ভারতীয় ভাস্কর্যে মিথুন – নারায়ণ সান্যাল

›› বই এর অংশ / সংক্ষেপিত  ›› ১৮+  

॥ প্রস্তাবনা ॥

………..

১) যুগল-মুর্তি : স্ত্রী ও পুরুষ পাশাপাশি দাড়িয়ে অথবা বসে। বড় জোর হাত ধরাধরি করা ছাড়া তারা পরস্পরকে নিবিড়ভাবে স্পর্শ করছে না।

২) উত্তেজিত মিথুন : আলিঙ্গনাবদ্ধ, চুম্বননাদ্যত অথবা প্রাকৃমিলন-কেলিরত নরনারী, যাদের নিম্ন-যৌনাঙ্গ অপ্রকট।

৩) শৃঙ্গাররত মিথুন : ঘনিষ্ঠতর প্রাকৃমিলন শৃঙ্গারে রত—যখন শিল্পী তাদের মূল নিম্ন-যৌনাঙ্গ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রকট করেছেন।

৪) মৈথুনরত মিথুন : তৃতীয় ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে নরনারীর গােপন সম্ভোগদৃশ্য—স্বাভাবিক, বিপরীত, অথবা বাৎসায়ন বণিত অন্যান্য রতিক্রিয়া, যখন তাদের নিম্ন-যৌনাঙ্গ আবশ্যিকভাবে প্রকট। cunnilingus, Fellatio, অথবা পশুমৈথুনরত নরনারীকেও এই পর্যায়ভুক্ত ধরা হয়েছে।

৫) যৌথ যৌনাচার : যে সঙ্গমদৃশ্যে একাধিক নারী অথবা একাধিক পুরুষ কামক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করছে। তৃতীয় ব্যক্তি সকর্মক অথবা অবলােকনকামের অকর্মক অংশীদার যাই হােক না কেন।

…………..

দুই ॥ প্রাচীন সভ্যতার শিল্পচেতনায় যৌনতত্ত্ব।

‘ফ্যালিসিজম’ বা ‘ফ্যালিজ’ শব্দটাকে যদি বাংলায় লিঙ্গপূজা বলি, তবে তা মানব সভ্যতার একেবারে আদিযুগের বস্তুত ইতিহাস নয়, সেটি নৃতত্ত্বের বিষয়ভুক্ত। মানুষ যখন কাপড় পরতে শিখল, শীত নিবারণ নয়, লাজবস্তু রুপে পরিধেয়ের প্রয়ােজন সম্বন্ধে সচেতন হল তার পূর্বযুগ থেকেই সে জননেন্দ্রিয়ের পূজারী। পৌরুষের প্রতীক ঐ পুংলিঙ্গ এবং উর্বরতার প্রতীক স্ত্রীজননেন্দ্রিয়। ভূদেবী এবং মাতৃদেবী (Mother goddess) এর পরিকল্পনাও সেই যুগের।

প্রাচীন ভারতে মিথুনবাদ ও প্রজননতত্ত্ব :

শুধু গর্ভধারিত্ৰী জননীই নয়—মাটি বা ধরিত্রীকেও সে সভ্যতার প্রথম যুগ থেকে মা রূপে চিহ্নিত করেছে। সেই যখন পশুপালনের যুগ থেকে সে কৃষিকার্যে অভ্যস্ত হতে শিখছে তখন থেকেই ভূ-দেবীর পরিকল্পনা সে করতে শিখেছে। জননী স্তন্যদান করেন, ধরিত্রী দেন শস্য। দুজনেই মা। স্ত্রী জাতিকে জননীরূপে চিন্তা করার মানসিকতাটা বুঝে নিতে আমরা এখানে পরপর চারটি উদাহরণ পেশ করছি।

প্রথম উদাহরণ (চিত্র-৩) প্রাচীন প্রস্তরযুগের একটি পােড় মাটির জননীমূতি— তার বয়স অন্তত বিশ হাজার বছর। অথচ সেটিতে এমনই একটা বিশ্বজনীন তথা সর্বকালীন আবেদন আছে যে, অনায়াসে ভুল হতে পারে যে, এটি বিংশ শতাব্দীতে গড়া কোনও ভাস্করের কীতি। যেন সেটি কলকাতা, দিল্লী, প্যারিস, লণ্ডন, নিউইয়র্ক যে কোন প্রদর্শনীতে এ বৎসর প্রদর্শিত হয়েছে। মূতিটিতে নাক-মুখ-চোখ না থাকায় কোনও ক্ষতি হয়নি। জননী.সত্তার পূর্ণ ব্যঞ্জনা এতে বিধৃত—গুরু নিতম্বে এবং অমৃতরসধারা পুষ্ট স্তনে। দ্বিতীয় উদাহরণটি (চিত্র-৪) নীলনদের প্রাচীনতর সভ্যতার—খ্রীষ্টজন্মের প্রায় সাড়ে তিন হাজার বৎসর পূর্বে নিমিত। সমভঙ্গে দণ্ডায়মান। এ মাতৃমূতিতে দেখছি মিশরীয় ভাস্কর স্তন এবং নাভি গহ্বরকে সুচিহ্নিত করেই ক্ষান্ত হননি—উদরের নিম্নাংশে একাধিক ছিদ্র উৎকীর্ণ করেছেন। বােধ করি জননী যে বহুবার গর্ভধারণ করেছেন তারই প্রতীক ব্যঞ্জনায়। তৃতীয় উদাহরণ (চিত্র-৫) মেসােপটেমিয়ার ভূ-দেবী। ইউফ্রেতিস-টাইগ্রীস-বিধৌত শস্যশ্যামলা ভূ-খণ্ডের জননী মূতিটিও সমভঙ্গে। পূর্ব উদাহরণের পর কিন্তু হাজারদেড়হাজার বছর কেটে গেছে। চতুর্থ উদাহরণটি (চিত্র-৬) সিরিয়া থেকে সংগৃহীত—বয়সে আরও পাঁচশ বছরের অনুজা ইনি। এবার দেখছি ভূ-দেবীর দুই হাতে শস্য—তিনি সালঙ্কার এবং পট্টবস্ত্রভূষিতা।

পঞ্চম উদাহরণ যেটি সংগ্রহ করেছি সিন্ধু-সভ্যতা থেকে (চিত্র-৭) তাকে কিন্তু মাতৃমূতি বলা যাবে না। ব্রোঞ্জ নিমিত মােহেন-জো-দড়োর এই মূতিটি প্রায় কিশােরীর। সে সালঙ্কার বটে কিন্তু গুরুনিতম্বিনী বা স্তন-গরবিনী নয়। তার বিচিত্র ঠামের মধ্যে কী একটা নতুন জাতের ব্যঞ্জনা। সেই নতুন জাতের অনুভাবনটিকে হৃদয়ঙ্গম করতে আমরা এবার পর পর তিনটি নারীমূতির আলােচনা করব : মােহেনজোদাড়ো, মথুরা-যক্ষী ও সঁচী বৃক্ষিকা।

মথুরা যক্ষী (চিত্র –৮) মেহেন জো-দড়ো-সুন্দরীর অপেক্ষা দুই-তিন সহস্রাব্দির অনুজা। একটি ধাতব মূতি, অপরটি প্রস্তরের। প্রথমটি “ফ্রি-স্ট্যান্ডিং বা ত্রিমাত্রিক, দ্বিতীয়টি অটো-রিলিভো’ বা অর্বোৎকীর্ণ, প্রাচীগাত্রের বেরিয়ে-থাকা মৃতি। প্রথমটি ক্ষীণাঙ্গিনী, প্রায়কিশােরীর। দ্বিতীয়টি পূর্ণযৌবনা রমণীর। প্রথমমান্তের লঘু-নিতম্ব, শীর্ণ বাহুদ্বয় এবং অপরিণত স্তনযুগল বিকচ-যৌবনা মথুরাক্ষীর যৌবনভাৱনম্ন তনুশ্রীর সঙ্গে যেন এক সুরে বাধা নয়। তবু মনে হয়, কোথায় কী যেন একটা মিল আছে। মিলটা ওদের দুজনের মণিবন্ধে বলয় প্রাচুর্যের জন্য নয়, দেহ বল্লরীর আভঙ্গ ঠামের জন্য নয়, সে সমমামতার মূল যেন আরও গভীরে নিহিত। ওরা দুজনেই মাজায় হাত রেখে -ইংরাজিতে যাকে বলে ‘akimbo-ঠাম দর্শকের দিকে রহস্যময়ী দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে আছে। ওদের একই জাতের অস্য, কৌতুকময়ীর কটাক্ষে একই জাতের লাস্য, হাস্যময়ীদ্বয়ের জীবনদর্শনেও যেন একই জাতের ভাষা।

চিত্র-৯-এ দেখতে পাচ্ছি, সাচীপের পূর্বতােরণস্থিত। এক বৃক্ষিকাকে, অর্থাৎ বনদেবীকে। বয়সে এ মেয়েটি মােহেন-জো-দড়োর কিশােরীর অপেক্ষা দু-আড়াই হাজার বছরের অনুজা, মথুরা-যক্ষিণীর তুলনায় দু আড়াই শত বছরের প্রাচীন। অর্থাৎ কালের ক্রমিকে এ আছে ওদের দুজনের মাঝামাঝি। এর ভঙ্গিমা অন্যরকম হলেও মূল ব্যঞ্জনাটি অভিন্ন। ওর আলিঙ্গনে শালবৃক্ষটি মুঞ্জরিত হয়ে উঠেছে। ওর বাম চরণ স্পর্শ করে আছে সেই পুষ্পিত শালবৃক্ষের কাণ্ড। ও আমাদের স্মরণে এনে দিচ্ছে সেই কালকে যখন ‘অশােকতরু উঠত ফুটে প্রিয়ার পদাঘাতে’। দেখছি, যৌবনের জয়মাল্য এই বৃক্ষিকারও করায়ত্ত। তার দেহ-বল্লরীতে প্রাণ-প্রাচুর্য মনােমুগ্ধকর। অলঙ্কারের বাহুল্য ওকে পীড়িত করেনি—কটিদেশে প্রলম্বিত রত্নহার এবং হস্তপদাদির মণিবলয় সত্ত্বেও তার নারীত্ব সুপ্রকট। …………

চার || লীসন-এর আটটি যুক্তি ।

গত দশকে মিস্টার ফ্রান্সিস লীসন তার কামশান্ত্র’ গ্রন্থে ১১ পূর্বসূরীদের নির্দেশিত হেগুলি সংকলনের চেষ্টা করেন। তিনি আটটি সম্ভাব্য হেতুর সন্ধান পান। শ্রেণীবদ্ধভাবে সেগুলি তিনি লিপিবদ্ধ করে আমাদের কাজ অনেকটা এগিয়ে দিয়েছেন। উপসংহারে অবশ্য ঐ আটটি হেতুর কোটি গ্রহণযােগ্য তা তিনি বলেননি—তার নিজস্ব কোনও মতামতও দাখিল করেননি। গ্রন্থ শেষে তিনি পাঠকের বিচারবুদ্ধির উপরেই সবটা ছেড়ে দিয়েছেন। আমরা লীসন সাহেবের অনুসরণে আটটি হেতুর উল্লেখ এবং তার বিচার করে দেখতে পারি। তাতেই পূর্বসূরীদের বক্তব্য শ্রেণীবদ্ধভাবে আলােচিত হয়ে যাবে :

১) ONENESS : [ একমেবাদ্বিতীয় : মিথুনগুলি শক্তির প্রতীক স্ত্রী পুরুষের মিলনে একই পরমেশ্বরের অধিষ্ঠান—“ওঁ-এই মন্ত্রের মতো।

২) BLiss : [ আনন্দ : মিথুনগুলি পরম আনন্দের প্রতীক—অপার্থিব তুরীয় রসােপলব্ধির প্রচেষ্টা-পার্থিব মাধ্যমে বিস্তৃত।

৩) TEMPTATION; [ প্রলুব্ধকরণ ] : নিছক কামভাবের উদ্রেক করতেই মিথুন মৃতিগুলি উৎকীর্ণ করা হয়েছে। প্রকৃত সাধককে পরীক্ষা করাই মূল উদ্দেশ্য।

৪) INNOCENCE : [ সরলত।]: শিল্পীরা সরল ভাবে ঐ গুলি নির্মাণ করেছেন-নৃত্যগীত, শিকার, যুদ্ধের মত কামকেলিও জীবনের এক পর্যায়, আবশ্যিক পর্যায়, এই সরল বিশ্বাসে।

৫) PROTECTION : [ তুক-হিসাবে : দর্শকের বা অপদেবতার কু-দৃষ্টি থেকে মন্দিরকে রক্ষা করতে ‘তুক হিসাবে ঐগুলি খােদিত।

৬) ATTRACTION : ( আকর্ষণ : সাধারণ যাত্রীকে মন্দিরের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য। ৭) EDUCATION . (যৌন শিক্ষা ] : সাধারণ মানুষকে যৌনশাস্ত্রে শিক্ষিত করে তােলার উদ্দেশ্যে এগুলি কামশাস্ত্র সম্মত সচিত্র পাঠ।

৮) TANTRA: [ তন্ত্রশিক্ষা : বামাচার, তান্ত্রিক অথবা বজ্রযানীদের বিভিন্ন আসনের সচিত্র বিজ্ঞাপন।……….

আট ॥ যুগল-মূর্তি।

প্রথম জাতের মিথুন, যাদের আমরা ‘যুগল-মূতি’ নামে চিহ্নিত করেছি, তাদের আবির্ভাব ভারতীয় ভাস্কর্য-ইতিহাসের একেবারে আদি যুগ থেকে। উযুগে তারা ছিল অপ্রগলভ, শালীনতা-বােধে সলজ্জ। ভারত, চী, বুদ্ধগয়া, উদয়গিরিতে খ্রীষ্টপূর্ব মৌর্যযুগে যে যুগলমূতি পাই তারা সকলেই আবশ্যিকভাবে ঐ জাতের।

তারা দু-জন পাশাপাশি দাড়িয়ে অথবা বসে আছে, দাঁড়িয়েই বেশি। বড় জোর পুরুষ মূর্তিটি তার সঙ্গিনীর কাধে আলতো করে একটি হাত রেখেছে, অথবা তার | চম্পকাঙ্গুলি নিজ করমুষ্টিতে গ্রহণ করে আন্তর-উষ্ণতা নমসহচরীর দেহ-মনে সঞ্চারিত করছে। তারা লাজুক, তারা শালীন।

……….

প্রসঙ্গান্তরে যাবার আগে আরও দুটি প্রায় সমসাময়িক উদাহরণ পেশ করার ইচ্ছাও জাগছে। এ দুটিকে ঠিক ‘যুগল-মূতি’ অবশ্য বলা চলে না—অর্থাৎ যে অর্থে আমরা ‘যুগল-মূতি’ শব্দটি এখানে ব্যবহার করছি। কারণ এরা নিছক অলঙ্করণের উদ্দেশ্য নিয়ে গুহা-প্রাচীরে উপস্থিত হয়নি- হয়েছে কথাকবিদের কাহিনীকে চিত্রায়ত করতে। ওরা এক-একটি কাহিনীর খণ্ডাংশ মাত্র। উভয় ক্ষেত্রেই বিষাদগ্রস্ত,অভিমানিনী রাণীকে রাজা সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

প্রথম চিত্রটি (চিত্র : ১৪) উদয়গিরি গণেশ গুম্ফা থেকে সঙ্কলিত-কাহিনীটি কী, তা আমরা নিশ্চিতভাবে আজও জানি না; আচার্য সুনীতি কুমারের মতে এটি বাসবদত্তা কাহিনী। অর্থাৎ রাজা ও রাণী যথাক্রমে উদয়ন ও বাসবদত্তা। দ্বিতীয় চিত্রটি (চিত্রঃ১৫) অজন্তা দশমগুহা থেকে সঙ্কলিত-ষড়দন্ত জাতক-কাহিনীর খণ্ডাংশ। ঐ দুটি শিপনিদর্শনের মাঝখানে আছে দুর্ভেদ্য দণ্ডকারণ্যের বিস্তার এবং ওদের ভৌগােলিক দূরত্ব হাজার কিলােমিটারের উপরে, অথচ লক্ষ্য করে দেখুন, দুটি শিপসম্পদে—একটি ভাস্কর্য নিদর্শন, অপরটি প্রাচীরচিত্রকা সাদৃশ্য। ভঙ্গিমায়, কম্পােজিশনে, আবেদনে, শৈলীতে।

ভারতীয় ভাস্কর্যে যুগল মূতি কিন্তু এ যুগে যথেষ্ট বৈচিত্রময়। তবু তারা তখনও সলজ্জ, অপ্রগল্ভ। এ জাতীয় যুগল মূতির একটি অতি উৎকৃষ্ট উদাহরণ এখানে সন্নিবেশিত হল চিত্র : ১৬-তে। এটি কালে গৃহাচৈত্যের প্রবেশদ্বার থেকে সংকলিত। দাতা-দম্পতির মূতি।

একেবারে শেষ যুগ থেকে, অর্থাৎ নিভে যাওয়ার আগে প্রদীপ যখন শেষবার প্রােজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। এটি কোনার্ক জগমােহনের পূর্বদিকস্থ দ্বারের সর্বনিম্ন প্যানেলে খােদিত একটি কিন্নর-দম্পতি (চিত্র : ১৮)। লক্ষনীয়, সপ্তম শতাব্দীর ঐ যুগল যক্ষ মূতি এবং ত্রয়ােদশ শতাব্দীর এই যুগল কিন্নর-মূতিতে বিন্দুমাত্র অশ্লীলতা স্থান পায়নি, যদিও ওদের নিম্ন যৌনাঙ্গ সুপ্রকট।……..

নয় ।। উত্তেজিত মিথুন ।।

দ্বিতীয় জাতের মিথুন, আমাদের শ্রেণী বিভাগ অনুসারে ‘উত্তেজিত মিথুন। যাদের সংজ্ঞার্থ : আঙ্গিনবদ্ধ, চুম্বনরত, অথবা প্রাকৃমিলন কেলিরত মিথুন, যাদের নিম্ন-যৌনাঙ্গ অপ্রকট।

তারপর গুপ্তযুগের প্রথমপাদে, শেষ চলুক্য শৈলীতে নিমিতআহিওয়ের দুর্গামন্দিরে ও লাদখান মন্দিরে তাদের প্রথম উত্তেজিত হতে দেখছি। আনুমানিক ষষ্ঠ শতাব্দীর মাঝামাঝি। অপ্রগলভ দম্পতির মধ্যে এতদিনে যেন কিছু চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ওরা যে। আর ধৈর্য রাখতে পারছে না। তবু তাদের প্রমত্ততা কোথাও শালীনতার সীমা অতিকুম করেনি। ইঙ্গিত আছে, কিন্তু তাদের নিম্ন-যৌনাঙ্গ মােটামুটি ভাবে গোপন। লক্ষ্য করে দেখুন, চিত্র-২৩-এর মিথনটিকে। এই উত্তেজিত মিনটি আহিওলের দুর্গামন্দির থেকে সকালত। ইতিপ: কালে দম্পতির (চিত্র-১৬) মধ্যে দেখেছিলাম রমণীমৃতি সম্পূর্ণ অপ্রগলভ। তার সঙ্গী আলতােভাবে ডান হাতখানি রেখেছিল নৰ্মসহচরীর বামঙ্কন্ধে। এবার তা নয়; পুরুষ মৃতি তার সঙ্গিনীর চিবুকটি তুলে ধরেছে, নারীমূতিটিও আলিঙ্গনের ভঙ্গিতে ডান হাত দিয়ে সঙ্গীকে কাছে টানছে। দু’জনের মুখেই আদিরসের আলিম্পন, যদিও মহাকালের স্থূল হস্তাবলেপে তা বহুলাংশেই অবলুপ্ত।

কিম্বা দেখুন, একই মন্দির আর একটি দম্পতিকে (চিত্র-২৪)। এ ক্ষেত্রেও শুধু পুরুষ নয়, নায়িকাও যথেষ্ট | উত্তেজতা। বাম হস্তে সে সঙ্গীকে কাছে টানহে, ডান হাত দিয়ে সে নর্ম সহচরের বস্ত্র প্রান্ত আকর্ষণ করছে। অর্থৎ শেষ কথা শিস্পী প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিতের মাধ্যমে বলতে চেয়েছেন, রেখে ঢেকে। পুরুষমূতির বামহস্তও যুগ্ম কলস সন্ধানে বিতত, যদিও তা সেই বরতঙ্গ স্পর্শ করেনি। বেশ বােঝা যায়, ওরা উত্তেজিত হয়ে পড়েছে। না হবেই বা কেন? সেই ভারত যুগ থেকে চার পাচ শ’ বছর ওরা যে পাশাপাশি ঠায় দাড়িয়ে আছে। এতদিনে যদি ওদের মধ্যে কিছু চাঞ্চল্য জাগে, পরস্পরকে ওরা যদি কাছে টানতে চায়, তাহলে দোষ দিই কোন আক্কেলে?

প্রথম উদাহরণে (চিত্র-২৫) ব্রহ্মেশ্বরের নায়িকার শুধু হাতখানি ধরা হয়েছে, তাতেই সে লজ্জাবনতা। হাতখানি রেখেছে চিবুকে, কিন্তু স্মিত-আস্যে সে সম্মতি জানাচ্ছে। দ্বিতীয় উদাহরণেও (চিত্র-২৬) দেখছি নায়িকা সরাসরি তার প্রেমাস্পদের দিকে তাকাতে পারেনি। ভাবখানা নহি নহি বােলবি মােড়য়িবি গীম; যদিও এবার দেখছি, মেয়েটি তার ডান হাতখানি রেখেছে দয়িতের স্কন্ধে। স্বীকার করতেই হবে, প্রথম উদাহরণের তুলনায় দ্বিতীয় একটু বেশী উত্তেজিত-বিকচ উরসার মধ্যমাজের বঙ্কিম-ঠামে তার সম্মতি আরও প্রকট।

চতুর্থ উদাহরণে (চিত্র-২৮) কোনার্ক জগমােহনের নায়িকা রীতিমতো রত্যাতুরা। ভারতচন্দ্রের ভাষায় ‘লাজের মাথায় হানিয়া বাজ’ মেয়েটি সবলে আকর্ষণ করেছে নায়ককে। দয়িতের ওষ্ঠাধর অমােঘ আকর্ষণে টেনে নামিয়ে আনতে চাইছে নিজ বিশ্বধরের দিকে।

এই চারটি উদাহরণে নায়িকার দিক থেকে উত্তেজনার যথেষ্ট তারতম্য হওয়া সত্বেও আমাদের সংজ্ঞা অনুযায়ী | চায়-জোড়া মিথুনই একই পর্যায়ভুত-যেহেতু ওদের নিম্ন-যৌনাঙ্গ অপ্রকট, ওরা মৈথুনরত নয়, এবং যুগলমূতির মতো উত্তেজনা বিরহিতও নয়, তাই ওরা সকলেই উত্তেজিত মিথুন।……….

……….নির্দেশের প্রথমাংশের উদাহরণ পরশুরামেশ্বরের হর| পার্বতী মূতি (চিত্র-২৯)। অথবা খাজুরাহাের শিবদুর্গ। | (চিত্র-৩০)। দ্বিতীয়ার্ধের নির্দেশের একটি অনবদ্য উদাহরণ দেখতে পাবেন এলিফাণ্টার “গঙ্গাবতরণ দৃশ্যে।” পূর্বভারতে–বাঙলায়, বিহারে এবং উড়িষ্যায় | দেবদেবী একত্রে উপস্থিত হলে তারা প্রায় আবশ্যিকভাবে যুগলমূতি, শুধুমাত্র হরপার্বতীর ক্ষেত্রে কখনও কখনও তারা উত্তেজিত মিথন। রাধাকৃষ্ণ, বিষ্ণলী , রাম-সীতা প্রভৃতি প্রায় অনিবার্যভাবে অপ্রগলভ। শুধু মাত্র পার্বতী বা দুর্গাকে দেখা যায় মহাদেবের নামজানুর উপর উপবতী। পার্বতী সচরাচর দণিহ8ে শিবকে আলিঙ্গন করেন, এবং শিবের বামুহঃ জননীমূতির দেহ বেষ্টন করে প্রায়শই তার বামস্তন স্পর্শ করে (চিত্র-৩০ এবং ৩১)। পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে, বিশেষ করে বেলু, হালোবড, এলোরায় এই পরিকল্পনা শুধু হরপার্বতী নয়, বিষ্ণুসক্ষী, রাধাকৃষ্ণ মূতিতেও লক্ষ্য করেছি। অথচ পূর্বখণ্ডে একমাত্র হরপার্বতীকেই উত্তেজিত মিথুনরূপে দেখতে পাই।

দেব মিথনে যৌনাঙ্গ উৎকীর্ণ করা হবে কি হবে না, মনে হয় এ বিষয়ে ভারতীয় ভাস্করের সঙ্কোচ সহসকেও দূরীভূত হয়নি। ভাস্কর কিছুতেই মনস্থির করে উঠতে পারেননি। রামসীতা, বিষ্ণুলক্ষী, ব্রহ্মা-ব্রহ্মানী, রাধাকৃষ্ণ প্রভৃতি মিথনে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করা হবে না, এটা সর্বযুগে সর্বত্র মেনে নেওয়া হয়েছে। গােল বাধল শুধুমাত্র ‘হরপার্বতী’র ক্ষেত্রে। গৌরীপটু বেষ্টিত শিবলিঙ্গের প্রতীক-ব্যঞ্জনার মধ্যেই পুরুষ প্রকৃতির মিলনের মৌল তত্ত্বটি বিধত। সে ক্ষেত্রে হরপার্বতীর মূতিতে সেই আদিম সত্যটা স্বীকার করা হবে না কেন? এটাই একদল ভাস্করের প্রশ্ন। অপর দল যেন বলতে চান—গৌরীপটু বিধত শিবলিঙ্গের প্রতীক ব্যঞ্জনায় যা রুচিসম্মত, শােভ-মনুষ্যাকারে দেবমূতি উৎকীর্ণ করার সময় সেটাই অশালীন। এই যে দুটি বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি – এট। উনাম:হশ্বর মৃতি পরিকল্পনায় যুগ যুগ ভাস্করকে বিচলিত করেছে। কোন অঞ্চলে এ পক্ষ, কোনও অঞ্চলে ও পক্ষ প্রাধান্যলাভ করেছেন। যেমন দেখু, কলিঙ্গভাস্কর্যের আদিযুগে নির্মিত প্রথম তৈ-দেউল পরশুরামেশ্বরে শিল্পী উমা মহেশ্ব মৃতিত শিবের লিঙ্গটি খােদাই করেছেন (চিত্র-২৯); কিন্তু তার পরবর্তী যুগে ব্রহ্মশ্বর, লিঙ্গরাজে, অনন্ত বাসুদেবে এ পরিক পা পরিত্যক্ত হয়েছিল। খাজুরাহোতেও ঐ বিধিনিষেধটি মেনে চলা হয়েছে (চিত্র-৩০)। মনুষ্য মিলে অসংখ্য মূতিতে পুংলিঙ্গ খােদাই করা হলেও সেখানে দেবমূতিতে তা করা হয়নি, এমন কি শিবের ক্ষেত্রেও নয়।

দশ ॥ শৃঙ্গাৱৱত মিথুন।

শৃঙ্গাররত মিথুন, অর্থাৎ “ঘনিষ্ঠতর প্রাকৃসঙ্গম শৃঙ্গারে আস-যখন শিল্পী তাদের মূল নিম্ন-যৌনাঙ্গ আংশিক অথবা সম্পূর্ণরুরে প্রকট করেছেন। (চিত্র : ৩৩)। শেষ চালুক্য যুগের গুপ্ত প্রভাবিত আহিওল-এ লাদখান-মন্দিরের এই মিনে থেকে খানি নায়ক তার প্রেমাস্পদার কটিদেশে বস্ত্রখণ্ড-গ্রন্থিটি মােচন করে দিতে সক্ষম হয়েছে, কিন্তু সলজ্জা নায়িকা আড়ষ্ট হয়ে বাও ধরে রেখেছে। আরও দেখছি, নায়ক তার ডান হাতে চেপে ধরেছে মেয়েটির দক্ষিণ মণিবন্ধ—অর্থাৎবাধাদানের। 

চিত্র : ৩৪-এর উত্তেজিত মিথনটি আছে কোনার্ক জগমােহনের | রাঢ় অঞ্চলে। এখানে যৌনতার কোন অনুবেদন নেই। নায়িকার মধ্যে শিল্পী একটি অপূর্ব দ্বৈতভাব ফুটিয়ে তুলেছেনঃ মনে হয়, সে অন্যমনা, যেন অতীতের কোন্ বিস্মৃতপ্রায় নায়কের কথা সে মনে মনে ভাবছে। | এবার তৌল করুন চিত্র : ৩৫-এর মিথুন মূতটিকে। আমার তাে মনে হয়েছে একই শিল্পীর হাতের কাজ, একই অনেকে সামনে রেখে। নায়িকার মুখ তো হুবহু এক-ফটোগ্রাফিক সাদৃশ্য।

……….বাস্তবিক পক্ষে উপস্থাপনের চাতুর্যে চিত্র : ৩৫-এর পরিবেশনে দর্শককে বিপথে চালিত করা হয়েছে। মূল নাট্যকার তার নাটকে এ মিলনদৃশ্যে যে পরিমাণে আদিরস ঢালতে চেয়েছিলেন আমি কাছে থেকে ছবি একে তা ঢালিনি। মূল নাট্যকারের প্রতিবেদন বুঝে নিতে হলে আরও কিছুটা দূরে সরে গিয়ে ৩৫ ॥ এই মিলন দৃশ্যের সামগ্রিক রূপটা প্রণিধান করতে হবে, অর্থাৎ নায়ক-নায়িকাকে বিচার করতে হবে তাদের পূর্ণাবয়ব অভিনয়ের পরিপ্রেক্ষিতে (চিত্র : ৩৬)।

দুইটি হাসির রাঙ। বাসর শয়ন ॥” তফাৎ ঐখানেই : এ যুগের কবি রবীন্দ্রনাথ শুধু কুসুমচয়নের চিত্ত রচনার অধিকারী, কিন্তু সেই কুসুম নিয়ে যে মালা গাঁথা হবে, কুসুমের সার্থকতা-দৃশ্যটি থাকবে প্রচ্ছন্ন : ফিরে গিয়ে ঘরে।’—আর কোনার্ক শিল্পী যখন আদিরসের সমুদ্রে অবগাহন করেন তখন তার কাছে ঘর বার’ একাকার হয়ে যায়। তাই তিনি অনায়াসে ঘরের ভিতরের সেই বাসর-শয়ন দৃশ্যটিকেও তার শিল্পের উপজীব্য করতে ইচ্ছুক। তিনি ঐ রত্যাতুরা নায়িকার কামাবেগকে উৎকীর্ণ করলেন তার দক্ষিণ জানুর উৎক্ষেপে ( চিত্র : ৩৮ ; একই মিথনের সর্বাবয়ব চিত্র )

………

পনের।। মৈথুনবাদ কি অশ্লীল?

আয়ও একটি উদাহরণ নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। নারীবক্ষের সৌন্দর্য। যৌবনবতীর ঐ যুগজয়স্তম্ভের প্রশংসায় বিশ্ব-শিপ দেশকালভেদে উচ্ছ্বসিত। সাহিত্যে, কাব্যে, চিত্রে ভাস্কর্যে। কী প্রাচ্যে, কী প্রতীচ্যে। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে—দেশকালভেদে শালীনতা এ বিষয়ে ভিন্ন প্রকার নির্দেশ দিয়ে রেখেছে। প্রতীচ্য যদিও গ্রীক রােমক যুগ থেকেই নগরীর বক্ষকে শিপের উপাদান করে নিয়েছিল তবু তা ছিল নৈতিক শিল্পবস্তু। যখনই চিত্রের বিষয়বস্তুটি পরিচিত—অর্থাৎ সমসাময়িক পরিচিত রমণীর পােট্রট বা বস্ট স্টাডি, তখনই শিল্পী সেই পরিচিত। মহিলার বুকের উপর লাজবস্তু টেনে দিয়েছেন। ইয়ান-ভ্যান আইক-এর ‘গিওভান্নি ও তার স্ত্রী থেকে শুরু করে ওয়াডেনএর পােট্রেট অব এ লেডি, লিওনার্দোর ‘গিনেভা দেই বেনসী’ অথবা মােননালিসা, তিজিয়ানাের ‘লা বেলা প্রভৃতি। দেলাক্রোয়ার,মাদমােয়াজ্জেল রােজ’ অথবা মানের ‘অলিম্পিয়াকে ব্যতিক্রম বলা যাবে না, কারণ ‘রােজ অথবা মানের মডেল ভিক্টোরিন ম-রেল সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন মহিলা নন, সর্বজনপরিচিত আর্টিস্টের মডেল-ফুভিওর একান্তে নড চিত্র আঁকানো যাদের জীবিকা। বরং ব্যতিক্রম। ক্লোদের আঁকা স্নানরতা দুই ভগিনী-সেখানে দেখা যাচ্ছে, গ্যাব্রিয়েল ড’স্টে এবং ভিলায়ের ডাচেস—দুই ভগ্নী, একটি বাথটবে নেমেছেন এবং শেষােক্ত মহিলা বিকচ-উসা গ্যাব্রিয়েলের দক্ষিণ স্তনবৃন্তটি দুটি আঙুলে ধরেছেন—অর্থাৎ বলতে চাইছেন, রাজা চতুর্থ হেনরীর, গ্যাব্রিয়েলের স্বামীর, সন্তানলাভ আসন্ন। এই জাতীয় দু-চারটি নিতান্ত ব্যতিক্রম ছাড়া রােপীয় প্রতিকৃতিতে নারীবক্ষ দেখানো হয়নি, যেখানে মহিলাটি পরিচিত। বরং দেখা যাচ্ছে, ঐ অলিখিত ‘টাবু’-র নির্দেশ যখন শিল্পী নিতান্তই অগ্রাহ্য করেছেন, তখন তাকে তা আঁকতে হয়েছে গােপনে। যথাঃ গােইয়ার ‘মাজা দ্য নুড; অথবা মােনালিসার অনুপ্রেরণায় ভবিষ্যত যুগের শিল্পীর ‘অনাবৃতা মােনলিসা। পলিন বােনাপাট ছিলেন অসামান্যা সুন্দরী, সুতনুকা। শিল্পী কানােভার অনুরােধে তিনি তার নগ্ন মডেল হতে স্বীকৃত হলেন ; কিন্তু সর্ত হল সে-ক্ষেত্রে নগ্নিকাকে পৌরাণিক পরিবেশে আঁকতে হবে। অর্থাৎ তমকুট সেবনে আপত্তি নেই, তবে নচের আড়ালটা চাই। পশ্চিমখণ্ডের এই ‘টাবু’ বােধ হয় সর্বপ্রথম অস্বীকার করলেন উনবিংশ-শতাব্দীতে রেনােয় তার La Baigneuse blonde চিত্রে। বিকচ-বা মডেল হচ্ছেন মহান শিল্পীর সহধর্মিনী স্বয়ং।

দক্ষিণ স্তনবৃন্তটি দুটি আঙুলে ধরেছেন—অর্থাৎ বলতে চাইছেন, রাজা চতুর্থ হেনরীর, গ্যাব্রিয়েলের স্বামীর, সন্তানলাভ আসন্ন। এই জাতীয় দু-চারটি নিতান্ত ব্যতিক্রম ছাড়া ছােপীয় প্রতিকৃতিতে নারীবক্ষ দেখানো হয়নি, যেখানে মহিলাটি পরিচিত। বরং দেখা যাচ্ছে, ঐ অলিখিত ‘টাবুর নির্দেশ যখন শিল্পী নিতান্তই অগ্রাহ্য করেছেন, তখন তাকে তা আঁকতে হয়েছে গােপনে। যথা : গােইয়ার মাজা দ্য ন্যুড’ অথবা মােনালিসার অনুপ্রেরণায় ভবিষ্যত যুগের শিল্পীর ‘অনাবৃতা মােনলিসা’। পলিন বােনাপাট ছিলেন অসামান্যা সুন্দরী, সুতনুকা। শিল্পী কানােভার অনুরােধে তিনি তার নগ্ন মডেল হতে স্বীকৃত হলেন; কিন্তু সর্ত হল সে-ক্ষেত্রে নগ্নিকাকে পৌরাণিক পরিবেশে আঁকতে হবে। অর্থাৎ তমকুট সেবনে আপত্তি নেই, তবে নচের আড়ালটা চাই। পশ্চিমখণ্ডের এই ‘টাবু’ বােধ হয় সর্বপ্রথম অস্বীকার করলেন উনবিংশ-শতাব্দীতে রেনােয় তার La Baignouse blonde চিত্রে। বিকচ-বক্ষ মডেল হচ্ছেন মহান শিল্পীর সহধমিনী স্বয়ং।…………

Please follow and like us:

Leave a Reply