রুহ – সঙ্গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  

……মন্দিরের সামনের গাড়ি বারান্দাটায় ছেড়া, ময়লা শাড়ি পরে হাতের ওপর মাথা রেখে শুয়ে ঘুমােয়! পাশে পোঁটলার মতাে পড়ে থাকে একটা রােগা বাচ্চা। আর এই বাচ্চাটার কোনও জনযােগ্য পরিচয় থাকে না। কারণ সে নিজেই জানে না বাচ্চাটার বাবা কে! সে এখানে শুয়ে থাকে, ঘুম থেকে প্রতিরাতেই তাকে ডেকে তােলে কেউ-না-কেউ! সে উঠে বসে চোখটাও রগড়ায় না, ভাল করে তাকায় না পর্যন্ত ঘুম পুরােপুরি হারিয়ে ফেলার অনিচ্ছায় !– ওঠে এবং থামের পেছনে গিয়ে শুয়ে পড়ে। চিত হয়ে শুয়ে শাড়ি গুটিয়ে নেয় কোমর অবদি। ঢলঢলে সেফটিপিন লাগানাে ব্লাউজ তুলে দিয়ে বের করে দেয় এই যৌনতার অন্যতম উপাচার। চুলু খাওয়া বিব্রত লােকটা নাকি বৃদ্ধ, নাকি যুবকই যেদিন যে হয় তার নিখাদ অনুগম্য শরীরে (শরীর সবসময় নিখাদই হয়) কখনও পাশবিক আঘাত হানে, কখনও প্রকৃত ভিক্ষুকের মতাে হামলে পড়ে রােদন সারে। সে পা ফাক করে হাত মাথায় তুলে দু’-চার সেকেন্ড করে ঘুমিয়ে নেয় ফাকে ফাকে। তেমন বাড়াবাড়ি করলে কেউ, বেশি সময় নিয়ে, কামড়াকামড়ি করলে অযথা সে সামান্য বেঁকে উঠে ঝেড়ে ফেলে দেয় লােকটাকে কিংবা এই ঢ্যামনাটাকে সরা তাে’ বলে নিস্তেজ বিরক্তিতে ডাক দেয় কাছাকাছি শুয়ে থাকা কোনও পুরুষকে। সে রকম শক্তপােক্ত, নিষ্ঠুর, পিশাচ কেউ হলে সে কাকুতি মিনতিও যে করে না তা নয়। বলে, “যা না, তাের মায়ের কাছে যা না!’……

…..আমি নাক ডুবিয়ে দিলাম সুকুলের বুকে, আড়ষ্ট, স্থাণুবৎ শরীরে নিজেকে চেপে ধরলাম এবং ওকে ঠেলে নিয়ে গেলাম দেয়ালের দিকে, তারপর খুঁজে নিলাম এক জোড়া পুরু নরম ঠোট।

সেই মাত্র একটা ছিটকে খুলে আসা স্পিংয়ের মতাে সুকুল জড়িয়ে নিল আমাকে। আমার দু’স্তন জুড়ে গরম পােড়া পােড়া পােড়া একটা মুখ, আমি সুকুলের মাথা ঠেলে নিয়ে গিয়ে চেপে ধরলাম নাভিতে— সুকুল সামলাতে পারল না, ফোর প্লে সামলাতে পারল না, আমাকে কোমর ধরে শুইয়ে দিল মেঝের ওপর! ওই-ই খুলে ফেলল আমাদের দু’জনের পােশাক তারপর আনাড়ির মতাে ঝাপ দিল। অনভিজ্ঞ ছেলেটাকে আমি নিজেই ভরে নিলাম আহত ভ্রমরের মতাে পাক খেতে থাকা, গুঞ্জিত, অধৈর্য তরল অন্ধকারে আর দূরে কোথায় দুটো মালগাড়ি ভীষণ জোরে ধাক্কা খেয়ে জুড়ে গেল পরম্পর! আমি সমস্ত আঘাত আহরণ করতে লাগলাম গভীরে, আনাচেকানাচে আর ভয় পেতে লাগলাম কখন তা ফুরিয়ে যায়। তাই প্রত্যেকটা পীড়নকে মনে মনে গুনতে লাগলাম আমি কারণ আমার সুখা অন্দরে প্রতিটা একক পীড়ন এক একটা পূর্ণ যৌনতার সমান হয়ে গজরাচ্ছিল! এই উপদ্রবের ধ্বনি ছড়িয়ে দিতে লাগলাম আমার শূন্য ঘরে। আর এই সময় রু উঠে বসল বিছানায়! 

ঈশ্বরী চাপা চিৎকার করে সুকুলকে সরে যেতে ধাক্কা দিল, উঠে পড়বার চেষ্টা করে বলল, “ক?’ রু বলল, ‘মা?’ ঈশ্বরী চেঁচাল, সুকুল!’

রু নেমে এল মাটিতে, সে বলল, না! আর চুলের মুঠি ধরে ফেলে দিতে চাইল সুকুলকে। কিন্তু সুকুলের হাত, পা সব সাঁড়াশি হয়ে চেপে ধরল তাকে! আমি ধমকালাম, ‘রু, যাও, যাও, শুয়ে পড়ে গিয়ে, যা-ও-ও-ও-ও-ও! ফর গড সেক গাে! 

রু এক পা, দু’পা পিছােল। ঈশ্বরী হাহাকার করে কাঁদতে লাগল। সুকুল সমস্ত শক্তি দিয়ে রমণ করতে লাগল, আমি সমস্ত সূত্ম দিয়ে সম্ভোগ করতে লাগলাম, ঈশ্বরী গােঙাতে লাগল, আর সেই ধস্তাধস্তির মধ্যে, ভােরের প্রথম আলাের মধ্যে রু দাড়িয়ে রইল যেন অবাধ বিশ্বত এক দেবশিশু! একসময় সমস্ত ঘর দাপিয়ে বেড়াতে লাগল এক সৌজন্যহীন বীর্যপাতের হিক, হিক, হেঁক, হেঁক শব্দের বীভৎস, বর্বরােতম উদগার!…..

…..প্রীতি আর সুকুল! অর্ধনগ্ন! লিপ্ত! সুকুলের প্যান্ট নেই, প্রীতির সালােয়ার খােলা, রােগা পা প্যাচ দিয়ে ধরে আছে সুকুলকে আর দুলছে! এইটুকু মেয়ে? একটুকু মেয়ে? এত জানে? তার হঠাৎ মনে হয় সেদিন সেদিন…, কেউ তাকে…..

…..ঈশ্বরীর ঠোট দু’আঙুলে চিপে ধরে টেনে চুমু খেয়েছে বিবস্বান, তখন শিবলিঙ্গের মতাে কঠিন কিছু, অগ্রসর হতে চাওয়া কিছু ছুঁয়ে থেকেছে তার পােশাকাবৃত উরুসন্ধি ! সে ঠোট কামড়ে মাথা নেড়ে হেসেছে এবং তারপর থেকে সেই যন্ত্র নির্ভরশীল হয়ে ক্রমাগত কথা বলে যাচ্ছে তারা। রাধেশ্যাম’ হাউসে ঢুকছে সে কথা বলতে বলতে, “রাধেশ্যাম’ হাউস থেকে বেরিয়েই কথা বলছে সে!……

……জীবনে এই-ই অদ্বিতীয় আনন্দ এখন। তাকে দেখা। তাকে দেখতে পেলে আমি নিজে কেমন বদলে যাই যেন। আমার পিঠের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে একরাশ কফি রঙা চুল, চোখ টানটান হয়ে যায়, ঠোট গরম, মেরুদণ্ড সাপের মতাে হিলহিলে হয়ে ওঠে। দুটো ভারী ঢেউয়ের মতাে হয়ে ওঠে স্তন নিশ্বাসে নিশ্বাসে। আমার নিতম্ব, উরুদ্বয় এমন সজাগ ও সতর্ক হয়ে ওঠে যেন বহুকাল ধরে ‘সে’ অনুসরণ করেছে আমাকে, আর হঠাৎই আমরা মুখখামুখি পড়ে গেছি।

‘সেগুন, আমার নাবিক, আমার পুরুষ সেই আকাশের নীচে ডেকের ওপর ফেলে রাখত আমাকে। আমি ওকে নেব বলে এমন এমন মুড়ে ফেলতাম পা যে আমার যােনি চাপ পেয়ে উঠে আসত ওপরে, রাতের সন্নিবিষ্ট তারা-রা প্রত্যেকে দেখে নিত আমার লজ্জাস্থান। দেখত তার কান্না, চাপা কান্না। আমার কাছে আমার সেগুন তখন আদিম, অতিদ্বয়। কিন্তু আমি চিত হয়ে পড়ে থাকতাম সেগুন নিজেকে নয় আমার ভেতর প্রবেশ করাত জাপানি খেলনা। সেগুলাে ঘুরত আমার ভেতরে, চক্কর কাটত, থরথর করে কাপত।……

Please follow and like us:

Leave a Reply