কামনা বাসনালয় – আইয়ুব আল আমিন

›› গল্পের অংশ বিশেষ  ›› বই এর অংশ / সংক্ষেপিত  ›› সম্পুর্ণ গল্প  

জন্মদাগ

সকালে আকাশটা পরিষ্কারই ছিল। একটু পরেই হঠাৎ চারদিক মেঘে অন্ধকার হয়ে এলাে। মনে হলাে এখনাে সূর্যই ওঠেনি। দমকা বাতাসে মেম্বার বাড়ির পেছনের বাঁশগাছগুলাে একদম হেলে উঠান দুই দুই হয়ে। আবার খাড়া হয়ে যাচ্ছে। টিনের চালের উপর জমে থাকা শুকনাে পাতাগুলাে বাতাসের তােড়ে দীর্ঘ উঠোনের উপর পড়ে একবার এদিক আর একবার ওদিক যাচ্ছে পানির ঢেউয়ের মতাে। কয়েকটা বক কোথা থেকে উড়ে এসে বাঁশঝাড়ে বসবে কিন্তু পারছে না। বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
কাজের বেটি নজুর মা উঠানের শুকনাে খড়িগুলাে তাড়াহুড়া করে বারান্দায় তুলছে। বারান্দায় আবার কাল রাত থেকে মইরম পাগলিকে পিঠমােড়া করে বেঁধে রাখা হয়েছে। মােটা দড়ি শক্ত হয়ে তার দুইহাতের চামড়া কেটে ঢুকেই গেছে প্রায়। এর মধ্যেই ঝমঝম করে বৃষ্টি শুরু হলাে। বাড়ির নেড়ী কুত্তাটা বৃষ্টির মধ্যে দৌড়ে এসে তার একদম শরীরের উপর গা ঝাড়া দিল। পাগলি দুইবার ছেই! ছেই! বলল কিন্তু কুকুরটা তার কথায় মােটেই কর্ণপাত না করে আরও একবার গা ঝাড়া দিয়ে ওখানেই শুয়ে পড়ল। পাগলির আড়াই বছরের মেয়েটা টিনের চাল গড়িয়ে পড়া পানি হাত দিয়ে ছিটাচ্ছে আর খিলখিল করে হাসছে। নজুর মা এর মধ্যেই ভিজে জবজবে। সে দৌড়ে বারান্দায় এসে দেখে পাগলির বুক একপাশেরটা সম্পূর্ণ খােলা। মেয়েটা হয়ত একটু আগেই দুধটা বের করে খেয়েছে। পাগলির হাত বাধা থাকার জন্য আর ঢাকতে পারে নাই।
নজুর মা চোখ বড় বড় করে নিচু স্বরে বলতে লাগল;
মাগীর শরীরে একফোটা মাংস নাই তার বুক কত বড় বড় দেখছাে! পেট তাে আলগা বান্ধে নাই। বেটাছেলেগােই বা দোষ দিয়া লাভ কি! তাগাে কাছে কামের সুমায় পাগলিও যা ঘরের বউও তাই। এই বয়সে এমন গতর নিয়া রাইত বিরাইত রাস্তাঘাটে ঘুরলে কয়জনরে কয়দিন আটকান যাইবাে!
নজুর মা মইরমের বুকটা ঢেকে দিতে দিতে বলল পেট কার লগে বান্দাইচস খানকি বেটি ঠিকঠাক কইবি। নাইলে আইজ বিচারে কিন্তুক তরে মাটিত পুইতা ইটা মাইরা জান বাইর কইরা ফালাইবাে।
মইরম তবু ভাবলেশহীন! এসব কথা সে শুনলাে বলে মনে হলাে না।
তার খয়েরী চোখের মণিতে বৃষ্টির ছায়া আছড়ে আছড়ে পড়ছে। চোখের কোনা থেকে চিবুক পর্যন্ত জল গড়িয়ে পড়ার চিহ্ন দেখে বােঝা যাচ্ছে রাতের কোনাে প্রহরে সে হয়ত কেঁদেছে। ঘাড় অব্দি মাথার বাদামী চুলগুলাে বাতাস লেগে লেগে উড়ছে পাটের আঁশের মতাে। | খাড়া নাকটার বামপাশে ফুটো করা আছে ঠিকই কিন্তু কোনাে নাকছাবি নেই। হয়ত ছিল কোনােদিন। পেটে বাচ্চা বড় হতে থাকলে মেয়েদের ঠোটও আস্তে আস্তে ফুলে ওঠে। কিন্তু মইরমের বেলায় তেমন কোনাে পরিবর্তন হয়নি। তার পাতলা ঠোট দুটো আরও পাতলা শুকনাে মড়মড়া হয়ে আছে। ফর্সা মুখের চামড়ায় লালচে রঙের অসংখ্য তিলের মতাে দাগ। সে যে পাগলি এই তিলগুলােই মনে হয় তা আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে। একদম কাছে থেকে দেখলে কেমন অদ্ভুত দেখায় তাকে।
বেলা এগারােটা নাগাদ বাড়ির বাইরে অনেক মানুষ জড়াে হলাে। পাগলিকে নিয়ে এবার বাঁধা হলাে যেখানে সেখানে একটা কিশােরী আম্রপালি গাছে। গাছটাতে মুকুল এসেছে হাড় ফেটে। এ যেন আর একটা মইরম। পার্থক্য শুধু গর্ভধারণের জন্য এ রকম কৈফিয়ত কাউকে দিতে হয়না তার।
মৌলানা সাব, সুরুজ, আজগর, সামাদ, আজিমদি, গেল জলে, বাফুর বাপ সবাই এসেছে। শুধু মেম্বার সাব এখনাে আসেনি। তিনি বাড়িতেই আছেন। আসলেই বিচার আরম্ভ হবে।
মৌলানা সাব বললেন কেরামত তার বাঁধনটা এবার খুলে দাও এই মানুষের মধ্যে সে দৌড়ে পালাতে পারবে না। আর আহত মেয়েছেলেদের এভাবে বেঁধে বিচারের কথা কোথাও উল্লেখ করেন সে কত গহিত কমই করে থাকুক না কেন।

এর মধ্যেই মেম্বার সালিশে উপস্থিত হলেন । মেম্বার জল এক আশেপাশে দশ গ্রামে তার নামডাক। বিচার আচারে তার কোন ই নেই যেমন তার প্রতাপ তেমনই রাগী।
এসেই হুঙ্কার দিয়ে বললেন, এই বাজারের নটীটারে বাঁশডলা দিবা তুমরা সেইখানেও আমারে লাগবাে!
এখনাে এরে বসিয়ে রাখছেন কোন আকেলে, মৌলানা সাহেব এর জ্যান্ত মাটির নিচে চাপা দেয়ার কোনাে ফতােয়া কি কিতাবে নাই? থাকলে বলেন। আর দেরি করনের কাম নাই। মৌলানা সাব আমতা আমতা করে বললেন – মেম্বার সাব, তাকে জিজ্ঞেস করা দরকার ঘটনাটা ঘটেছে কার দ্বারা? তার নাম বলতে পারলে বিচার এক না পারলে ভিন্ন। একেমন বেআক্কেলে কথা মৌলানা! এই পাগলি যদি এখন আপনার নাম বলে সে তাহলে আমরা আপনার বিচার করব? সে তাে পাগলি তার বলা নাম ধাম স্বীকার অস্বীকারে কিছুই যায় আসে না। তার পরও আপনারা দশজন আছেন করেন, জিজ্ঞেস করেন। মৌলানা সাব বললেন মইরম, যা জিজ্ঞেস করব ঠিক ঠিক উত্তর দিবা। বলাে তুমি কার সাথে শুইছিলা যে তােমায় এতে সন্তান আসল? পাগলির বাদামী চোখ একবারের জন্য চিকচিক করে উঠলাে। কারাে দিকেই তাকাল না। আনমনে একবার হয়ত তাকাল নিজের দিকে অথবা নিজের অনাগতের দিকে বােঝা গেল না। তারপর অনামিকা তুলে নির্দেশ করল আসমানের দিকে। সাথে সাথেই মেম্বারের চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করল। এসময় তার চোখের নিচের কালাে জন্মদাগটা সেই রক্তবর্ণময়তাকে আরও ভয়ঙ্কর করে তােলে। কতবড় সাহস বেশ্যার! তুই আসমানের দিকে আঙ্গুল উঠাস! তিনি রাগ সামলাতে পারলেন না। ওঠে গিয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে এক লাথি বসিয়ে দিলেন। সেটা গিয়ে পড়ল পাগলির বামপাশে কোমরের একটু উপরে। মাগাে বলে চিৎকার দিয়ে পাগলি লুটিয়ে পড়ল। অন্তঃসত্ত্বা শীর্ণ দেহ কয়েকবার গড়াগড়ি খেলাে সিক্ত মাটিতে। ছােট মেয়েটাও মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল কোনাে কিছু না বুঝেই। কেউ খেয়াল করল না সেসব। পাগলির নিমাঙ্গ রক্তাক্ত হয়ে ভেসে যেতে লাগল সমস্ত উঠোন। তারও অনেক পর সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে পাগলি প্রসব করল সাত মাসের এক ফুটফুটে ছেলে শিশু। যার চোখের নিচেও অবিকল মেম্বার জালালউদ্দিনের দাগের মতাে একটা দাগ।

আত্মমৈথুন

লাশবাহী বাহনে পাশে বসে থাকা স্বজন যেমন অপেক্ষা করে গন্তব্যের
ঠিক সেইরকম অপেক্ষা হয়ত আমার হয় না তােমার জন্য,
তবু পাজর থেকে বিন্দু বিন্দু মুহুর্তগুলাে খসে পড়ার শব্দ শুনতে পাই সাইরেনের বিকট আর্তনাদের মতােই।
পৃথিবীর সকল স্তন্যপায়ী প্রেমিক গােপনে সমুদ্রমন্থনে যায় অথচ আমাদের এই দুই জোড়া চোখ ছাড়া আর কোনাে সমুদ্র বা জলাশয় নেই।
আত্মমৈথুনে আমরা দেহকে অতিক্রম করে অশরীরি হয়ে উঠি গৃহত্যাগীদের মতাে,
শূন্যে সঙ্গম হয় আমাদের বাতাসে ভেসে বেড়ানাে প্রেমিকার ভেজা আত্মার সাথে।
সঙ্গমান্তে আমরা বােধিপ্রাপ্ত হই কিন্তু আমাদের বক্ষ অপূর্ণ থাকে পরিতৃপ্ততার।
তােমার শূন্য জঠরে বড় হয় আমাদের ভালােবাসার কচি ণ, তুমি অস্বীকার করাে সেটাও।।
শেষে দেশান্তরী হয়ে বুঝতে পারি পৃথিবীর সকল সুন্দর ভালােবাসাগুলাে থাকে ভালাে না বাসাতেই।

অমরত্বের ইতিহাস

এক একটা সঙ্গমের দৈর্ঘ্য
মথুরা থেকে জেরুজালেম পর্যন্ত। প্রাচীন সেইসব নগরীর আনাচে কানাচে যৌনতার ফসিলগুলাে তার কটিদেশ, নাভি আর স্তন বিবর্তনের মতােই শেওলাপরা,
নােনাধরা টেরাকোটার ধ্রুপদি ফাটলের মতাে গভীর তার জনন অঙ্গের প্রত্নতাত্ত্বিক রেখা।
নগরীর সবচেয়ে গােপন আর স্যাতসেঁতে জায়গাগুলােতেও দগদগে চুম্বনের। দাগ,
চরম কোন মুহূর্তে যুবতীর কোমর থেকে ছিড়ে ফেলা ফিতা,
চোখের কাজলে লেপ্টে থাকা চিবুকএই সবকিছুই ভালােবাসা,
আমাদের অমরত্বের ইতিহাস।

জ্বর

তখন জনকণ্ঠে পত্রিকায় সবেমাত্র ঢুকেছি। থাকি ধানমন্ডিতে। ওখান থেকে বাসে করে শাহবাগ আসি। শাহবাগ থেকে বাংলামােটর হয়ে জনকণ্ঠ অফিস। আমার অফিস টাইম তিনটা থেকে শুরু। সেজন্য দুপুরে বাসা থেকে বের হই। সেদিন প্রচণ্ড রােদ। ফাল্গুন মাস। রাস্তায় প্রচণ্ড জ্যাম। জ্যামের কারণে আজিজ সুপার মার্কেটের সামনেই নেমে গেছি। তপ্ত পিচঢালা পথ। গনগনে সূর্য তাপ দিচ্ছে। একদম খাড়াভাবে। মাথা ভনভন করছে। মেজাজও বিগড়ে আছে জ্যামের কারণে। ভাবলাম একটা লাল গােল্ডলিফ ধরাই। বিষে বিষ ক্ষয় করি। তাে হাঁটতে হাঁটতে পিজি মেডিকেল মার্কেট ক্রস করে পূবালী ব্যাংকের সামনে না যেতেই দেখি একটা জটলা। খেয়াল করলাম না। আর একটু কাছে যখন গিয়েছি তখন বুঝলাম ঝগড়া হচ্ছে। এ আর কি! ঢাকার রাস্তায় এমন হামেশাই চোখে পড়ে। তারপর আমি যখন ওই জটলার আরও খানিক কাছে চলে গেছি তখন দেখলাম এক মধ্য বয়সী মহিলা আর তার ২০/২১ বছরের এক কন্যা ঝগড়া করছে আর একজন মধ্যবয়সী লােকের সাথে। লােকটার পরনে লুঙ্গি। মাথার চুল তেল দিয়ে সুন্দর করে আচড়ানাে। মহিলা শাড়ি আর মেয়েটা সালােয়ার কামিজ পরা। এদের দুজনকে দেখে মােটামুটি ভালাে ঘরেরই মনে হলাে। তাে আমি যখন ওদের একদম কাছাকাছি চলে গেছি তখন তাদের ঝগড়াটা চরম পর্যায়ে। এমন সময় ওই লােকটি মেয়েটিকে বলে ফেলল – তােকে চুদবাে।
এবং সাথে সাথে, একদম সাথে সাথেই মেয়েটি টান দিয়ে তার পরনের সালােয়ারটা খুলে ফেলে বলল- চুদ, একখন, এইখানে চুদবি।
লােকজন সবাই হতভম্ব।……..

আঙ্গুলের অবতার

সরু গলিটার সবগুলাে মােড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেগুলাের মুখস্থ তার বুক ও নিতম্বের মাপ, এটা কমলা জানে। প্রতিদিনের মতাে গলির মােড়গুলাে পার হতে হতে সে ভাবে আজ টিউশনির টাকাটা দিলে তবু কিছু ঝামেলা মেটানাে যাবে। একজোড়া স্যান্ডেল আগে কিনতে হবে। এখন যে জোড়া পায়ে তার গায়ে এতবার সেলাই পড়েছে মুচির কাছে নিয়ে যাওয়াই এখন লজ্জা। ফাইনাল পরীক্ষার আগেরদিন কবির কিনে দিয়েছিল স্যান্ডেল জোড়া। তখনাে তার মনে হয়নি জুতা ছিড়ে গেলে সেলাই করা যায় কিন্তু সম্পর্ক যায় না। মায়া হয়, না। কবিরের জন্য, সেন্ডেল জোড়ার জন্য। বদলাতে ইচ্ছা করে না। কেমন আপন আপন লাগে। আর একটা ব্রা কিনতে হবে। পুরনাে দুটোই ঢিলে হয়ে গেছে খুব। পড়ানাের সময় ছেলেটা ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে। বিশ্রী লাগে।……

কামরূপী

যুবতির উলঙ্গ শরীর বেয়ে জলের মতাে ভালােবাসা নামতে দেখেছিল বালক সরিষা ফুলের মতাে এক সকালে। বালক সেদিনই মুখস্থ করেছিল ভেজা নাভীর নামতা। বাসি ফুলের মতাে নেতিয়ে পড়া স্তন, ফোলানাে কোমর…তারপর থেকে সেই রমণীর সিক্ত চুলের পানি বালকের গা চুইয়ে চুইয়ে নামত সারাক্ষণ।
মল্লিকার ছবি ছাপা হওয়া একটা পাতা ভাঁজ করে রাখত পকেটে। তারপর রাতে কামদেব বালকের সঙ্গম সঙ্গী হতাে পৃথিবীর সব কামরূপীরা।
ফুটফুটে ভাের না হতেই বালক সাইকেলের ক্যারিয়ারে আজকের সব পত্রিকা নিয়ে সাঁ সাঁ করে ছুটত আবার।
২৭/৩ এম সি দাস লেন সেই রমণীর ঘর। আজ কি ঘরে আছে রমণী!!
কল্পনা করতে পারে না বালক। ঠান্ডা বাতাস দুই চিবুক ছুঁয়ে যায়। গা শির শির করে ওঠে…

কামড়

ঝুলে পড়া স্তন আর উন্নত বক্ষ, যদি কোন কবিতার মধ্যে থাকে সেখানে নাকি একটা প্রেম আর একটা পরকীয়া । গঞ্জের হাটে একবার এক ওষুধ বিক্রেতা বলেছিল কলসি যত ছােটই হােক, না ভাঙ্গা অবধি তার জল কোনদিন ফুরায় না। সেদিন বুঝিনি সেই কথার মানে। তারপর… তৃপ্ত অথবা অতৃপ্ত কামনগরে নৌকার সারি ভেসে যায়, যেতেই থাকে.. নৌকার রঙিন বাদাম যখন বাতাসে ফুলে ওঠে, ওটা নাকি প্রেমিকার সুগন্ধী কাচুলি। কামরাঙ্গা গাছে ঝুলে থাকা মৌমাছির চাকের একেবারে গভীরে নাকি লেখা থাকে; পরকীয়া। খুব সতর্ক না হলে ধ্বজভঙ্গ মাছি হুল ফোটায়। ছােটবেলা সম্পর্কে এক বড় বােন অন্ধকারে খামচি দিয়ে ধরে বলেছিল; কামড় দে’ কামড় দেয়া হয়নি। চিৎকার শুনে মা দৌড়ে এসেছিল। সেই মেয়েটা আর কোনদিন এ বাড়িতে আসেনি। তার বর নাকি চর্ম ও যৌন রােগের ডাক্তার। কিন্তু অসুখ তাে ছাড়েনা কারােরই, গভীর রাতে খালি ছনতাই ওঠে। নিশ্বাস নেয়া যায় না।

ভাজ আর ঘাম

হঠাৎ স্বাভাবিক কথাগুলাে প্রলাপ হয়ে যায়, বিম্বিসার শ্রাবস্তি সিংহল সমুদ্র সব পুড়ে যায় নােংড়া একটা আগুনে স্বর্গ থেকে মৈথুন ছটা এসে ঘন করে দেয় যুবতির প্রশ্বাস শরীরের সবগুলাে ভাঁজ ভিজে যায় অশ্লীল ঘামে আর মাঝরাতে বিপরীত জন লাভ করে কয়েক লক্ষগুণ অশ্বশক্তি; কিন্তু অনুশাসন দূরত্ব আর সময়ের প্রতিবন্ধকতায় পরিহাস হয়ে ঝুলে যায় সমস্ত কিছু, মুখ গােমড়া করে পড়ে থাকে শুধু অপেক্ষা- নিরন্তর।

কামরাঙা ফুলের চাদর

আচমকা একটা দমকা বাতাস পেঁচিয়ে ধরে যুবতীর তপ্ত শরীর, এদিকে অনাগত শিশুর নগ্ন ওষ্ঠধর লেপ্টে থাকে চাকাধরা স্তনবৃন্তে। বিহ্বল হয়ে পড়ে যুবতি। পাগলের মতাে জড়িয়ে ধরে দু’জনকেই। আরও আঠালাে হয় সঙ্গম। মুহূর্তগুলাে বদলে যায় আরও উচ্চলয়ের নিশ্বাসে। প্রচণ্ড ঝাকুনিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় বৃক্ষের সব শাখা প্রশাখা… সকালে কামরাঙা ফুলগুলাে শুধু লেপ্টে পড়ে থাকে গাছ তলায়। তারপর সব আবার আগের মতাে।

গলুই

বাতাসে ফুলে ওঠা নৌকার রঙিন বাদাম দেখে হঠাৎ মনে হয় যুবতীর কাচুলি পরা একটা বক্ষ। নৌকার গলুই দেখেও শরীর মােচড় দিয়ে ওঠে। আশপাশের কেউ কিছু বুঝে ফেলল কিনা, ভয় লাগে। এভাবে আস্তে আস্তে অশ্লীল হয়ে পড়ে কাব্য-কবিতা ঘর-সংসার হিসাব-নিকাশ। পবন দাস বাউলের গান শুনেও জামা জোড়া সায়া শাড়ি সব ভিজে যায়। আশ্চর্য!!!

কুসুম ও কাদা

তুমুল ঝড়ে মুচড়ে যাওয়া কামিনী গাছের মতাে প্রেমিকার কাঁচা শরীর। প্রেমিকের কুসুম ও কাদায় স্তনের হ্যালুসিনেশন, আগুনের সাথে বারুদের সঙ্গম। তারপরের ইতিহাস শুধু প্রজন্ম ও জন্ম-জন্মান্তরের, অপেক্ষা আর অপেক্ষা…

ব্রা

নাভিটা শরীরে তার আগুনের ফুলের মতাে। এর ঠিক কয়েক কাঠি নিচেই বাঁধা একটা ধূসর রাঙ্গা ফিতা। রাত দিন আমি খুন হয়ে যাচ্ছি সেই ফিতায় পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে। খুন হয়ে আমি আবার স্বপ্নও দেখি নিউমার্কেটে সারি সারি স্তনের দোকান, হাত দিয়ে ধরতেই দোকানি হেসে বলে তুমি যা ভেবেছ এটা তা নয়, জান না, এগুলাে মেয়েদের স্কিন কালার ব্রা! তখনি ধক্ আমার তােমার কথা মনে হয়…

Leave a Reply