এয়ার হোস্টেস – সমারসেট মম

›› অনুবাদ  ›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……..সম্পূর্ণ অন্য চোখে দেখেন বলে মন বড় দমে যায়। বলতে লজ্জা লাগলেও স্বীকার করছি, পরিচয়ের গােড়ার দিকে ওঁকে ঘায়েল করতে বেশ কয়েকটা মেয়েলি চাল চেলেছিলাম। আশা ছিল, অন্ততঃ কিছু প্রতিক্রিয়া হবে। খাটো স্কার্টের সঙ্গে কালো রঙের খাটো প্যান্টিজ, ওতে ভাল কাজ হয় বটে, কিন্তু যা সার্বজনিক আকর্ষণের কৌশল তা দিয়ে একান্ত কাছের পুরুষটিকে আকৃষ্ট করতে হবে ভাবিনি। অবশ্য পারিনি। কিন্তু আমার লালচে চুলের বিশেষ পরিচর্যা করতাম। নীলচে চোখের পাতাগুলো সুর্মা-কাজল দিয়ে আরাে দীঘল আর গাঢ় করতাম। আমার এমনিতেই বড় আর সুঠাম বুকদুটোকে উচু করে বক্ষ বন্ধনীতে বেঁধে লােকাট রাউজে আধা-লুকিয়ে রাখতাম। এক পায়ের ওপর অপর পা রেখে বসে কখনাে কখনাে দীর্ঘশ্বাস ফেলতাম। তবু কিছু হত না।……

….ট্রান্স-ওয়ার্ল্ড এর লাল নয়ত এয়ার-ইণ্ডিয়া অথবা পাকিস্তান-ইন্টারন্যাশনাল-এর শাড়ী। শাড়ী পরতে আমার খুব ভাল লাগে। শাড়ীর যা অত্যন্ত সুন্দর তা হল শাড়ী যেমন কেজো তেমনি যৌন-আকর্ষণ বর্ধক। অন্য যৌন আকর্ষণ বর্ধক পােষাকগুলাে পরতে যেমন অস্বস্তিকর, সময় বিশেষে দারুণ লজ্জাদায়কও। তা বলে ভাববেন না আমি আদৌ যৌনকামনা বিরােধী; বরং উপযুক্ত স্থান, কাল এবং পাত্রের যোগান থাকলে সর্বতােভাবে ঐটিই চাই। আমি নিয়মিত পিল খাই এবং সত্যি কথা বলার অনুমতি পেলে বলি পূর্বোক্ত বস্তু তিনটির যোগান থাকলে আপনাদের বেলাও সাড়া দিতে পিছপা হয় না। তবু জানিয়ে রাখি আমি এক সঙ্গে লালিতা যুবতী, মা বাপের গর্বের ধন ; আরো, শতকরা নব্বুইটি মেয়ের থেকে অনেক বেশী দিন কুমারী ছিলাম। তবু একটা সময় আসে•••••অনিবার্যভাবে এসে পড়ে। সে সময় আসতে, আগামীকালের ভাবনা শিকেয় তুলে রেখে আমিও আনন্দ উপভােগ করতে, মজা লুটতে (আপনারা তার যে নামই দিন না কেন) শিখলাম। কারণ আমি যে ধরণের কাজ করি তাতে আগামীকাল যে আসবেই এমন নিশ্চিত হওয়া চলে না—হ্যা, শুধু আমার এয়ার হােস্টেসের চাকরির কথা ভেবেই একথা বলছি না।……

…..ডনের ধারণা আমি বাস্তবে এক মেঘ-কালো চুলওলা এ্যাংলো ইণ্ডিয়ান মেয়ে যার কৃষ্ণাভ তনু কামনার শ্রেষ্ঠ ডালি, পরচুলের কৃপায় প্রথম আশা মেটাতে পারা গেলেও, রােদে পােড়া রঙের ওপর বুক আর পাছায় বিকিনি আড়াল পড়া সাদা চামড় লুজাব কি করে ?….

…..কিন্তু, অবশেষে বিবেক হেরে গেল। ডন ধীরে সুস্থে শাড়ীর পরত খুলতে লাগল। আমি বাধা দিলাম না। শাড়ী খুলে মেঝেয় পড়ল । ও বাতি জ্বলেনি। আধাে-আঁধার কামরায় ও কিছু লক্ষ্য করল কিনা বুঝতে পারলাম না। করলেও, আমার তােয়াক্কা ছিল না। ও এত সভ্যভাবে ব্রায়ের হুক খুলল যে বুকের ওপর ওর হাতের চাপ পড়ার আগে তা জানতেই পারিনি। স্তনবৃন্ত দুটো শক্ত হয়ে গেল। বেশ গরম আবহাওয়া সত্ত্বেও গায়ে কাঁটা দিল। ও আরাে কাছে টেনে নিল। আমরা আবার চুমু খেলাম। প্রথম হ্রস্ব চুমু। তারপর আরো আরো উত্তেজনা সহ কারে, অনেক বেশী সময় নিয়ে। ও আমাকে খাটের দিকে নিয়ে চলল আমি মনে মনে বলছিলাম, “মিঃ ব্রাউন, আপনি চাইলে এক্ষুণি পদত্যাগ পত্র সই করতে রাজী আছি।”

জানতাম ওর আচরণ হবে ধীর এবং সভ্য, কিন্তু তার সঙ্গে কঠোর বটে। ওর আবেগভরা হাত দুটো বুক, পেট, তলপেট, উরু চুম্বন করে করে বিকশিত করে চলল। ভাবছিলাম এ ধরণের নিছক পাগলামিকে প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক নয়। আমার যদি আগামীকাল ওরই বিরুদ্ধে… কিন্তু আগামীকাল যে অসম্ভব রকম দূরে। অবচেতন মনে লুকানো সব আপত্তি ওর পীড়ন করতে থাকা হাত আর মুখের চাপে মুছে গেল। শেষে নিছক সহজাত প্রবৃত্তির হাতে নিজেকে ছেড়ে দিলাম । যুক্তি অনেক আগেই অনার সঙ্গত্যাগ করেছিল। আর ডন অবিরাম পীড়নপেষণে এমন আমার দেহে তরঙ্গ তুলে চলেছিল শেষে কাতর আবেদন না করে পারলাম না-“ডন, প্লিজ প্লিজ,

আমার ওপর ওর পুরাে দেহের ভার পড়ল। তারপর থেকে সব চেনা দেহের একটি মাত্র বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত হল যেখানে ওর দেহ আমার অভ্যন্তরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ওর দেহের উত্থান-পতন আরে, আরাে তীব্র, সজোর এবং স্বল্প যতি হয়ে সেই অসম্ভব চরম অনুভূতি ত্বরান্বিত করল, যা উভয়ের একান্ত কাম্য হয়েও কখনো কখনো মেলে না। আমি চাইছিলাম চরম অনুভূতির দিকে ধাবমান আমাদের দেহের উত্থান-পতনময় তরঙ্গক্ষেপ যেন কখনাে শেষ না হয়। তবু নিজেদের অজ্ঞাতে দু’জনের দেহের অন্ধিসন্ধি খুজে খুজে দু’জনকে আবিষ্কার করাও সেই লক্ষ্যেরই সাধনা, যেখানে পৌঁছনাে যথাসম্ভব বিলম্বিত করতে চেয়েছি। আমরা দুজনে দু’জনের অপূর্ব জুড়িদার। এ অভিসার যেন এক রাতের নয়। সারা জীবনব্যাপী। তারপর অনেকক্ষণ ওকে জড়িয়ে ধরে চুপচাপ শুয়েছিলাম।…..

….যতবারই লাঞ্চ নিয়ে ওর সীটের পাশ দিয়ে গেলাম, আমার একটু করে থামতে হল আর ও পাছায় হাত বােলাল। এয়ার হােস্টেসের পক্ষে এটা নিছক ছেলেমানুষি আর অত্যন্ত অশােভন আচরণ।…..

……আমার কাছে এল। “উঠে দাড়াও, ডালিং,” জ্যাক বলল, “জামাকাপড় খােলল। ”
আমি একটু ইতস্তত করছিলাম। জ্যাক, এক চড় মারল। ও আবার হুকুম করার আগেই আধা উলঙ্গ হয়ে, জামাকাপড় হাতে নিয়ে দাড়ালাম। ওগুলো নিয়ে কি করব বুঝতে পারছিলাম না। হ্যাঙ্ক, ওগুলো কেড়ে নিয়ে ঘরের অপর প্রান্তে ছুড়ে দিল। “বসস, ডার্লিং।” জ্যাক বলল। ওর হুকুম মত, চেয়ারের হাতল বরাবর দু’হাত মেলে বসলাম। এক মিনিটে হ্যাঙ্ক, আমাকে বেঁধে ফেলল—হাতদুটো হাতলের সঙ্গে, আর পা দুটো চেয়ারের পায়ের সঙ্গে। কোমরেও কয়েক প্যাচ ঘােরাল। জ্যাক এবার আশ মিটিয়ে দেখতে পারবে। হাল ফ্যাশনের ব্রা আর প্যান্টিজ, ঐ অবস্থায় আমাকে আবরণ করতে অপারগ। ইতিমধ্যে হ্যাঙ্কের চোখ-মুখের রঙ বদলিয়ে গিয়েছিল। ও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী জোরে নিঃশাস নিচ্ছিল। ও বলল, “ওর ব্রাটা খুলে দাও।” | জ্যাক ব্রায়ের হুক খুলতে লাগল। যাতে খুব বেশী সহযােগী না দেখায় তাই আমি পিঠট। যথাসম্ভব চেয়ারে ঠেসে রেখেছিলাম।…..

……জ্যাকের হঠাৎ যেন শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে গেল, এমনকি হাঙ্কও থ’ হয়ে গেল। তারপরই হ্যাঙ্ক, অমার বুকদুটো নিয়ে এত কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ল যে আমি যন্ত্রণায় অধীর হয়ে উঠলাম। যন্ত্রণা সহ্য করতে অবচেতন মনে ডুবে যেতে চাইলাম। রতিক্রিয়া সংক্রান্ত অনেক ভাল ভাল কথা মনে করে নিজেকে ভােলাতে লাগলাম। এমন সময় হ্যাঙ্ক, থামল, আর জ্যাক বাদামী রঙের একটা সিগারেট ধরাল। ও বেশ মৌজ করে কয়েক টান দিল। তারপর যা করল তাতে আমি নরক, যন্ত্রণায় ডুবে গেলাম।

চেতনা ফিরে গিয়ে দেখি আমি একা। ট্যারা চোখে চেয়ে দেখি আমার আরেকটা স্তনবৃন্ত গজিয়েছে—আদি এবং সনাতন বৃন্তদু’টো থেকে কয়েক ইঞ্চি দূরে একটা দগদগে লাল চিহ্ন। অনেক চেষ্টা করেও নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। কেউ যখন আঘাত পায় এবং সমবেদনা পাওয়ার মত কাউকে কাছে না পায়, তখন সে কান্না রােধ করতে পারে না। অত প্রশিক্ষণ সত্ত্বেও, আমি পারি না। অশ্রু উথলে উঠছিল। কতকটা অন্যের ওপর রাগেও বটে। নিজের ত্রুটির দরুন ফঁদে পড়লে অত খারাপ লাগত না। খেদের জোয়ার বারবায় অশ্রুর প্লাবন আনছিল। তবু, আমি বাস্তববাদী। তাই মনে হল চোখের জল ফেলে মন হাল্কা হলেও, কোন কাজের কাজ হবে না। চতুর্থ স্তনবৃন্ত গজাতে না চাইলে, বন্ধুদ্বয় ফিরে আসার আগে পালানাের ফন্দি আঁটতে হবে।….

……..আমার সন্দেহ চেপে গেলাম। সদর খােলাই ছিল। আমরা সােজা একটা বড় হলঘবে ঢুকলাম। ঘরটা বাড়ির প্রান্ত অব্দি বিস্তৃত। তারপর একটা বারান্দা। বারান্দার শেষে অনিবার্য সুইমিং পুল। অত বড় ঘরে জন কুড়ি লােক, তাও তিনবার গুণে জানলাম। লুকানাে বাতির প্রভাবে জায়গায় জায়গায় কয়েকটা সামান্য আলাের বৃত্ত ব্যতীত ঘর আর বারান্দা প্রায় অন্ধকার। তিনটি যুগল ঘরের কেন্দ্রে বাজনার তালে তালে নাচছিল। কয়েকজন বসেছিল। আর, ঘরের প্রান্তে দুটি যুগল যৌন সঙ্গমে মেতেছিল।

এ ধরণের যৌন তাণ্ডবে আমার অরুচি। আমার মতে ওতে প্রত্যাশিত আনন্দ ত’ পাওয়া যায়ই না, যৌথ সামাজিক লেনদেনের ক্ষেত্র হিসেবেও তা হতাশ করে। অভিজ্ঞতায় দেখেছি এ ধরণের অনুষ্ঠানে হয়ত কোন উন্নতমনা পুরুষ হঠাৎ বুঝলেন তার অনুরূপ উন্নতমনা স্ত্রীর সঙ্গে স্ত্রীর পুরুষ-বন্ধু কিংবা অমুক মহিলা স্বামী যা করছে তা তার একান্ত অপছন্দ ; কিংবা শ্রীমতী অমুক হয়ত দেখলেন তার বৃদ্ধ, অথব স্বামীটি কোন আমাকে-দেখাে সুন্দরী তন্বীর সঙ্গে অনুচিত মাত্রায় মজা লুটছেন। অমনি হট্টগােল বাধে। আমাকে যে যাই বলুন যৌন সম্ভোগের প্রকৃত এবং সার্থক ভাগীদার হতে পারে মাত্র দুটি প্রাণী। কোন তৃতীয় ব্যক্তি নয়।…..

………ডন ঠিক ঐ কথা শুনতে চেয়েছিল। হয়ত ঐ উদ্দেশ্যে ওকে পাঠানো হয়েছিল। ও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে, যেন আমাদের সন্ধি পাকা করতে আবার প্রেম করা আরম্ভ করল। আমিও সহযােগিতা করলাম । সবে অনঙ্গরঙ্গ উপভােগ করা শুরু করেছি এমন সময় ও আমার দু’উরুর ফাকে হাটু গেড়ে বসল। সঙ্গমের জন্য তৈরী। ভাবলাম, এ সুযােগ হারালে আর পাব না। দু’পা দিয়ে ওর গলা চেপে ধরলাম। ও প্রথমে ভাবল ওটা সঙ্গমে আমার সক্রিয় ভূমিকা মাত্র। প্রায় ওর দম বন্ধ করে দিলাম।…….

Leave a Reply