আম্রপালী – নারায়ণ সান্যাল

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……..কনফার্মড ব্যাচিলার প্রৌঢ় বয়সেও আইন-সম্মতভাবে দেহের ক্ষুধা মিটিয়ে আসতে পারে প্রস-কোয়ার্টার্সে ; চার অঙ্কের উপার্জনক্ষমা কুমারী, ডিভাের্সি বা বিধবার কোনাে বিকল্প আয়ােজন নেই।………..

……..ইতিহাসে একথাও বলেনি, প্রত্যুত্তরে কবি কালিদাস ফুকারে ঘৃতপ্রদীপ শিখাকে নির্বাপিত করে প্রায়ান্ধকারে কামােদ্দীপিতা মালিনীর লজ্জাহারণ করেছিলেন কিনা। তাছাড়া ইতিহাস এ কথাও বলেনি যে, কবিপত্নী কক্ষান্তরে নিদ্রাগতা। তিনি দীর্ঘদিন এবং দীর্ঘতর রাত্রি শয্যালীনা রতিরঙ্গসুখবঞ্চিতা।…….

……..পরিচয় জানতে আর কিছু বাকি নেই। আলট্রা-মার্ন সফিস্টিকেটেড কল-গ্যের্ল। মাটিস্টোরিড অ্যাপার্টমেন্টে আপয়েন্টমেন্ট করে খদ্দের ‘বসায়। একবার শয্যাসঙ্গিনী হবার দক্ষিণামূল্য কত ? কিন্তু উনি তাে মেয়েটিকে স্পর্শমাত্র করবেন না ?’………

……… ত্রিশ বছর বয়স, একশ ছেষট্টি সে. মি. উচ্চতা। ভাইটাল স্ট্যাটিসটিক্স : 3624-37, ডিভাের্সি এবং চাকুরিজীবী এসবই শােনা কথা–হেয়ার-সে। কিন্তু মেয়েটি কথাবার্তা, পত্ররচনায় তাে যাকে বলে, ‘এ-ওয়ান’। টেলিফোনে ইংরেজিতে সামান্যই আলাপচারি হয়েছে, কিন্তু তার ভিতরেই মনে হয়েছে, মেয়েটি কনভেন্ট-লালিতা। এমন একটি সর্বগুণান্বিতা রমণীর কী হেতুতে বেছে নিল এই জীবিকা ? কেন সে | কারও সহধর্মিণী নয়, কেন সে নয় কারও ‘মা’ ? দেশকে, দশকে, আগামী প্রজন্মকে সে কী দিয়ে যাচ্ছে ? শুধুই ইন্দ্রিয়জ কামনা-বাসনার রিরংসা-পুরীষ ?……….

………এবার চেয়ারে নয়। ওঁর সামনে, মেঝেতে। দু-হাতে ওঁর হাটু-জোড়া জড়িয়ে ধরে বলে, আয়াম সরি ! রিয়েলি সরি !………ওঁর কোলে মাথাটা রাখল। বন্ধনীমুক্ত হৃদয়ােচ্ছাসের যুগল পেলব স্পর্শ অনুভব করলেন জানুতে। সংযতস্বরে বললেন, চেয়ারে উঠে বস, আম্রপালী !………

…….বজ্রাহত হয়ে গেলেন অধ্যাপক তালুকদার !

ঐ ছয়খানি রঙিন আলােকচিত্র ব্যতিরেকে লেফাফার ভিতর আর কিছু ছিল না। প্রতিটিই চূড়ান্ত পর্নোগ্রাফিক আলােকচিত্র। নরনারীর নিরাবরণ যৌনমিলনের দৃশ্য। তিনখানি ছবিতে পুরুষটির পিছন দিক দেখা যাচ্ছে, সে তিনটিতে মালিনীকে চিনতে কোন অসুবিধা হয় না। দু-খানি ছবিতে অধ্যাপক তালুকদারের সম্মুখদৃশ্য। চশমাটা খােলা আছে, তবু চিনতে কোনাে অসুবিধা হয় না, সে তিনটিতে রতিরঙ্গসঙ্গিনীর পশ্চাদ্দেশ দেখা যাচ্ছে। বাকি একখানি পাশ থেকে তােলা। প্রােফাইল। নায়কনায়িকা দু-জনকেই স্পষ্ট সনাক্ত করা যায়।……….

Leave a Reply