘর-বাড়ি ছেড়ে একদিন বলরামের সঙ্গে পালিয়েছিলাম। পেটের খিদের চেয়ে শরীরের খিদে আমার কাছে অনেক বড় ছিল। তােমাকে না দেখলে জানতে পারতাম না, তার চেয়েও বড় খিদে ভালােবাসা। তুমি আমাকে ভালাে না বাসলে আমার জীবনটা এভাবেই কেটে যেত। তােমার ভালােবাসা গ্রহণ করতে পারিনি। কেন পারিনি ? শত শত পুরুষের বীর্যস্পর্শী এই শরীর তােমার মতন পবিত্র মানুষের মন্দিরে মানায় না। কলুষিত এই শরীর কোথায় রাখি !

হেমন্ত, আমি এই শরীর ছেড়ে যাচ্ছি। আশা করি, নরকে আমার জায়গা হয়ে যাবে। এছাড়া আমার মুক্তি নেই। তােমার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না। তাই শুরুতেই তােমার বন্দনা করে নিয়েছি। বিদায় প্রিয়তম—

পৃথা

Leave a Reply