………চারপাশে একবার তাকিয়ে নিয়ে, পা টিপে টিপে একদিকের দেয়ালের কাছে গিয়ে উকি দিয়েছিলাম। অনেকখানি ফাঁক ছিল ৷ মানুষের মাথা ছাড়ানো উঁচুতে দুটো ছোট ছোট জানালা ছিল । জানালা দুটো খোলা, ঘরে আলো পড়েছিল । কিন্তু হে ভগবান, উঁকি মেরে আমি যেন কেমন কাঠ হয়ে গেছলাম ৷ আমার যেন একটুও নড়বার চড়বার ক্ষমতা ছিল না। দেখেছিলাম, বলাই কাকা আর কাকিমা, কারোর গায়ে এক চিলতে কাপড় বলতে কিছু নেই । ভেবে পাচ্ছিলাম না, দুজনে কি মারামারি করছে, নাকি হিন্দুস্থানিদের মত কুস্তি করছে। সেই অবস্থায় দুজনে শুচ্ছে বসছে হুড়োহুড়ি দাপাদাপি করছে। কাকিমা থেকে থেকে হেসে উঠছে আর বলাই কাকার ঘাড়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। কাকিমা যদি হেসে না উঠত, তাহলে আমি ভাবতাম, বলাই কাকা নিশ্চই কাকিমাকে খুন করছে । যেভাবে জপটে ধরে চেপে ধরছিল, তাতে মানুষের মরে যাবার কথা। আর বলাই কাকাকে যে অবস্থায় দেখেছিলাম, ভগবান, ́ আর আমার সে বিষয়ে তো কোন লজ্জাই রাখা হয়নি । কামুক উত্তেজিত ল্যাংটো পুরুষের শরীর দেখেই তো আমাদের সন্ধ্যে লাগে । গেরস্থের বাড়ীতে শাঁখ বাজে । যদি মন্দিরের ঠাকুরের কথা বলি, তবে তাও সেই ল্যাংটো পুরুষ দর্শন করেই আমাদের সন্ধ্যে হয়। কিন্তু জীবনে সেই দিন প্রথম একজন পুরুষকে সেই অবস্থায় দেখেছিলাম ৷ তখন সবে সাত পেরিয়েছি । আমার মনে কোন পাপ ছিল না। শরীরে কোন সাড়া ছিল না ।
না, তাই বা বলি কেমন করে। শরীরে যে আমার কিছু হয় নি, তা বলব কেমন করে । সেই জন্যই তো ভগবানকে ডেকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, সে কি কেবল আমার, এই একটি মেয়ের, যার শরীরেই অনেক পাপ ছিল । নাকি সকল মেয়ে জাতের মধ্যেই এমনটি আছে । কতক্ষণ আমি ওরকম দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম, এমন আর মনে করতে পারি না । বলাই কাকা আর কাকীমাকে ঠিক কুকুর বেড়ালের মত দেখাচ্ছিল ।
“তবে কুকুর বেড়াল দেখে যেমন শরীরের মধ্যে কেমন একটা ভাব হত, তাদের দেখে সেইরকমই হয়েছিল । কিন্তু তার থেকে যেন বেশী কিছু । যতটা ভয়, ঠিক ততটাই শিউরোনি। আমার শরীরের মধ্যে যেন কী হচ্ছিল। মেয়ে আর পুরুষ ওই সব করে । তার একটা এরকম ধারণা ছিল। ধারণাটা কিছুই নয়। সমস্ত ব্যাপারটা যেন আরো ভীষণ অন্যরকম। কিছুক্ষণ পরেই আমার যেন গোটা শরীরে একটা ধাক্কা লাগল, আমি উঠোনের দিকে তাকালাম ।……
…..তারপরেই জানি না, কোথা থেকে কি ঘটে গেছল। দেখেছিলাম, বেন্দা নাভির নিচে ঘাটছে। বোতাম খোলা, সবই দেখা যাচ্ছে । রক্তবর্ণ একটা শক্ত ছোট সরু শোলার খেলনার মত ৷ ও কিন্তু আমার দিকে দেখছিল না । আপন মনেই ওরকম করছিল আর ফড়িংগুলোর ওড়া দেখছিল। হঠাৎ আমার দিকে কিছু বলার জন্য ফিরে তাকিয়েছিল। আমি ওর নিচের দিকে তাকিয়ে আছি দেখে, ও নিজেও সেদিকে দেখেছিল। হেসে আমার দিকে তাকিয়েছিল। বলেছিল, “তোরটা দেখি !”
‘আমি যে কি বলব ভেবে পাচ্ছিলাম না । লজ্জা করছিল খুব দৌড়ে পালিয়ে যাব কিনা ভাবছিলাম । কিন্তু পালাতেও পারছিলাম না। খালি বলেছিলাম, “যা” ।
‘বেন্দা প্যান্টের অনেকটা খুলেই ও জিনিসটি নিয়ে নাড়াচাড়া করছিল।
তখন ও ফড়িংয়ের দিকে দেখছিল না। আমার দিকে
ফিরে বলেছিল, “খেলবি ?”
‘আমি অবাক হয়ে বলেছিলাম, “কি খেলব ?”
‘বেন্দা ঘাড় নেড়ে বলেছিল, “আমি একটা খেলা জানি ।”
‘তখনো আমি পালাবার কথা ভাবছিলাম ! পালাতে পারিনি । আমার ঝুঁটি ধরে যেন কে সেখানে বসিয়ে রেখেছিল। নড়তে পারিনি । কেবল থেকে থেকে টুনটুনি পাথীর ল্যাজ নাচানোর মত, বেন্দার সেই জিনিসকে যেন নাচতে দেখছিলাম । স্পষ্টই মনে আছে. আমার শরীরের মধ্যে যেন কেমন করছিল। ভয়ও করছিল। ওট যে একটা খারাপ ব্যাপার তাও মনে হচ্ছিল । আবার জিজ্ঞেস
করেছিল “খেলবি না ?”
‘আমি বলেছিলাম, “না, আমার ভয় লাগছে।”
‘আমার তখন বলাই কাকার শরীরটার কথা মনে পড়েছিল । সে আর কাকীমা যা করেছিল, সেই ঘটনাটা সব দেখতে পাচ্ছিলাম । বেন্দা বলেছিল, “এখানে কেউ আসবে না। ইজেরটা খোল ।”
‘কেউ আসবার ভয়ের কথা আমি বলেছিলাম কিনা, মনে পড়ে না, আমি অন্য ভয়ের কথাই যেন ভাবছিলাম । মেয়ে তো। শরীরটা আমার অনেকখানি বস্তু। কিন্তু আমি বেন্দাকে অগ্রাহ্য করতে পারিনি। উঠে দাঁড়িয়ে আমার ইজেরটা খুলেছিলাম ।
বেন্দা বলেছিল, “শুয়ে পড় । ”
‘আমি শুয়ে পড়েছিলাম । বেন্দা প্যান্টটা একেবারে খুলে মাথার উপরে ফেলেছিল । আমার গায়ের উপর রোদ আর ছায়া। বেন্দা আমার বুকের উপর এসে শুয়েছিল ৷ আমার কী হয়েছিল আমি জানি না । বেন্দারই বা কী হয়েছিল জানি না । আমি যেমন শুয়েছিলাম, তেমনি শুয়েছিলাম। একটা কী করছিল বেন্দা। বলাই কাকার মত ৷ আমি মনে করছিলাম, আমি আর বেন্দা, কাকীমা আর বলাই কাকার মত করছি। কিন্তু কাকীমার মত হুড়যুদ্ধ হাসাহাসি করিনি । আমার কোন কষ্ট হয়নি । বেন্দা আর আমি কেবল খেলেছিলাম ।
‘আমি যেন চোখের সামনে এখনো স্পষ্টই সেই ঘটনা দেখতে পাচ্ছি। এখন আমার সব কিছুতেই পাপ । মিছে কি বলব যে বস্তুতে আর কোন টান নেই, তাতে যেন এখন আমি বেন্দাকে টের পাচ্ছি। সাত বছর বয়সে যা বুঝতে পারিনি, এখন সাতাশ বছরের বুড়ি বেশ্যার শরীরে সেই খেলা যেন নতুন করে খেলে উঠেছে। কিন্তু জেনে শুনে কোন পাপ করিনি । হাজরাদের জঙ্গলে গোঁসাইদের বেন্দার সামনে সেই যে ল্যাংটো হলাম, সেই যে খেললাম, সেই খেলাই তুমি অক্ষয় করে রাখলে । সেই খেলাতে ভাত কাপড় দিলে । টাকা পয়সাও দিলে । আর বড় ঘেন্না দিলে ।….
…..আমার দিকে রাস্তার পুরুষেরা যেভাবে তাকাত তাতেই বুঝতে পারতাম, আমি বড় হচ্ছি, বড় হতে চলেছি । সকলেই, সব পুরুষেরাই আমার বুকের দিকে তাকাত। তারপরেই ‘আমার কোমরের দিকে । ভাবতাম, এমন তো একেবারে সত্যি দশাসই হয়ে উঠিনি । গায়ে গাদা গুচ্ছের মাংসও লাগেনি । আমার থেকে অনেক বেঁটে মেয়ের বুক দেখে মনে হত, কুড়ি বাইশ বছরের মেয়ের বুক। আমার তো সেরকম কিছু ছিল না । বরং একটু লম্বা ভাবের ছিলাম বলে, শরীরের ধাঁচ একটু রোগা রোগাই ছিল । তবে পুরুষের চোখই বোধ হয় ওরকম ! মেয়েরা একটু বড় হলে, সকলের দিকে তারা এক রকম চোখেই তাকায় ৷…..
….. তারপরেই সাপের কুণ্ডলী খুলে গেছল । আমার সামনে এসে কোন কথা না, সোজা বুকে হাত, আমি ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলাম । শ্রীনাথ দাঁত বের করে হেসেছিল, এসে দাঁড়িয়েছিল “ওরকম করছিস কেন রে নুড়ি। শোন না।’, বলে এমন জোরে বুকে খাবলে ধরেছিল, আমার লেগেছিল । আমি তার বুকের ওপর একটা চড় কষিয়ে দিয়েছিলাম ৷…..
…..উনি আমার পাশে শুয়ে পড়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন আমার বুকে কোমরে, সাবধানে হাত দিচ্ছিলেন, আর গায়ের কাছে চেপে ধরছিলেন। তারপরে, যেন কিছুই না এমনি ভাবে, আমার জামার বোতাম খুলতে খুলতে বলেছিলেন, ‘দেখি, এটা খুলে দিই ।’
‘আমি অবাক হয়ে একটু শক্ত হয়ে বলেছিলাম, “কেন ?” “উনি বলেছিলেন, “ওটা রাখতে নেই ।” ‘প্রায় জোর করেই, আমার জামা আর বডিস খুলে দিয়েছিলেন।
আর আমার বুকে মাথা রেখেছিলেন। ওঁর মাথার চুলগুলো এত শক্ত আর খোঁচা খোঁচা ভাবের ছিল, কম্বলের মত কুট কুট করছিল আমার বুকে 1 ভয়ে কিছু বলতেও পারছিলাম না। দুপাশে দুহাত ফেলে রেখে আমি চিৎ হয়ে শুয়েছিলাম। উনি আমার বুকে মাথা আর মুখ ঘষছিলেন। আমার অস্বস্তি হচ্ছিল । মাত্র তেরো বছরে পড়েছি তখন ! আজ যা বুঝি, তখন সে সবের কিছুই বুঝি না । আমার কিছুই জানা ছিল না। কিন্তু উনি যখন আমার জামা খুলে নিয়ে ওরকম করছিলেন, তখন আমার আর বুঝতে কিছুই বাকী ছিল না । অথচ আমি যে আপত্তি করব, বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ব, সে সাহস ছিল না। একবার কেবল জিজ্ঞেস করেছিলাম, “পিসি কোথায় ?”
“পিতুবাবু উপুড় হয়ে শুয়ে, আমার মুখের কাছে মুখ এনে বলেছিলেন, “তোমার পিসি আছে, ভয় নেই। খিদে পেয়েছে ?” আমার গাটা যেন গরম গরম লাগছিল। আমার ঠোঁট জিভ কান, সবই যেন কেমন গরম গরম লাগছিল ! আমার লজ্জা করছিল, তবু বলতে পারছিলাম না, আমার গা-টা ঢেকে দেবার জন্য। উনি আমাকে বারে বারে চুমো খাচ্ছিলেন, যেমন করে খুশি, জিভে ঠোঁটে । আমি একবারও পীতুবাবুর মুখের দিকে তাকাচ্ছিলাম না। জিজ্ঞেস করেছিলেন, “আমাকে তোমার ভয় করছে ?”
‘আমি কোন জবাব দিইনি। জবাব দিতে ভরসা হচ্ছিল না ৷ উনি আবার জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তোমার খারাপ লাগছে না তো ?” ‘যত ছোটই হই, আমার মন বলছিল, “হ্যাঁ’ বলা যাবে না । আমি ঘাড় নেড়ে জানিয়েছিলাম, না। বেশ বুঝতে পারছিলাম, পিসি আমাকে সেখানে কেন নিয়ে গেছল ।
“কী হল নুড়ি ? কষ্ট হচ্ছে ?” ‘আমি মাথা নাড়িয়ে জানিয়েছিলাম, না । পীতুবাবুর মত লোক আমার সঙ্গে এমন করে কথা বলছিলেন, এত আদর করে কথা বলছিলেন, আমি রাগ করতেও পারছিলাম না। খাটের ওপর শুয়ে বাঁ দিকে ফিরলেন । একটা আয়নায় গোটা শরীরটা দেখা যাচ্ছিল। একটা ইজের পরা খালি গা শরীরটা দেখে, আমার খুব লজ্জা করছিল। সেই জন্য আমি বাঁ দিকে ফিরছিলাম না। ডান দিকে পীতুবাবু আমার কাছে উপুড় হয়েছিলেন, সারা গায়ে হাত দিচ্ছিলেন । যখন বুকে মুখ ঘষছিলেন, আমার যেন মাথা শুদ্ধ কী রকম করে উঠছিল । আমার যেন কেমন একটা ঘোর লাগছিল। সব সময় সবকিছু যেন খেয়াল থাকছিল না। একবার তাকিয়ে দেখলাম, পীতুবাবুর গায়ে কিছু নেই । আমার সামনে ওরকম অবস্থায় দেখব, কখনো ভাবিনি। আমি চোখ চেয়ে দেখতে চাইনি। চোখে পড়েছিলো তাই লজ্জ৷ করেছিল! পীতুবাবু আমার কোন লজ্জা রাখেননি, নিজের লজ্জাও রাখেননি। তবে এখন তো বুঝি, ওঁর আবার লজ্জা কিসের । উনি ওরকম করবেন বলেই তো ঠিক করে রেখেছিলেন । তবু আমি আপত্তি করেছিলাম । ইজের চেপে ধরে বলেছিলাম, “না।”
‘পীতুবাবু যেন আদরে গলে পড়ছিলেন, “লক্ষ্মীটি।” ‘আমি তবু বলেছিলাম, “কেন?” “উনি বলেছিলেন, “দেখই না ৷”
‘সেই সময় বলাই কাকা আর কাকীমার কথা আমার মনে পড়েছিল। কিন্তু তাদের কথা আলাদা । আমি ভাবতেই পারিনি ।
পীতুবাবু বলাই কাকার মত কিছু করবেন। আমি তো কত ছোট ৷ আমার ধারণা ছিল, ওরকম কিছু হলে আমি মরে যাব । কিন্তু আমি মরিনি । হে ঈশ্বর, তোমার মনোবাঞ্ছাই পূর্ণ হয়েছে । তুমি আমাকে যে কারণে এই জগত সংসারে এনেছিলে, আমি তোমার সেই কারণেই লেগেছি ৷ আমি বেশ্যা হয়েছি । আমার মা পীতুবাবুকে দিয়ে এই জীবনের দীক্ষা দিয়েছিল। পীতুবাবু আমার প্রথম বাবু ৷ আমার বাবা বেঁচে থাকলে পীতুবাবুরই বয়সী হতেন অথবা একটু কমই । সেই পীতুবাবুর দ্বারাই আমার বেশ্যা জীবনের শুরু হয়েছিল। তিনি আমার শরীরকে প্রথম কিনেছিলেন। ‘চৌদ্দ বছর আগের সেইদিনের সব কথা আমার এখনো পরিষ্কার মনে আছে । পীতুবাবু যেন একটি পুতুলকে নিয়ে খেলা করছিলেন ।
এখন তো বুঝতে পারি, পীতুবাবুর শরীরে মনে তখন কত উত্তেজনা । তিনি যে আমাকে নিয়ে খেলা করছিলেন, তিনি যে আমাকে নিয়ে কী করবেন, যেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। আদরে সোহাগে কত যে আবোল তাবোল বকছিলেন । অথচ আমি কিছুই বোধ করছিলাম না। তিনি আমাকে কষ্ট দিতে চাননি। মাঝে মাঝে আমার শরীরটা কেঁপে উঠছিল ! আমার খারাপ লাগছিল না। ভালও লাগছিল না ৷ ‘এখন জানি, তিনি কী চাইছিলেন আমার কাছে। তখন জানতাম না। জানতাম কেবল পীতুবাবুর যা ইচ্ছে হবে তাই এখন বুঝতে পারি, পীতুবাবু বড় চতুর আর ঘুঘু লোক ছিলেন। জীবনে আমার মত অনেক তেরো বছরের নুড়ি পার করবেন।
করেছেন । তা-ই বা বলি কেন । মায়ের মুখে শুনেছি, তেরো বছর বয়সে তার বিয়ে হয়েছিল, চৌদ্দ বছর বয়সে আমি হয়েছিলাম । তেরো বছরের মেয়ে ছোট কিসে ।
‘সেই দিক থেকে হয়তো ছোট না। কিন্তু যে জীবনে কখনো কিছু করেনি, একটা আবছা আবছা ধারণা, মনে ভয় আর পাপ তার কাছে অনেক কিছু । পীতুবাবু সে হিসেবে গুরুদেব লোক । এখন বুঝতে পারি, কোথায় কী করছিলেন। আমার শরীরের মধ্যে শিউরে শিউরে উঠছিল। গায়ের মধ্যে কাঁটা দিচ্ছিল। হাত পায়ের ঠিক থাকছিল না পীতুবাবুর লজ্জা ঘেন্না বলে কিছু ছিল না । যে-মুখ দিয়ে মানুষ খায়, সে মুখের একটা ঘেন্না পিত্তি বলে কিছু থাকে। পীতুবাবু তো কুকুর ছিলেন না। কিন্তু কুকুরের মতই করেছিলেন । তখন কি আর ওসব জানি ! এখন বুঝি, পীতুবাবু কী করছিলেন। তখন ঘেন্নাতে বলেছিলাম, “ও কি, না ওরকম করবেন না।”
‘পীতুবাবু আমার কথা শোনেননি । তিনি পথ তৈরী করছিলেন তারপরে এসেছিল সেই মুহূর্ত । কিন্তু সেই মুহূর্তের মধ্যে আমার মনে প্রাণে কোথাও এতটুকু আনন্দ বা সুখ ছিল না ৷ বলতে গেলে প্রায় অচেনা, অনেক বয়স্ক একজন লোক । মুখে তার মদের গন্ধ। গায়ে আতরের । আর আমি তেরো বছরের একটি মেয়ে, কোন কিছুর জন্যই আমার মন বা শরীর তৈরী ছিল না। পীতুবাবুর চতুর ঘাগী বুড়ো, তিনি তার কাজের রাস্ত। করে নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে আমার কিছুই মনে হয়নি। বরং একটা ভয় ছিল। শরীর শক্ত হয়েছিল। পীতুবাবু বারে বারে সেই ভাবটাই কাটাতে চেয়েছিলেন, কাটাতেও পেরেছিলেন। আমার শরীরকে যেন তিনি অনেকটা তাঁর বশে নিয়ে গেছলেন । তাঁর নিজের দরকার মত ।
‘তবু সেই মুহূর্তে আমার বুকের মধ্যে ধকধক করছিল। আমি অন্যদিকে চেয়েছিলাম। আমি তো সবই টের পাচ্ছিলাম । ভয় লাগছিল, কিন্তু পীতুবাবু শান্ত ছিলেন । আমাকে খুব আদর করে কথা বলছিলেন। একসময়ে মনে হয়েছিল, পীতুবাবু যেন আমাকে বঁধে রেখেছেন, আর তাতে তিনি স্বস্তি বোধ করেছিলেন। আমার ঙ্গে অনেক গল্প করছিলেন। আমি কিছুই শুনছিলাম না । কখন ওঁর হাত থেকে মুক্তি পাব সেই ভাবনা ।
‘কিন্তু মুক্তি বললেই মুক্তি আসে না । তিনি সমানে আদর সোহাগ মার গল্প করে যাচ্ছিলেন। আমি নড়তে পারছিলাম না। এখন বুঝতে পারি, আমার শরীর তো নিরেট পাথরের ছিল না। মাঝে মাঝেই আমার শরীর কেঁপে উঠেছিল। আমি ওঁকে কয়েকবার অনুনয় করে বলেছিলাম, “ছাড়ুন না ।”
‘পীতুবাবু ছাড়েননি তবু শেষ রক্ষা হয়নি। চতুর ঝানু হন, শেষ পর্যন্ত আমি যন্ত্রণায় ছটফট মনে হয়েছিল, আমার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। অজস্র ছুঁ চ ফুটছে । পীতুবাবু যত চালাক করে উঠেছিলাম ।আমার তলপেটে মন থেকে আমার ‘বড় কেঁদেছিলাম পরে, কেবল যে ব্যথার জন্য তা না । মায়ের ওপর রাগ করেই যে কেঁদেছিলাম কেবল, তাও না । কারোকে বলে দিতে হয়নি, শিখিয়ে দিতেও হয়নি, আপনিই মনে হয়েছিল, আমার আর কিছুই রইল না, সব গেল । কখন পিসি এসেছিল, কী বলেছিল, চেয়ে দেখিনি, শুনিনি । খেতে বলেছিল, খাইনি । তার মুখ দেখতে আমার ঘেন্না হয়েছিল। পীতুবাবু চলে গেছলেন। আমি কেঁদে কেঁদে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ।…..
……তখনো আমি কলকাতার এ পাড়ায় আসিনি। বাড়িতেই তখন আমার দেহবৃত্তি চলছিল। পীতুবাবুর কোন রোগ ছিল না, আমি জানি পীতুবাবু বড় সেয়ানা মানুষ, মেয়ে দেখে বাজিয়ে নিতেন। তাঁর মেলাই অনুচর । নানান জায়গা থেকে নানান চরেরা তাঁর জন্য মেয়েমানুষ খুঁজে আনত ৷ পরে পীতুবাবুর অনেক কাণ্ডই তো দেখেছি, তাঁর বাগান বাড়িতে ৷ আমি থাকলেও, অন্য মেয়েরাও থাকত ৷ ও বাবা, সে কি রালা । এখন সব জানি, বুঝি তখন কি জানতাম ? সোমত্ত কলোনীর ভাসা ভাসা মেয়ে ।
বাঁজা বউ, কড়ে রাড়ি, বাঙাল অনেককেই দেখেছি সেই বাগানে থাকতে । তা বেশ্যা হই, আর যা-ই হই, ছেলেবেলার সে সব কথা মনে হলে, এখনো এই পোড়া শরীরের মধ্যে যেন শিরশির করে। বন্ধ ঘরে। কারোর গায়ে জামা কাপড় নেই ৷ মদের ঢল নেমেছে । কুকুর বেড়ালের মতন আমার সামনেই পীতুবাবু অন্য মেয়ের সঙ্গে, যা খুশি তাই করছেন। যতোই মুখ সাপার্টি করি, ওসব দেখলে শরীর মন ঠিক থাকত না। মন চাক বা না চাক, শরীর যেন বশে থাকতে চাইত না। আবার পীতুবাবুর ওপর রাগও হত ৷ আমার সামনে এসব কেন ?
বলেছি পীতুবাবু বড় ঝানু লোক, বড় ঘুঘু ছিলেন ! তিনি একজনকে দিয়ে দেখিয়ে আর একজনের কড়ায় তেল ফোটাতেন । সময় হলে ভাজতেন। সে সব অন্ধিসন্ধি তাঁর খুব ভাল জানা ছিল । গুয়ের পোকা যেমন গু ছাড়া থাকতে পারে না, পীতুবাবু তেমনি মেয়েমানুষ নিয়ে থাকতেন। অন্যদের কেমন করে সেই পোকা করতে হয়, তাও ভাল জানতেন । মিছে বলব না, সেই যে প্রথম
দিন পীতুবাবু আমার সব কিছু নিলেন, তা নিলেন তো একেবারে, চেঁচে পুঁছে নিলেন। একটু একটু করে, তিনি আমার শরীরে এমন বিষ ঢুকিয়েছিলেন, পনরো বছর বয়সের মধ্যে, আমিও গুয়ের পোকা। আমি বেশ ভালই রপ্ত করেছিলাম। তবে একটা কি ব্যাপার, আমি থাকলে, আমাকেই উনি সব থেকে বেশি খাতির যত্ন করতেন, সকলের থেকে আমাকে আদর সোহাগ তোষামোদ বেশি। আমার ওপরে কেউ না । তাতে আমার মনে মনে বেশ গুমোর হত । অন্য মেয়ে বউরা আমাকে হিংসে করত ।…..