শর – তিলোত্তমা মজুমদার

›› গল্পের অংশ বিশেষ  

……শুভায়নের বউ চুমু খেতে দেয় না। তার ঘেন্না লাগে। দুটিভিন্ন মুখগহ্বরের লালা মিশে যাবে—এরকম সে ভাবতেও পারে না। তার স্তনাগ্রে মুখ দিলে, সে শুভায়নকে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছে। তার গা ঘিন ঘিন করে। সঙ্গমের পর সে নিজেকে প্রায় আস্নানের মধ্যে নিয়ে যায়। এ কারণে—সঙ্গমকালীন এই বিভিন্ন নিষেধ শুভায়নকে উদ্বিগ্ন রাখে, এই বুঝি সে মিতালীর ঘৃণা জাগিয়ে তােলে! ভয়াবহ পরিস্থিতিতে প্রিয়তম মুহূর্ত যাপন। তবে দাম্পত্যে চুম্বন এমন কিছু অপরিহার্য নয়। মিতালী রায় এবং শুভায়ন সরকার যাবতীয় যৌনাচারের পর দুটি সন্তানলাভ করে তার প্রমাণ রেখেছে।…………

…….যৌথ এবং যৌনজীবনেও এ কথা সত্য। কামবােধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, এই শিক্ষা সে অভ্যাস করেছিল বটে, তবে বিবাহের পর সমাজস্বীকৃত উপায়ে যৌনাচার আরম্ভ করে সে যখন, টের পায়, এর স্বাদ তার। প্রাণ-মন অধিকার করে নিল। তার এ আকাঙক্ষা তীব্র। কামনার পরিসর বিপুল। এর অপার্থিব স্বাদের সঙ্গে তার কবিমনের কল্পনা মিশে স্ত্রীকে নিয়ে গড়া একান্ত নিভৃত জগৎটুকুকে সে সাজিয়ে তুলতে চাইল, যেন তাদের শয়নকক্ষে আসন পেতেছেন রতিদেবী আর কামদেব। কিন্তু শীঘ্র সে টের পেল কামদেবের আশীর্বাদ সে যতখানি পেয়েছে, রতিদেবী ততখানি করুণা করেননি। যৌনাচার, মিতালীর কাছে। কেবল নিয়মসিদ্ধ প্রক্রিয়া, যা নর ও নারীকে পালন করতে হয়।……..

……….সারাদিনের কাজের শেষে দু’জনে মুখােমুখি বসে চা পান করে। অতঃপর এক-একটি রাত্রির নিবিড় অনুভূতিময় একান্ত ভুবন। কখনও কথার পর কথা। কখনও নীরবতা। কখনও উত্তাল সঙ্গম, কখনও শিথিল আলিঙ্গনে ভরা মধুর নৈঃশব্দ। এই রাতগুলি থেকে শুভায়ন পেল গভীর চুম্বনের স্বাদ। যামিনী পেল নরম, সশ্রদ্ধ, সম্মত সঙ্গমের গভীর আরাম। দুটি মন যত দুঃখ-ব্যথা ভাগ করে নিয়েছিল। এবার রচিত হল অনন্য শরীরী প্রেম। দু’জনে ভেসে গেল।……

…….যামিনী ভুলে গেল সব—কিংবা তার সব মনে পড়ে গেল। কী হল সে জানে না। মাথা ছিড়ে যাচ্ছে যন্ত্রণায়, অথচ তার স্তন শক্ত হয়ে উঠছে। তলপেটে সুমধুর যন্ত্রণা, যােনি কাঁপছে সুখী আহ্লাদী বেড়ালনির মতাে। সে টোকা দিল স্নানঘরের দরজায়। দরজা খুলে দাড়াল নগ্ন ও সিক্ত সুদর্শন প্রেমিক শুভায়ন। যামিনী তার চোখে চোখ রেখে বলল, “আমি চলে যাচ্ছি।’ ‘না। আর্তনাদের মতাে বলল শুভায়ন। সবলে যামিনীকে টেনে নিল ধারাজলের তলে। যামিনী আত্মসমর্পণ করল। শুভায়ন তাকে কামড়াল, আঁচড়াল, কাঁদল, নগ্ন করল! তার মধ্যে আমূল প্রবেশ করে পাগলের মতাে চুমু খেতে খেতে বলতে লাগল, ‘কোথায় যাবে তুমি? কোথায় যাবে?’ যামিনী বলল, তােমার ব্যথা করছে না তাে! করুক! ব্যথায় গাঁথা আমাদের সম্পর্ক! আঃ! পরস্পরকে সবলে আঁকড়ে ধরল তারা।………

Please follow and like us:

Leave a Reply