ডানাওলা মানুষ – বিনোদ ঘোষাল

›› গল্পের অংশ বিশেষ  

শূন্যস্থান

…..রোজি পাত্র সেল্স এক্সিকিউটিভ। মাস ছয়েক আগে চাকরিতে জয়েন করেছে। বিজনই ইন্টারভিউ নিয়েছিল। বয়স ছাব্বিশ (দেখতে আরও বছর দুয়েক কম মনে হয়), ফিগার, চামড়ার কালার, দাঁত, মাড়ি, হাত, বুক পেট, বগল সব কিছু ঠিকঠাক। রাজি হতে বড্ড বেশি সময় নিয়ে নিল মেয়েটা। এর আগেরজনেরা কেউই এত টাইম নেয়নি। বড়জোর মাস দুয়েক। বিছানায় শুধু একটাই প্রবলেম হয় বিজনের। সবক’টা মেয়েকেই মনে হয় এক। আর নিজেকে প্রত্যেকের সঙ্গে অন্য একজন। মানে এক-একটা মেয়ের সঙ্গে এক-একটা বিজন। এর ফলে একই বিজনের ভ্যারাইটি টেস্ট নেওয়ার অহংকারটা ঠিকমতো হয়ে ওঠে না। এর জন্যে একবার সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যাবে ঠিক করেছিল। এখনও হয়ে ওঠেনি। রোজি শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছে। যেভাবে সকলে হয়। কিন্তু বিজনের ফ্ল্যাটে নয়। এ পাড়ায় নাকি ওর কোন রিলেটিভ থাকে। অন্য কোথাও রাজি।……

……বিজন শুধু বলল, ‘লেটস গো। গাড়ির সামনের দরজা খুলে বিজনের পাশে এসে বসল রোজি। পরিচিত হালকা পারফিউমের গন্ধে ভরে গেল কাচতোলা স্যান্টো। নীল শাড়ির ফাঁক দিয়ে ফরসা পেটের পাশে ভাঁজ দেখল বিজন। অল্প ঘাম জমে চিকচিক করছে। ওখানটায় একবার ছুঁয়ে আঙুল ভেজাতে ইচ্ছা করল। কিন্তু করল না, আরও জমুক ইচ্ছেটা।……

……জীবন আর কেরিয়ার যে বিপরীত শব্দ সেদিন বুঝেছিল বিজন। সোনালি পিল ইউজ করতে চাইত না। বিজনকে প্রোটেকশন নিয়ে হত সব সময়। খাটে ম্যাট্রেসের নীচে রাখা থাকত প্যাকেট। এক রাতে ঠিক ওই মুহূর্তটায় ম্যাট্রেসের তলায় হাতড়ে বিজন বুঝল প্যাকেট খালি। প্রোটেকশন নেওয়ার নিপুণ অভিনয় করে সেদিন সোনালিকে ঠকিয়ে দিয়েছিল ও। মাস কয়েক পরেই অ্যাবরশন।……এর পরেও মাঝেমধ্যে বিছানায় দেখা হত শরীরে শরীরে। সোনালি ওই অবস্থাতেও মাথা তুলে দেখে নিত সত্যি সত্যি গার্ড নিচ্ছে কি না ।…..

……বিজনের এক ফুট দূরে বিছানায় এসে জড়সড় হয়ে বসল। এখনও ফোঁপাচ্ছে। কেঁপে কেঁপে উঠছে শুধু শাড়িতে ঢাকা বাঁধনছাড়া দুটো বুক। ‘ডোন্ট ক্রাই।……

…..ছুটোছুটি করছিল, অবাক হয়ে তাকিয়েছিল বিজন রোজির দিকে। বুকের আঁচল মাটিতে লুটোচ্ছে। ফর্সা ফুলোফুলো এতদিনের কাঙ্খিত খোলা বুকদুটোর দিকে কেন কে জানে একটুও তাকাতে ইচ্ছে করছিল না বিজনের।…..

আত্মবিষ

……….হাঁটু পর্যন্ত কাটা লতপত করা জিনসের প্যান্ট আর বগলকাটা জ্যালজ্যালে শার্ট পড়ে ব্রজর সামনে এসে বলেছিল, ‘হাই। আমি সিঙ্কি।”
ব্রজ উত্তর দিতে পারেনি। সাদা মশারির মতো জামার ভেতর দিয়ে ঝকঝকে কালো ব্রেসিয়ার, গভীর নাভি, ঠেলে আসা বুক। ছেলের বান্ধবীকে দেখে শরীরের নীচে একটা মোচড় খেয়েছিল ব্রজ। ……..

…….‘হে, হে, ব্যাটাছেলে রক্ষিতা।’
‘মানে!’ ভুরু কুঁচকে উঠেছিল ব্রজর।
‘মেয়েটাকে তো জানেনই, কোটিপতি বাপের স্পয়েন্ট প্রোডাকশন । আর ছেলেটা সাদিসুদা, হিন্দমোটরে বাড়ি। ও ব্যাটাকে এই হারামজাদি নিজের শখ মেটনোর জন্য ফুসলে তুলে এনে আলাদা ফ্ল্যাটে রেখেছে। যখন যা চায় তাই দেয় আর ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে, সেই আগেকার দিনের বাবুদের মতো। শালা ছেলে হয়ে…লজ্জাও করে না…ছ্যাঃ।’……….

মানুষীর কথা

……সন্ধ্যা আবার দৌড়ে এল ওদের কাছে। হাঁফাতে হাঁফাতে বালির ওপর ঝপাস করে বসে পড়ল। ভিজে শাড়ি ওর গোটা শরীরে লেপটে রয়েছে। আঁচল সরে যাওয়া ভারী বুক ওঠানামা করছে।
একটু দূরে বসে থাকা কয়েকটা মেয়েকে সন্ধ্যার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকতে দেখে মণি বলল, ‘লজ্জাশরমের মাথা খেয়েছিস না কি। ঠিক করে জড়া আঁচলটাকে।’
সন্ধ্যা আঁচলটাকে টেনে ভালো করে গাছকোমর করল।………