অর্জুন ও চারকন্যা – তিলোত্তমা মজুমদার

›› উপন্যাসের অংশ বিশেষ  ›› পৌরাণিক কাহিনী  

………উলুপীর বুক খালি করে দীর্ঘশ্বাস নেমে এল। উন্নত বুক দু’টিতে ঢেউ লাগল যেন। সে বলল, “আবার বিয়ে করতে আমারও ইচ্ছে করে………

………উলুপী নিজের দুটি স্তনে চন্দ্রার হাত রেখে বলল, “দেখ চন্দ্রা, এই স্তন কী উন্মুখ। অর্জুন আমার চন্দ্রা। অর্জুন আমার।”
চন্দ্রা উলুপীকে আরও শক্ত করে ধরল। উলুপী বলল, “তার ওই সুন্দর সুগঠিত শক্তিধর হাত একবার সে রাখবে না এই স্তনে?”
“রাখবে।”
“তার ওই অপরূপ ঠোট দিয়ে চেপে ধরবে না আমার স্তনবৃন্ত?”
ধরবে।”
“ওই যে দুটি সুডৌল দীর্ঘ দৃঢ় পা, ওই শক্ত বুক দিয়ে একবার পিষে ফেলবে না আমাকে?”
“ফেলবে।”
“আঃ আঃ! চন্দ্রা! কত না মধুর সেই যন্ত্রণা যখন তার তীব্র সবল শিশ্ন প্রবেশ করবে আমার তৃষ্ণার্ত যােনিতে ! ওঃ চন্দ্রা! আমি মরব! আমি মরব চন্দ্রা।”
“তুই মরেছিস লুপী।”………….

……অর্জুন বলল, “বাধা তােমার নয় রূপসী। কী সুন্দর তােমার মুখ। কী সরস তােমার ঠোট দু’টি। পাকা বেলফলের মতাে অপরূপ দুটি স্তনের আভাস যে কোনও গভীর অনুভূতিসম্পন্ন পুরুষকে পাগল করে দেবে। ………

…….সেইসব প্রণম্য ঋষিরা পর্যন্ত বিচলিত হয়েছে যখন উর্বশী, রম্ভা, ঘৃতাচী বা মেনকা সব ছােট ছােট বসন পরে, কখনও বা প্রায় নগ্ন হয়ে নেচেকুঁদে তাদের ধ্যান ভাঙিয়েছে।……

………উলুপী এসব কিছুই করেনি। কটাক্ষেও তাকায়নি। নিজের শরীরের উঁচুনিচু প্রকট করার চেষ্টাও করেনি। এ থেকে বােঝা যায়, উলুপী স্পষ্টবাক ও ঋজু। প্রলুব্ধ করার চেয়ে প্রস্তাব করতেই সে পছন্দ করে।……

………আহা! কী সুন্দর এই মুহূর্ত! এক মহাধার্মিক, মহাবীর, পরমসুন্দর পুরুষ আর এক মহাধার্মিক, মহাজ্ঞানী, পরমসুন্দরী নারী ধর্মের জটিল গােলকধাঁধায় সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে সঙ্গম করবে বলে। পশুর মতাে নয়, কীটপতঙ্গের মতাে নয়, কামাতুর চালাকিতে নয়, নয় ইতর বলাৎকারে নয় পুত্রলােভাতুরতায় নারী ও পুরুষের চিরন্তন মিলনের আকাঙক্ষা, যৌন ইচ্ছা তাকে এর চেয়ে বেশি ধর্মসম্মত মর্যাদা দেওয়া আর কি সম্ভব ছিল।……

…….কে না জানে, নারীদেহের পূর্ণ অভিজ্ঞতা, যৌনসঙ্গমের প্রথম অভিজ্ঞতা একজন পুরুষের শরীরে-মনে কী বিপুল পরিবর্তন এনে দেয়। একজন পুরুষের পক্ষে তা নবজন্ম! একজন নারীর পক্ষেও। তবু, কোনও মেয়ে কী করে বুঝবে, নারী শরীর পুরুষের কাছে ঠিক কী, কতখানি। এই অদম্য অমােঘ টানের কাছে পুরুষ কতখানি অসহায়।……..

……….সখীরা আজ উলুপীকে ফুলের সাজে সাজিয়ে দিল। জয়া বলল, “লুপী, অর্জুনকে দেখেই আমার জীবন ধন্য হয়ে গেছে। আর আজ, তাের কোমল অনিন্দ্য শরীর সেই অর্জুনের ছোঁয়ায় সার্থক হবে। আজ তাের শরীরে এমন কিছু থাকা উচিত নয় যাতে অর্জুন এতটুকু বাধা পায়। কিংবা ব্যথা পায়।”

জয়া উলুপীর সামান্য সােনার গয়না একটি একটি করে খুলতে লাগল। আর শুভা পরিয়ে দিতে লাগল ফুলের মুকুট, ফুলের দুল, হার, বালা। কাপড়ের কঁাচুলির পরিবর্তে তারা গেঁথেছে বনফুলের কাঁচুলি। তাই দিয়ে উলুপীর নরম, গােল, দৃঢ় স্তন দু’টি ঢেকে দিল। দুই স্তনে, হাতের পাতায়, পিঠে, উরু এবং পায়ের পাতায় কুমকুমের আল্পনা এঁকে দিয়েছে চন্দ্রা। এমনকী নাভিগর্তের চারপাশে এঁকেছে নাগচক্র। কোমর থেকে জানু পর্যন্ত প্রায় স্বচ্ছ এক বসন পরানাে হল উলুপীকে। এতে সে ফুটে উঠল আরও নজরকাড়া হয়ে। তার ওপরেও পড়ল ফুলমালার আবরণ।

চন্দ্রা বলল, “লুপী যেন আজ বনদেবী।” সে দু’হাতে উলুপীর গাল ছুল, বলল, “এই গালে আজ ফাল্গুনী চুমু দেবে। সার্থক হবে আমাদের লুপীর ফাল্গুন।” | সে উলুপীর দুই স্তনে হাত রাখল, বলল, “এই স্তনে যখন কুমকুমের ফুল আঁকছিলাম, তখন স্তনের অন্তরালে যে-হৃদয়, তাতে ধ্বনিত হচ্ছিল জিষ্ণু নাম। ত্রিভুবন জয় করার ক্ষমতা রাখে যে জিষ্ণু অর্জুন, এই স্তন আজ তার হাতের পরশের জন্য উন্মুখ। চেয়ে দ্যাখ তােরা, ওই দূরের বরফ ঢাকা পাহাড় চূড়াই কি আজ উলুপীর স্তন হয়ে ওঠেনি?”………

…….উলুপী নিচু স্বরে, ধীরে, বলল, “অর্জুন, তােমার সব কিছু আমার।” অর্জুনের পায়ের পাতায় চুমু খেল সে। “আমার সবকিছু তােমার।” অর্জুনের হাঁটু জড়িয়ে ধরল। অর্জুনের সারা শরীরে চুমু খেতে খেতে, নিজের নরম-কঠিন স্তন ঘষটাতে ঘষটাতে সাপিনীর মতাে পাক খেয়ে খেয়ে সে উপরের দিকে যেতে লাগল। জানু থেকে ঊরু, ঊরু থেকে শিশ্নদেশ, শিশ্নদেশ থেকে নাভি, নাভি থেকে পশ্চাৎ, পিঠ থেকে বুক, বুক থেকে কণ্ঠ— অর্জুন আর থাকতে পারল না! তার সমস্ত শরীরে আগুন লেগে গেল। মাথা থেকে পা পর্যন্ত দাহন। ক্রোধ নয়, এ কাম। সে সবলে জড়িয়ে ধরল উলুপীকে। অর্জুনের বুকে পিষ্ট হতে হতে উলুপী কাদতে লাগল সুখে।……..

অর্জুন তাকে কোলে তুলে নিল। খেয়ে ফেলল জিভ। খেয়ে ফেলল ঠোট। তাকে যত্ন করে শুইয়ে দিল ফুলের বিছানায়। কান্নার মতাে স্বরে বলল উলুপী, তুমি আমার প্রথম নারী। আঃ! কী কষ্ট উলুপী! কী কষ্ট! আমি কী করব বলে দাও। আমাকে বলাে।

উলুপী দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে। উত্তুঙ্গ স্তন ওঠা-নামা করছে অতি ব্যগ্রতায়। সে শ্বাসের ভিতর থেকে বলল, “তােমার কী ইচ্ছে করছে। অর্জুন? বলাে! বলাে!”
অর্জুন কাতরভাবে বলল, “এই দুই হাত তােমার স্তন পিষ্ট করতে চাইছে।”
“করাে। খুলে দাও ফুলের আবরণ। এই সব তােমার।”
‘আমার ঠোট, আমার জিভ লেহন করতে চাইছে তােমার সব। সারা শরীর।”
‘করাে অর্জুন, আমাকে লেহন করাে। কামড়াও। আমাকে মারাে। রমণ করাে আমাকে। রমণ আর মরণ যে একই। একই।”
“উলুপী এই শিশ্ন অতি কাতর। সে তােমার গভীরে যেতে চায়। কিন্তু এ কোন বাধা! উলুপী!”

ধীরে ধীরে উঠে বসল উলুপী। খুলে ফেলল ফুলের সাজ। খুলে ফেলল বসন। অর্জুনকে নগ্ন করে দিল। শিশ্ন থেকে, অতি যত্নে, অতি নৈপুণ্যে অল্পে অল্পে সরিয়ে দিতে থাকল কৌমার্যের আবরণ। অর্জুন মুখ দিয়ে শব্দ করতে লাগল, আঃ আঃ আঃ!

উলুপী অর্জুনকে বুকে টেনে নিল। ধারণ করল তাকে। বার বার সঙ্গম করেও আশ মেটে না। ক্লান্তি আসে না। স্বেদে আর কামরসে মাখামাখি দুই শরীরে লেগে রইল রমণে পিষ্ট ফুলের পাপড়িগুলি।

“অর্জুন! আমার অর্জুন! উলুপী মুখ নামিয়ে নিয়ে এল নিচে। অর্জুনের কপালে চুমু খেল। অর্জুন তার স্তন ছুঁয়ে বলল, “তুমি বলেছিলে, আমার কোনও স্বামীও নেই যে, ধর্মত তার কাছেই আমার কামনা প্রকাশ করার কথা।……

…….উলুপীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এসে কিছুই ভাল লাগছিল না অর্জুনের। সবসময় একা থাকতে ইচ্ছে করে। শুধু মনে পড়ে তার কথা। তার হাসি-কান্না, তার কামােদ্দীপ্ত শরীরের বিভঙ্গ, তার ঠোট স্তন যােনির লালিমা।………

……মেয়েই হােক আর পুরুষ, কৌমার্য পার হয়ে যৌন সম্বন্ধে যৌবনের সার্থকতায় পৌছলে মানুষ নতুন হয়ে যায়।..

…..সারা দিনে অন্তত কয়েকবার আমূল সঙ্গমের তীব্র ইচ্ছায় পাগল পাগল লাগে তার। এখনও সে গঙ্গাদ্বারেই আছে। চাইলেই সে উলুপীর কাছে ফিরে যেতে পারে। খুব খুশি হবে উলুপী। কিন্তু অর্জুনের নীতিতে বাধে। সে তাে উলুপীর সঙ্গে দীর্ঘ সময় থাকতে পারবে না। ছেড়ে তাকে আসতেই হবে। তা যখন মেনেই নেওয়া হয়েছে, শুধু কামতৃষ্ণায় ছুটে যাওয়া ইতরতা মনে হয় অর্জুনের। যেন, মাঝরাতে বেশ্যার কাছে চোরের মতাে ছুটে যাচ্ছে কামুক নাগর। ছি ছি। অর্জুন কিছুতেই তা পারবে না।……….

…….একটি মেয়ে। পুরুষের পােশাক পরেছে। সঙ্গে ধনুর্বাণ। অনুচরীদের পরনেও ছেলের পােশাক। তবু এই মেয়ের সৌন্দর্য উছলে পড়ছে। রীতিমতাে ফুটে আছে দুটি উন্মুখ স্তন। অর্জুন কামতাড়না বােধ করল। কে এই মেয়ে? পাশের লােকটিকে জিজ্ঞেস করল অর্জুন।…..

……চিত্রাঙ্গদাকে বিছানায় শুইয়ে দিল অর্জুন। তার দু’চোখ মাতাল হয়ে উঠেছে। সে চিত্রাঙ্গদার দু’টি স্তনে মুখ ঘষতে ঘষতে বলল, “এই নাও প্রমাণ। এই নাও। এই নাও।” | চিত্রাঙ্গদা ভাল লাগায় শিউরে উঠতে উঠতে বলল, “কী করছ। অর্জুন!”…….

……“প্রমাণ করছি।” “কী? কী প্রমাণ করছ?” “তুমি আমাকে পাগল করেছ। আজ লাল শাড়িতে তুমি আমাকে উন্মাদ করেছ। এখন তােমাকে নগ্ন করব আমি চিত্রাঙ্গদা। তােমার নগ্নতার মাধ্বী পান করে আমি মাতাল হব। আমাকে বাধা দিয়াে না তুমি।”

“অর্জুন, এখন যে দিন। চারদিক আলােকিত।”
“এই আলােয় তােমাকে খুলে খুলে দেখব আমি।” “অর্জুন আমাকে পাগল কোরাে না।” “তুমি আমাকে পাগল করেছ।” “অর্জুন, অর্জুন, তুমি লুঠেরা হয়ে উঠেছ।” । “তুমি চাও না আমি লুণ্ঠন করি তােমায়? চাও না?”
“চাই, চাই, চাই অর্জুন। আমাকে ধন্য করাে তুমি। আমাদের সঙ্গম ফলপ্রসূ হােক।”

অপূর্ব সুন্দর ধনুকের মতাে বাঁকা তােমার ভ্রূ। তােমার চোখ দু’টি দেখে লজ্জা পাবে হরিণী, কলাগাছের ভেতরের দিকটা যেমন মসৃণ ও সাদা তেমনি তােমার গা, তােমার ঠোঁট দু’টি প্রদীপকের সেরা রসাল মিঠাইয়ের চেয়েও সুস্বাদু, মধুভাণ্ড তােমার দুই স্তন যার বৃন্তগুলি পদ্মের কুঁড়ির মতাে, যা আমারই স্পর্শের জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে, তােমার নাভিগর্তে কত শত রহস্যের হাতছানি।”….

……..গত এক বছরে অর্জুন আর চিত্রাঙ্গদা অনেক অন্তরঙ্গ হয়ে উঠেছে। কিন্তু আজও চিত্রাঙ্গদার সন্তান সম্ভাবনা হল না কেন? অর্জুন শিবমূর্তির দিকে তাকাল। শিবের পায়ের উপর মাথা রেখে পড়ে আছে চিত্রাঙ্গদা। সেই চিত্রাঙ্গদা। যাকে পুরুষবেশে দেখেও অর্জুনের সঙ্গম লিপ্সা জেগেছিল।

হলুদ রঙের শাড়িতে আজ চিত্রাঙ্গদাকে একগুচ্ছ সতেজ ঝিঙেফুলের মতাে লাগছে।

প্রায় প্রতি রাত্রেই চিত্রাঙ্গদাকে রমণ করেছে অর্জুন। প্রতি রাত্রেই তীব্র সুখের চূড়ান্ত তৃপ্তিতে ওই রূপযৌবনবতী রমণীর নরম পিচ্ছিল যােনিতে ঢেলে দিয়েছে তার বীর্যরস।………

……পাঞ্চালী নামের একটি পরমাসুন্দরী মেয়েকে দু’বছর পরে রমণ করতে পারবে এই লােভে সত্যচ্যুত হবে না অর্জুন, যুধিষ্ঠিরও তা জানে ভালমতাে। আমাকে তাড়াতেই তাে সে চায়। না হলে, তুমি বলাে কৃষ্ণ, অস্ত্রাগার কি একটা প্রেম করার জায়গা?……নাকি নিজেই দ্রৌপদীকে কিছু বেশি করে পাবে? নাকি সে অনুমান করছে, বারাে বছরে দ্রৌপদীও তেমন তীব্র থাকবে না আর। চারজনের ব্যবহারে অনেক ক্ষয়ে যাবে।…….

………দুর্বাসার সঙ্গে সূর্য এসেছিল কুন্তীতভাজের বাড়িতে অতিথি হয়ে। দুর্বাসার কামনা সিদ্ধ করেছিল সূর্য। প্রায় বালিকা কুন্তীকে ভয় দেখিয়ে সঙ্গম করেছিল। কর্ণ তারই ফল। সেই কুন্তী পরে আরও তিন দেবতার সঙ্গে সঙ্গত হল। তিন ছেলে পেল।……..

Please follow and like us:

One thought on “অর্জুন ও চারকন্যা – তিলোত্তমা মজুমদার

Leave a Reply